অনলাইনে আর্থিক প্রতারণা এবং অবৈধ ও যাচাইবিহীন আর্থিক লেনদেন নিরসনে করণীয় বিষয়ে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বারের সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় বাংলাদেশে অনলাইনে সংগঠিত আর্থিক প্রতারণার ধরন, অবৈধ আর্থিক লেনদেনের জন্য ভুয়া ফিনান্সিয়াল ওয়েবসাইট এবং অ্যাপসের ব্যবহার, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে জুয়া বা বেটিংয়ের মাধ্যমে মানুষকে প্ররোচিত করা, অনলাইনের অবৈধ আর্থিক লেনদেনের প্রক্রিয়া, ভুয়া অ্যাকাউন্টধারীর নামে এমএফএস অ্যাকাউন্ট ব্যবহার, অনলাইনের বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থার সংশ্লিষ্টতা, বিটিআরসির দায়িত্ব ও সক্ষমতা, অনলাইনের মাধ্যমে সংঘটিত আর্থিক প্রতারণার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অপরাধীদের শনাক্তকরণের উপায় এবং অনলাইন মাধ্যমে অবৈধ আর্থিক লেনদেন বন্ধে চ্যালেঞ্জ ইত্যাদি বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা হয়।
সভায় উপস্থিত ছিলেন- ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামান, বিটিআরসির চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ রেজাউল করিম, অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব বিলকিস জাহান রিমি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্তি সচিব মো. রুহুল আমিন, ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান, টেলিযোগাযোগ অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম, ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক মো. হারুনুর রশীদ, জননিরাপত্তা বিভাগের যুগ্ম সচিব এ এস এম ফেরদৌস, আইসিটি বিভাগের যুগ্ম সচিব মো. মেহেদী হাসান, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের যুগ্ম সচিব ড. নাহিদ হোসেন, এনটিএমসি এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ বাকের, এনএসআই এর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শাহান সাদী, ডিজিএফআই প্রতিনিধি কর্নেল এস এম আজাদ, এসবির অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মিজানুর রহমান, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের গোয়েন্দা পরিদফতরের প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন শেখ শাহীদ আহমেদ, ডেপুটি হেড অব বিএফআইইউ এএফএম শাহীনুল ইসলামসহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা। বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. নাসিম পারভেজ অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী অনলাইনের মাধ্যমে অবৈধ আর্থিক লেনদেন ও প্রতারণা থেকে সাধারণ মানুষকে রক্ষায় বাংলাদেশ ব্যাংককে লিড এজেন্সি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, ডিএসএ এবং বিটিআরসিকে নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের টাস্কফোর্স গঠনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
তিনি বলেন, ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ স্মার্ট বাংলাদেশের বাহন হিসেবে ডিজিটাল সংযুক্তির মহাসড়ক তৈরি এবং এর উন্নয়নে কাজ করছে। ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রটা বিশাল। ডিজিটাল নিরাপত্তার বিদ্যমান চ্যালেঞ্জসমূহ মোকাবিলার সমস্যা এবং তা প্রতিকারের লক্ষ্যে সমস্যা এবং সমাধানের উপায় চিহ্নিত করার জন্য করণীয় নির্ধারণে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের ভূমিকা অপরিসীম। সংশ্লিষ্ট সবার সম্মিলিত প্রয়াসে নিরাপদ অনলাইন প্রতিষ্ঠা সম্ভব।
ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের অগ্রদূত মোস্তাফা জব্বার বলেন, সভায় অংশীজনদের পরামর্শের ভিত্তিতে একটি কার্যকর নিরাপদ ইন্টারনেট নিশ্চিত করা সম্ভব। সভায় অংশীজনরা তাদের মূল্যবান মতামত ব্যক্ত করেন।
মন্ত্রী বলেন, আমরা সবার আলোচনা থেকে সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করতে সক্ষম হয়েছি। যা ডিজিটাল নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ফলপ্রসূ অবদান রাখবে বলে আশা করি।
সভায় অবৈধ আর্থিক লেনদেন বন্ধে এমএফএস নিবন্ধন সঠিক পদ্ধতি মেনে করা, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাধারণ মানুষকে সরকার অনুমোদিত ব্যাংকিং (অনলাইনসহ) স্কিম ব্যতীত যেকোনো ধরনের লোভনীয় অফার থেকে বিরত থাকার জন্য জনসচেতনতা তৈরি, টেলিযোগাযোগ অধিদফতরে স্থাপিত সিটিডিআর সিস্টেমের অ্যাপস বন্ধের লক্ষ্যে সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ, অবৈধ আর্থিক লেনদেন বন্ধে প্রয়োজনীয় আইন বা নীতিমালা প্রণয়ন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনলাইন মাধ্যমে নিয়মিত মনিটরিং এবং অনলাইনে লেনদেন বন্ধের জন্য ব্যবহৃত অবৈধ দেশি-বিদেশি ওয়েবসাইট, অ্যাপস ও লিংক বন্ধের জন্য বিটিআরসিতে তালিকা প্রণয়নের সুপারিশমালা উঠে আসে।