ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষায় বর্তমানে বিভিন্ন দেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। বিশেষ করে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা বাড়াচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানির বিরুদ্ধে তথ্য সংগ্রহ ও সরবরাহের অভিযোগ উঠেছে।
জার্মানির নিরাপত্তা কোম্পানি নাইট্রোকি সম্প্রতি এক প্রতিবেদনে দাবি জানায়, কোয়ালকম ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে নিজস্ব সার্ভারে পাঠিয়ে থাকে।
কোয়ালকমের চিপে থাকা ফিচারটি অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের সঙ্গে সম্পর্কিত নয়। অর্থাৎ তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণের সঙ্গে অপারেটিং সিস্টেম যুক্ত নয়। নাইট্রোকি কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন ৬৩০ চিপযুক্ত সনি এক্সপেরিয়া এক্সএ২তে গুগলের ফ্রি অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন ইনস্টল করে। এরপর কোম্পানিটি দেখতে পায়, ডিভাইসে যেসব তথ্য ছিল তা কোয়ালকমের মালিকানাধীন আইজেটক্লাউড ডট নেট সার্ভারে পাঠানো হয়েছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, কোয়ালকমের চিপ অনেক ধরনের তথ্য সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করে থাকে। এর মধ্যে গ্রাহকের তথ্য, ইউনিক স্মার্টফোন আইডেন্টিফায়ার, টিপ নেম, চিপের সিরিয়াল নম্বর, এক্সটিআরএ সফটওয়্যার ভার্সন, মোবাইল কান্ট্রি কোড, নেটওয়ার্ক কোড, অপারেটিং সিস্টেম বা ক্যারিয়ারের ধরন ও ভার্সন, ডিভাইস উৎপাদনকারী ও মডেল, সেলফোনের প্রোগ্রাম লিস্ট, আইপি ঠিকানা ও অন্যান্য তথ্য রয়েছে। সংগৃহীত তথ্য কোনো এনক্রিপশন সুবিধা ছাড়াই এইচটিটিপি প্রটোকলের মাধ্যমে পাঠানো হয়ে থাকে। ফলে অনলাইনে যে কেউ তথ্যগুলো পড়তে পারবে।
বর্তমানে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের পাশাপাশি আইফোনেও কোয়ালকমের কমিউনিকেশন মডিউল ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর এ গুপ্ত ফিচারের কারণে বিশ্বের ৩০ শতাংশের বেশি সেলফোন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ব্লগ পোস্টে নাইট্রোকি জানায়, কোয়ালকম নিজস্ব উদ্যোগে যে এএমএসএস ফার্মওয়্যার তৈরি করেছে সেটি যেকোনো অপারেটিং সিস্টেমের বাইরে আলাদাভাবে কাজ করতে পারে। কেননা এটি এইটিটিপি প্রটোকল ব্যবহার করে থাকে। যেটি সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং তৃতীয় পক্ষের যে কেউ এতে প্রবেশ করতে পারে।
নাইট্রোকির প্রতিবেদনের উত্তর দিয়েছে কোয়ালকম। এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এক্সটিআরএ পরিষেবার যে নীতিমালা সেটির সঙ্গে তথ্য পাঠানোর বিষয়টি সম্পর্কিত। যার মাধ্যমে কোম্পানি আগের ব্যবহারকারীদের তথ্যও সংগ্রহ করে থাকে। তবে অনিরাপদ এইচটিটিপি প্রটোকলের মাধ্যমে তথ্য পাঠানোর বিষয়টি মূলত এর সুরক্ষা ও গোপনীয়তার বিষয়ে উদ্বেগ তৈরি করেছে।
ব্যবহারকারীদের তথ্য যেন নীতিমালা মেনে সংগ্রহ ও সংরক্ষণ করা হয় সে বিষয়টিই প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। এছাড়া প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে তথ্য সংগ্রহ ও ব্যবহার করছে সে বিষয়ে গ্রাহকদের জানাতে স্বচ্ছ ব্যবস্থা নিশ্চিতের বিষয়েও জোর দেয়া হয়।