অক্টোবরের ১৫ তারিখ থেকে শুরু হচ্ছে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ট্রেড শো ‘চায়না আমদানি ও রফতানি মেলা’ বা ক্যান্টন ফেয়ার। চীনের ঐতিহ্যবাহী এবং মর্যাদাপূর্ণ এই মেলায় দক্ষিণ এশিয়া ও বাংলাদেশের একমাত্র সর্ববৃহৎ ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন ৩য় বারের মতো অংশগ্রহণ করছে। ক্যান্টন ফেয়ারের মাধ্যমে আইওটি বেজড পরিবেশবান্ধব স্মার্ট কনজ্যুমার ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদন খাতে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উৎকর্ষতা ও সক্ষমতা বিশ্ব দরবারে তুলে ধরবে ওয়ালটন।
চীনের গুয়াংজুতে চায়না ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট ফেয়ার কমপ্লেক্সে অক্টোবরের ১৫ থেকে ১৯ তারিখ পর্যন্ত ১৩৪তম শরৎকালীন ক্যান্টন ফেয়ারের প্রথম ধাপ অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইলেকট্রনিক্স এন্ড হাউজহোল্ড ইলেকট্রিক্যাল এ্যাপ্লায়েন্সেস ক্যাটাগরীতে অংশ নিচ্ছে বাংলাদেশের একমাত্র প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। ক্যান্টন ফেয়ারের আন্তর্জাতিক প্যাভিলিয়নে স্থাপন করা হয়েছে ওয়ালটনের মেগা প্যাভিলিয়ন।
৫-দিনব্যাপী এই মেগা ট্রেড শো’তে প্রদর্শিত হবে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ ট্যাগযুক্ত ইউরোপিয়ান এসিসি ব্র্যান্ড ও ওয়ালটন ব্র্যান্ডের আন্তর্জাতিকমানের ইলেকট্রনিক্স ও ইলেকট্রিক্যাল পণ্যসমূহ। এর মধ্যে রয়েছে ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তি, ডিজাইন ও ফিচারসমৃদ্ধ এআইওটি বেজড স্মার্ট রেফ্রিজারেটর, এয়ার কন্ডিশনার, ফ্যান ইত্যাদি প্রযুক্তিপণ্য।
ওয়ালটন রেফ্রিজারেটরের চিফ বিজনেস অফিসার (সিবিও) তোফায়েল আহমেদ জানান, বাংলাদেশের বাজারে নীরঙ্কুশ প্রাধান্য রয়েছে ওয়ালটনের। এবার টার্গেট হলো- বিশ্ব বাজারেও শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করা। ইতোমধ্যে বিশ্বের ৪০টিরও বেশি দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটন পণ্য। রপ্তানি বাজার আরো সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে চীনের ক্যান্টন ফেয়ার।
ওয়ালটন এসির সিবিও মো. তানভীর রহমান বলেন, বিশ্বের প্রায় প্রতিটি দেশ থেকেই ছোট-বড় মিলিয়ে কয়েক লাখ ব্যবসায়ী ও ক্রেতা আসেন ক্যান্টন ফেয়ারে। আমাদের লক্ষ্য- ওইসব ক্রেতাদের কাছে আইওটি বেজড বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব স্মার্ট ইলেকট্রনিক্স পণ্য উৎপাদনে ওয়ালটন তথা বাংলাদেশের সক্ষমতা তুলে ধরা। ক্যান্টন ফেয়ারের মাধ্যমে বৈশ্বিক ক্রেতাদের সঙ্গে ওয়ালটনের একটি আন্তর্জাতিক সেতুবন্ধন তৈরি হবে বলে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ওয়ালটনের ইলেকট্রিক্যাল অ্যাপ্লায়েন্সের সিবিও মো. সোহেল রানা বলেন, ক্যান্টন ফেয়ার হচ্ছে বিশ্বের শীর্ষ প্লাটফরম। পৃথিবীর সব প্রান্ত থেকে ক্রেতারা আসেন। এখানে বিশ্বের সেরা মানের পণ্য নিয়েই হাজির হচ্ছে ওয়ালটন। সর্বাধুনিক প্রযুক্তি সংযোজন ঘটিয়ে উচ্চমানের পণ্য দিয়ে বিশ্বের যেকোনো ব্র্যান্ডকে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত আমরা।
ওয়ালটন গ্লোবাল বিজনেস শাখার সূত্রমতে, ক্যান্টন ফেয়ারে ইউরোপিয়ান এসিসি ব্র্যান্ড ও বাংলাদেশী ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ব্যাপক বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ভিন্ন ভিন্ন ফিচারসমৃদ্ধ রেফ্রিজারেটর ও এয়ার কন্ডিশনারসহ ইলেকট্রিক্যাল ফ্যান প্রদর্শন করা হবে। এর মধ্যে রয়েছে আইওটি বেজড অফলাইন স্মার্ট ভয়েস কন্ট্রোল, ডিজিটাল ডিসপ্লে সমৃদ্ধ স্পিøট এসিসহ ভিআরএফ এসি। অফলাইন ভয়েস কন্ট্রোল এসি বিশ্বের যেকোনো দেশের ভাষায় পরিচালনা করা যাবে। এছাড়াও ওয়ালটন ভিআরএফ এসি উৎপাদনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের ৯ম ভিআরএফ এসি উৎপাদনকারী দেশ।
ক্যান্টন ফেয়ারে এসিসি ও ওয়ালটন ব্র্যান্ডের বিশ্বের সর্বোচ্চ ৯রহ১ কনভার্টিবল মুডের ফোর-ডোর জিটি প্রো ম্যাক্স মডেল, ৮রহ১ কনভার্টিবল সাইড বাই সাইড ডোরের জিটি প্রো ও কম্বি মডেলের ফ্রিজ প্রদর্শন করা হবে। এসব রেফ্রিজারেটরের ফ্রিজ ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টের কুলিং পারফরমেন্স গ্রাহক তার পছন্দমত সেট করতে পারবেন। এতে বিদ্যুৎ খরচ হবে অনেক কম। এআইওটি বেজড এই মডেলের ফ্রিজগুলো স্মার্টফোনের মাধ্যমে বিশ্বের যেকোনো প্রান্ত থেকে পরিচালনা করা যাবে। এছাড়াও স্মার্ট কন্ট্রোল ফিচার থাকায় উপরের দরজায় হাতের স্পর্শের মাধ্যমেই ফ্রিজ নিয়ন্ত্রণ করা যায়। এরজন্য ফ্রিজের দরজা খোলার প্রয়োজন পড়ে না। ফলে ম্যাক্সিমাম কুলিং পারফরমেন্সের সঙ্গে হয় বিদ্যুৎ সাশ্রয়। এসব মডেলের ফ্রিজের বিশেষ ফিচারের মধ্যে রয়েছে ওয়াটার ডিসপেন্সার।
জানা গেছে, ক্যান্টন ফেয়ারে আগত ক্রেতা-দর্শণার্থীদের নজর কাড়তে চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপ, আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ভারত, নেপাল, ভুটানসহ বিভিন্ন দেশে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ওই সব দেশে কর্মরত ওয়ালটনের পরিবেশক এবং প্রতিনিধিদের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশের ক্রেতা ও সাপ্লায়ারদের ক্যান্টন ফেয়ারে ওয়ালটন প্যাভিলিয়নে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অনেকেই প্যাভিলিয়ন পরিদর্শনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। ক্যান্টন ফেয়ারের মাধ্যমে ওয়ালটনের রপ্তানি বাণিজ্য আরো প্রসারিত হবে বলে আশাবাদী ওয়ালটন কর্তৃপক্ষ।