ইলন মাস্কসহ হাজারখানেক প্রযুক্তি উদ্যোক্তা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করা গবেষক একজোগে অনতিবিলম্বে এই আইনির্ভর চ্যাটবট আটকে রাখার যে আহ্বান দিয়েছেন, তার সঙ্গে ভিন্নমত প্রকাশ করলেন সফটওয়্যার গুরু বিল গেটস। তিনি মনে করছেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অগ্রগতি আটকে দেওয়ার আহ্বানে আসন্ন ‘চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান’ আসবে না।
এআই প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ সংশ্লিষ্ট এক খোলা চিঠি নিয়ে বিতর্কের পর প্রথমবার এই বিষয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করলেন তিনি।
সফটওয়্যার জায়ান্ট মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বলেন, এর বদলে বরং কীভাবে এআই খাতের সেরা ব্যবহার বের করে আনতে হয়, তাতে বেশি মনযোগ দেওয়া উচিৎ। কারণ বিশ্বব্যাপী এই বিরতি কীভাবে কাজ করবে, তা আগেভাগে অনুমান করা কঠিন।
রয়টার্সের সঙ্গে তার ওই সাক্ষাৎকার এল গত সপ্তাহে এআই বিষয়ে একটি খোলা চিঠি প্রকাশের পর। আর এতে স্বাক্ষর করেন ওপেন এআইতে বিনিয়োগ করা ইলন মাস্ক’সহ এক হাজারের বেশি এআই বিশেষজ্ঞ।
চিঠিতে মাইক্রোসফট সমর্থিত সফটওয়্যার কোম্পানি ওপেনএআই’র নতুন চ্যাটবট জিপিটি-৪’র চেয়ে ক্ষমতাধর ব্যবস্থার অগ্রগতি জরুরীভাবে আটকে দেওয়ার দাবি ছিল। চ্যাটবটটি মানুষের মতো আলাপ পরিচালনা, সঙ্গীত রচনা ও বিভিন্ন দীর্ঘ ডকুমেন্ট সংক্ষিপ্ত করার মতো বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে থাকে।
চিঠিতে স্বাক্ষর করা বিশেষজ্ঞদের মধ্যে ছিলেন অ্যাপলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওজনিয়াকও। ওই চিঠিতে তিনি বলেন, এই ব্যবস্থার কারণে সমাজে সম্ভাব্য ঝুঁকি ও বিভিন্ন সুবিধার বিষয়গুলো মূল্যায়ন করা দরকার।
এর জবাবে বিল গেটস বলেন, “আমি মনে করি না যে একটি নির্দিষ্ট দলকে কার্যক্রম আটকে দিতে বললে চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধান আসবে।”
“স্পষ্টতই এইসব জিনিসের বিশাল সুবিধা আছে…আমাদের যা করতে হবে তা হলো, কৌশলগত বিভিন্ন জায়গা শনাক্ত করা।”
চ্যাটজিপিটি’র মালিক কোম্পানি ওপেনএআই’র পেছনে কয়েকশ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে প্রতিদ্বন্দ্বী কোম্পানিগুলোকে ছাড়িয়ে যাওয়ার লক্ষ্যস্থির করেছে মাইক্রোসফট।
গেটস বর্তমানে জনহিতৈষী সংস্থা ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনে’ বেশি মনযোগ দিলেও তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবস্থারও বড় এক সমর্থক। আর একে ইন্টারনেট বা মোবাইল ফোনের মতোই বিপ্লবী প্রযুক্তি হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন তিনি।
ওই খোলা চিঠি প্রকাশের একদিন আগে অর্থাৎ ২১ মার্চ ‘দ্য এইজ অফ এআই হ্যাজ বিগান’ শিরোনামে একটি ব্লগ প্রকাশ পায়। ওই ব্লগে গেটস বলেন, তিনি বিশ্বাস করেন, বিশ্বের সবচেয়ে বাজে বৈষম্যগুলো কমিয়ে আনার উদ্দেশ্যে এআই ব্যবহার করা উচিৎ।
সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, যে কোনো বিরতির বিশদ বিবরণ প্রয়োগ করা জটিল হবে। “আমি সত্যিই বুঝতে পারছি না যে তারা কাকে থামাতে চায়। আর বিশ্বের প্রতিটি দেশ কী এটি থামতে রাজি হবে? আর কেনই বা থামবে?” –বলেন তিনি।“তবে এই বিষয়ে বেশ কয়েকটি ভিন্নমত আছে।”