জি-২০ জোটভুক্ত প্রত্যেক দেশের সমান অংশীদারিত্ব অটুট রাখতে প্রতিযোগিতার পরিবর্তে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে সহযাত্রী হিসেবে একসঙ্গে এগিয়ে যেতে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
প্রতিমন্ত্রী আজ ভারতের ব্যাঙ্গালোরে হোটেল তাজ ওয়েস্ট ইন্ডে, এক বিশ্ব, এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ’ স্লোগানে নিয়ে শুরু হওয়া বিশ্বের উন্নত এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর ফোরাম জি-২০ সম্মেলনে “ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার” (ডিপিআই) বিষয়ক মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতাকালে এ আহ্বান জানান ।
প্রতিমন্ত্রী ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্ট্রাকচার এর বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত অনেক উন্নত উল্লেখ করে বলেন ডিজিটাল জন অবকাঠামো উন্নয়নে ভারতের ব্যবহৃত টুলগুলো ব্যবহার করতে আগ্রহী বাংলাদেশ। তিনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে স্মার্ট অর্থনীতি ও স্মার্ট সমাজ বিনির্মাণে এনপিসিআই, আরবিআই, ইঃগভ ফাউন্ডেশন একটেক এবং অন্তর্ভূক্তিমূলক প্রযুক্তির মাধ্যমে ক্ষমতায়নের বিষয়ে একটি নতুন প্রকল্প নিয়ে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে বৈঠকের কথা তুলে ধরেন।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশও ডিজিটাল অর্থনীতি ও সমাজ গড়ে তুলতে ডিজিটাল পাবলিক ইনফ্রাস্টাকচার অথবা ডিপিআই-কে সক্ষমতার চাবিকাঠি হিসেবে ব্যবহার করছে। গত ১৪ বছরে ডিজিটাল অবকাঠামো উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এরই মধ্যে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য সফলতা অর্জন করেছে। বস্তুত, সুলভ ও সহজলভ্য ইন্টারনেট, ডিজিটাল যাচাইযোগ্য পেমেন্ট প্লাটফর্ম, স্মার্ট ভেরিফাইয়েবল আইডি এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার নিশ্চিত করা হয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহারে নাগরিক সচেতনতা তৈরি করায় দেশে এখন ১৩ লাখ মানুষ ইন্টারনেট সংযুক্ত। লক্ষাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৮০ হাজার সরকারি অফিসে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ দেয়া হয়েছে। একইসঙ্গে ৫২ হাজার ওয়েবসাইট তৈরি এবং একটি মাত্র মোবাইল গভঃ অ্যাপ থেকে এসব সেবা মিলছে। এছাড়াও ১২ কোটি স্মার্ট আইডি কার্ডধারী সরকারের ৮৩ ধরণের সেবা পাচ্ছে ।
পলক বলেন, ২০১০ সালে প্রধানমন্ত্রী ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইচ স্থাপনের সিদ্ধান্ত দেয়ার পর এখন দেশে ৭১ মিলিয়ন মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল ওয়ালেট সৃষ্টি হয়েছে। একইভাবে আন্তঃলেনদেনের প্লাটফর্ম ‘বিনিময়’ স্থাপনের পর এখন সব ধরণের পেমেন্ট গেটওয়ে ও অ্যাকাউন্টের মধ্যে আন্তঃলেনদেন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দেশের সব সরকারি সংস্থাগুলো এখন ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচার অনুসরণ করে সংশ্লিষ্ট প্লাটফর্ম ‘মিয়াবাস’ ব্যবহার করছে।
ভারতের ইলেকট্রনিক্স ,তথ্যপ্রযুক্তি ও রেল যোগাযোগ মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবের সভাপতিত্বে সভায় আরো বক্তব্য রাখেন মিশর, মরিশাস , নেদারল্যান্ডস, নাইজেরিয়া, ওমানের, আরব আমিরাতসহ জোটভুক্ত অংশগ্রহণকারী দেশ সমূহের মন্ত্রীবর্গ এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন সংস্থার প্রতিনিধিগণ অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, জি-২০, বিশ্বের উন্নত এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলোর ফোরাম। ১৯টি দেশ এবং ইইউ নিয়ে গঠিত ফোরামটি বৈশ্বিক অর্থনীতির পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি প্রশমন এবং স্থিতিশীল উন্নয়নের মতো বিভিন্ন বৈশ্বিক বিষয়ে আলোচনার প্ল্যাটফর্ম।