আইওএস অপারেটিং সিস্টেমচালিত বিভিন্ন ডিভাইসের প্রতি তরুণদের আকর্ষণ রয়েছে। আর এ দিক মাথায় রেখে প্রতি বছরই নতুন মডেলের বিভিন্ন ডিভাইস বাজারে নিয়ে আসে কুপারটিনোভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যাপল। তবে প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় তরুণদের মধ্যে ডিভাইস পরিবর্তনের চাহিদা বা হার কম। খবর টেকটাইম।
যুক্তরাষ্ট্রের কনজিউমার ইন্টেলিজেন্স রিসার্চ পার্টনারসের (সিআইআরপি) নতুন প্রতিবেদন অনুসারে, তুলনামূলক অল্প বয়সী তরুণ ব্যবহারকারী তাদের ব্যবহৃত ডিভাইস বা আইফোনটি দ্রুত বদলে নিতে অনাগ্রহী।
যদিও অল্প বয়স্ক ব্যবহারকারীদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণা হচ্ছে তারা সহজেই গ্যাজেটে আসক্ত হয়ে পড়ে। সিআইআরপির অ্যাপলের ওপর করা প্রতিবেদন অনুসারে, উত্তরদাতাদের ৮০ শতাংশেরও বেশি জানিয়েছেন, যদি তাদের আইফোন ভেঙে যায়, ক্ষতিগ্রস্ত হয়, চুরি বা হারিয়ে যায়, তবে কিছুদিনের মধ্যেই তারা নতুন ডিভাইস কেনার উপায় খুঁজবে। তবে প্রায় ৬ শতাংশ ব্যবহারকারী তাদের স্মার্টফোন পরিবর্তন বা নতুন ডিভাইস কেনার আগে অন্তত এক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে বা সময় নিতে পছন্দ করবে বলে জানায়।
একজন ব্যক্তি যত বয়স্ক হন, নতুন গ্যাজেট কেনার প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি তত পরিবর্তন হবে। তবে এটিকে মোটেও প্রচলিত বিষয় হিসেবে ধরে নেয়া উচিত হবে না যে অল্প বয়সী ব্যবহারকারীদের মধ্যে ডিভাইস পরিবর্তনের প্রবণতা বেশি।
বিষয়টিকে ঘিরে গবেষকরা একটি উপসংহারে পৌঁছেছেন, ১৮-২৪ বছর বয়সী (৬০ শতাংশ) উত্তরদাতা স্বীকার করেছেন মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই তারা বর্তমানে থাকা ডিভাইস পরিবর্তন করবে।
প্রতিবেদনে আরো উল্লেখ করা হয়, ৪৫ বছর বা তার বেশি বয়সী প্রায় ৯০ শতাংশ উত্তরদাতা, এক বা দুদিনের মধ্যে নতুন স্মার্টফোন কেনার বিষয়টি বিবেচনা করবেন বলে জানান।
অ্যাপল ইনসাইডারের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গবেষণায় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকটি ছিল উত্তরদাতার আর্থিক অবস্থা। প্রাপ্তবয়স্কদের কাছে প্রায়ই অল্প বয়সীদের তুলনায় বেশি অর্থ থাকে, তাই তারা অল্প বয়সীদের তুলনায় নিজেদের ডিভাইসগুলো দ্রুত পরিবর্তন করে।
সাধারণত ব্যক্তির বয়স বাড়তে থাকলে তার ডিভাইস মেরামতের প্রয়োজনীয়তা বাড়তে থাকে। তবে যারা আইপ্যাড ব্যবহার করেন তাদের জন্য বিষয়টি খানিকটা ভিন্ন, বিশেষ করে ৫৫ বছরের বেশি বয়সীদের ক্ষেত্রে।
গবেষণা অনুসারে, ম্যাক কম্পিউটার ব্যবহারকারী পুরনো ক্রেতার কাছে ডিভাইস পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা আরো কম। ৬৫ বছর বয়সী বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি বয়স্ক লোকদের মধ্যে মাত্র এক-তৃতীয়াংশ স্বীকার করেছেন, তারা তাদের ক্ষতিগ্রস্ত বা হারিয়ে যাওয়া ম্যাককে মাত্র এক বা দুদিনের মধ্যে পরিবর্তন করতে বা কিনতে আগ্রহী। তবে এ গবেষণা প্রতিবেদনে এটা বলা হয়নি যে কেন আইফোন পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তা এক প্রজন্ম থেকে অন্য প্রজন্মের ক্ষেত্রে ভিন্ন। তবে বাজেটের পার্থক্যের কারণে এটি হতে পারে বলে ধারণা করা হয়েছে।
আইফোন আসক্তির প্রসঙ্গে টেক টাইমস আগের প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, তীব্রতা অনুসারে একে স্মার্টফোন আসক্তির সঙ্গেও তুলনা করা যায়। অধিকাংশ সময় যারা স্ক্রিন স্ক্রল করে তারা বাস্তবজীবন ক্রমেই ভুলে যায়। কেননা অধিক সময় ধরে উজ্জ্বল একটি ডিসপ্লেতে মনোযোগী থাকলে স্বাভাবিকভাবেই দিনের পরিবর্তন সম্পর্কে কোনো কিছু জানা সম্ভব নয়।