নাগরিক সুরক্ষায় সচেতনতা ও কারিগরি জ্ঞানের ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন সাইবার জগৎকে নিরাপদ রাখতে হলে আমাদের ব্যক্তি, পরিবার, প্রাতিষ্ঠানিক ও সোসাইটিসহ এই ৪টি স্তরে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের এই সাইবার হামলার হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষা প্রদান করতে হলে সচেতনতা বাড়াতে হবে। কেউ যদি কারো অর্থ বা তথ্য চুরি করতে চায় তাহলে সাইবার অ্যাটাক করেই চুরি করে নিতে পারে। সাইবার নিরাপত্তার বিষয়ে এখনই সবাইকে সচেতন হওয়ার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
প্রতিমন্ত্রী আজ বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল মিলনায়তনে আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে ইউএনডিপি বাংলাদেশের সহযোগিতায় “বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি অ্যাওয়ারনেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৩” এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব মো: সামসুল আরেফিন এর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সি’র মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো: কামরুজ্জামান, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক রনজিৎ কুমার, ইউএনডিপি বাংলাদেশের ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ ভ্যান এন গুয়েন, আন্তর্জাতিক শিশু শান্তি পুরস্কার বিজয়ী সাদাত রহমান।
‘তথ্য আগামী দিনের অর্থ’ উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন আইসিটি বিভাগের উদ্যোগে গঠিত সার্ট থেকে ২৯টি স্পর্শকাতর তথ্য অবকাঠামোর (সিআইআই) সুরক্ষা ও তদারকিতে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানেই একটি করে নিজস্ব সার্ট টিম থাকা দরকার। আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মের সঙ্গে সমন্বিত উদ্যোগ ছাড়া সাইবার নিরাপত্তা অক্ষুন্ন রাখা সম্ভব নয় মন্তব্য করে সাম্প্রতিক দুর্ঘটনা বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, সার্টের নির্দেশনা না মানা এবং টেকনিক্যাল ত্রুটির কারণে এমনটা ঘটেছে। হ্যাক নয়, সিস্টেম দুর্বলতার কারণে একটি সরকারি ওয়েবসাইটে নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্য উন্মোচন হয়েছিল। এমন অনাকাঙ্খিত বিষয় রোধ এবং ডেটার সার্বভৌমত্ব অক্ষুন্ন রেখে সতর্কতার সঙ্গে একটি ‘ডেটা সুরক্ষা আইন’ চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানান প্রতিমন্ত্রী ।
পলক বলেন ডিজিটাল স্বাক্ষরতা, সাইবার সুরক্ষা এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এই তিনটি বিষয়ে আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে সচেতন করতে হবে। পাশাপাশি তাদের কারিগরি সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। আর এই কাজটি করতে হবে সম্মিলিত ভাবে। কোনো দেশই একা একা নিজেদের ন্যাশনাল সাইবার স্পেস নিরাপদ রাখতে পারবে না।
পরে প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
উল্লেখ্য, আগামী সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দেশের প্রথম “বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল সাইবার সিকিউরিটি এওয়্যারনেস অ্যাওয়ার্ড ২০২৩’। এজন্য ৩০ জুলাই থেকে ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, পেশাজীবি, অভিভাবক ও সাইবার সিকিউরিটি বিষয়ে অসামান্য অবদানের জন্য আন্তর্জাতিক বিশেষ সম্মাননা এই ৫ ক্যাটাগরিতে প্রস্তাবনা গ্রহণ করা হবে। অনলাইনে http://bicsaa.gov.bd এই ঠিকানায় আবেদন করতে হবে। প্রতি ক্যাটাগরিতে বিজয়ীদের দেয়া হবে ১০ হাজার মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এই সম্মাননা প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছে ইউএনডিপি বাংলাদেশ।