চোখ ঠিকরে বের হচ্ছে আগুন। গলা চিরে বের হচ্ছে নেকড়ের ডাক। কিন্তু আসল নেকড়ে নয়। জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি রোবট নেকড়ে এটি। প্রথমে কৃষি খামার থেকে ভাল্লুকসহ অন্য প্রাণী তাড়াতে এর ব্যবহার শুরু হয়। তবে বর্তমানে শহুরে এলাকাতেও এই রোবটের ব্যবহার হচ্ছে।
বিবিসি জানায়, রোবট নেকড়েটি তৈরি করেছে ওলফ কামুয়ি নামের একটি প্রযুক্তি কোম্পানি। প্রথমে এটি গ্রামাঞ্চলে খেত-খামার থেকে ভাল্লুক, হরিণ ও বানরের মতো প্রাণী তাড়ানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছিল। সম্প্রতি দেশটির কিছু শহরে ভাল্লুকের উৎপাত বেড়ে যায়। তাই রোবট নেকড়ে এখন সেখানেও ব্যবহার করছে কর্তৃপক্ষ।
২০২০ সালের শরৎকালে জাপানের তাকিকাওয়া শহরে প্রথমবারের মতো রোবটটি কাজে লাগানো হয়। সে বছরই এটিকে ভাল্লুক তাড়ানোর কাজে ব্যবহার করে ইতিবাচক ফল পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে বিবিসির সঙ্গে কথা বলেন টোকিও ইউনিভার্সিটি অব এগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির অধ্যাপক শিনসুকে কোইকে। তিনি বলেন, ‘জাপানে শহুরে লোকজনের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে, তরুণ প্রজন্ম এখন আর গ্রামে থাকতে চায় না। তারা শহরে চলে আসায় গ্রামে রয়ে গেছে কেবল বয়স্ক লোকেরা। বয়স্ক লোকদের পক্ষে কৃষিকাজ করা কঠিন। কৃষি খামারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আরও কঠিন।’
শিনসুকে কোইকে আরও জানান, আগে কৃষিজ ভূমি ও পার্বত্য বনভূমির মধ্যে একটি বাফার জোন ছিল। এখন সেটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বন থেকে প্রায়ই ভাল্লুকসহ বিভিন্ন প্রাণী নেমে এসে কৃষি খামারের ক্ষতি করছে। বন্য প্রাণীদের নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব এবং খাদ্যসংকটের কারণে তারা লোকালয়ে চলে আসছে।
জাপানে ২০২১ সালেই চারজন নিহত হয়েছে ভাল্লুকের হামলায়। আহত হয়েছে অন্তত ১০ জন। তাই বিভিন্ন এলাকায় বাড়ছে এমন রোবটের চাহিদা।