তাইওয়ান চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জাম খাতে সর্বাধিক ব্যয় করেছে। বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন ‘এসইএমআই’-এর সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর তাইপে টাইমস।
এসইএমআইয়ের তথ্য বলছে, তাইওয়ান বছরের প্রথম প্রান্তিকের মধ্যে সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জামের পেছনে ৬৯৩ কোটি ডলার ব্যয় করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৪২ শতাংশ বেশি। কিন্তু এর আগের প্রান্তিক অর্থাৎ ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকের তুলনায় এ ব্যয়ের পরিমাণ ১৩ শতাংশ কমেছে।
এসইএমআই বৈশ্বিক ইলেকট্রনিকস সরঞ্জাম নির্মাতা এবং ডিজাইন সাপ্লাই চেইন কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিত্ব করে। সংস্থাটির তথ্য বলছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৫৮৬ কোটি ডলার ব্যয়ের মাধ্যমে চীন ছিল দ্বিতীয় শীর্ষ ব্যয়কারী। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ২৩ শতাংশ কম ছিল এবং এর আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৮ শতাংশ কম।
এ সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া ৫৬২ কোটি ডলার ব্যয়ের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দেশটির ব্যয় বেড়েছে ৯ শতাংশ, কিন্তু আগের এক প্রান্তিকের তুলনায় ৩ শতাংশ কমেছে।
উত্তর আমেরিকা ছিল এ সময়ে চতুর্থ বৃহত্তম ব্যয়কারী বাজার। তথ্য বলছে, বছরের প্রথম প্রান্তিকে দেশটি সেমিকন্ডাক্টর খাতে ব্যয় করেছে ৩৯৩ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৫০ শতাংশ এবং আগের প্রান্তিকের তুলনায় ৫১ শতাংশ বেড়েছে। এ বাজারটিকে বিশ্বের দ্রুততম ক্রমবর্ধমান বাজার হিসেবে চিহ্নিত করেছে এসইএমআই।
বছরের প্রথম প্রান্তিকে জাপান সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জামগুলোয় ব্যয় করেছে ১৯০ কোটি ডলার। এর মাধ্যমে দেশটি সেমিকন্ডাক্টর খাতের ব্যয়ে পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে। গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ব্যয় কিছুটা বাড়লেও প্রান্তিকওয়ারি ব্যয় কমেছে ১৬ শতাংশ। এরপর ১৫২ কোটি ডলার ব্যয়ের মধ্য দিয়ে ষষ্ঠ স্থানে রয়েছে ইউরোপ। খাতটিতে গত বছরের প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় ব্যয় ১৯ শতাংশ বেড়েছে এবং আগের প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে ৪ শতাংশ।
এসইএমআইয়ের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জামের পেছনে মোট ব্যয় হয়েছে ২ হাজার ৬৮০ কোটি ডলার। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় যা ৯ শতাংশ বেড়েছে, কিন্তু প্রান্তিকওয়ারি ব্যয় কমেছে ৩ শতাংশ।
এসইএমআই বলছে, এ বছরের শুরুতে বিশ্ব অর্থনীতি যদিও উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, কিন্তু সেমিকন্ডাক্টর খাতের ব্যয় ছিল স্থিতিশীল। এ সময়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো উদীয়মান খাতটির ব্যয় বাড়তে থাকে, যা সেমিকন্ডাক্টর শিল্পকে দীর্ঘমেয়াদে বৃদ্ধির পথ প্রশস্ত করে।
গত বছর, বিশ্বব্যাপী সেমিকন্ডাক্টর খাতে মোট ব্যয় হয়েছিল ১০ হাজার ৭৬০ কোটি ডলার, যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৫ শতাংশ বেশি। ওই সময়ে ২ হাজার ৮২৭ কোটি ডলার ব্যয়ের মাধ্যমে বৃহত্তম ক্রেতা ছিল চীন। খাতটিতে তখন তাইওয়ান ব্যয় করেছিল ২ হাজার ৬৮২ কোটি ডলার, যা ২০২১ সালের তুলনায় ৮ শতাংশ বেশি। এক্ষেত্রে ব্যয়ের হিসাবে তাইওয়ানের অবস্থান ছিল দ্বিতীয়। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া ২ হাজার ১৫১ কোটি ডলার ব্যয়ের মাধ্যমে তৃতীয় অবস্থানে ছিল। দেশটি এর আগের বছরের তুলনায় ১৪ শতাংশ ব্যয় কম করেছে।