সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে গত একবছরে ১২ হাজার হয়রানিমূলক কনটেন্ট অপসারণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অনুরোধে ফেসবুক, ইউটিউব, টিকটক ও টুইটার তাদের প্ল্যাটফর্ম থেকে কনটেন্টগুলো অপসারণ করে। তবে, কনটেন্ট সরানোয় মত প্রকাশের স্বাধীনতার সংকোচন হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
দেশে এখন ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটিরও বেশি। তাদের বেশিরভাগই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান কনটেন্ট আপলোড ও শেয়ার করে থাকেন।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মে হয়রানিমূলক ও অশ্লীল কনটেন্ট প্রতিনিয়তই বাড়ছে। সেই কারণেই বাড়ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কাছে উস্কানিমূলক অনুরোধের সংখ্যাও। দাবি, ডাক ও টেলিযোগাযোমন্ত্রী মোস্তফা জব্বারের।
“ফেসবুকসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাম্প্রদায়িকতা, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষে অপপ্রচার, গুজব রটনা এবং ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হয় এমন কোনো কিছুই যাতে না থাকে তার প্রতি সতর্ক থাকতে হবে।”- বলেন মোস্তাফা জব্বার।
মন্ত্রী বলেন, ‘ফেসবুকে কেউ একটি পোস্ট দিয়েছেন। আমরা ইচ্ছা করলেই ফেসবুক বন্ধ করে দিতে পারি না। অথবা ইউটিউবে কেউ একটি ভিডিও ছেড়েছেন। পুরো ইউটিউব আমরা বন্ধ করে দিতে পারি না। এটি পৃথিবীর কোন দেশই পারে না।’
বিটিআরসি তথ্য, ২০২১সালে ২৬হাজারের বেশি কনটেন্ট অপসারণ অনুরোধের ৮হাজারই রাখে ফেসবুক। গতবছর অনুরোধ বেড়ে ৩১হাজার আটশ-তে দাঁড়ায়, এর মধ্যে ১০ হাজারের বেশি কনটেন্ট সরিয়ে নেয় ফেসবুক।
এছাড়া, ২০২১ সালে ভিডিও স্ট্রিমিং সাইট ইউটিউব, টিকটক, বিগো ও লাইকি এবং মাইক্রোব্লগ সাইট টুইটার, ওটিটি ইমোর কাছে দুুই হাজারের বেশি কনটেন্ট অপসারণ অনুরোধের এক হাজার ১৮টি রাখে তারা। গত বছর করা ৬ হাজারের বেশি অনুরোধের দেড় হাজারই রক্ষা করে এসব প্ল্যাটফর্ম।
কনটেন্ট অপসারণের মাধ্যমে জনসাধারণের মত প্রকাশ সংকুচিত হচ্ছে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, “সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে এখন তোলপাড় চলছে সারা দুনিয়ায়। যে কেউ যে কোনো বিষয়ে যা খুশি বলে দিতে পারে। আইনের বিন্দুমাত্র তোয়াক্কা করে না। এ কারণে সোশ্যাল মিডিয়ার রাশ টেনে ধরার চেষ্টা চলছে অনেক দেশেই”।
হয়রানি ও অশ্লীলতার অভিযোগে গতবছর একহাজার ৫৭টি ওয়েবসাইটও বন্ধ করে সরকার।