বর্তমানে স্মার্টফোন ছাড়া এক মুহূর্তও কাটে না অনেকের। নানান কাজে ব্যবহার করছেন স্মার্টফোনটি। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সরব থাকছেন। অনেকে এসব প্ল্যাটফর্ম থেকে আয়ও করছেন মাসে লাখ লাখ টাকা। তবে এসব অনলাইন আয়ের উৎস অনেক অ্যাপ নিষিদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন দেশে।
টিকটক থেকে শুরু করে বিগো লাইভ অ্যাপ। বিভিন্ন অবৈধ কাজের উৎসাহ দেওয়ার কারণে অ্যাপগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি বিগো লাইভ অ্যাপের নাম আলোচনায় এসেছে ছোট পর্দার অভিনেত্রী হোমায়রা হিমুর মৃত্যুর পর। কি এই অ্যাপ। কেনই বা নিষিদ্ধ এই অ্যাপটি।
বিগো লাইভ অ্যাপটি যাত্রা শুরু করেছিল লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে। যেখানে বিশ্বের যে কোনো মানুষের সঙ্গে লাইভ চ্যাট করতে পারেন ব্যবহারকারী। নিজে লাইভ করতে পারেন কিংবা অন্যদের লাইভেও যুক্ত হতে পারেন। বর্তমানে বিগো লাইভের সারাবিশ্বে ৪০০ মিলিয়নেরও বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে।
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে এটি তাহলে নিষিদ্ধ হলো কেন? মূলত লাইভ স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম হিসেবে যাত্রা শুরু করলেও ধীরে ধীরে এখানে নানান ধরনের অবৈধ কাজ শুরু হয়। বিশেষ করে, অনলাইন জুয়ার অনেক বড় আসরে পরিণত হয় এই অ্যাপটি। এছাড়াও অশ্লীলতা ছিল এখানকার নিয়মিত ঘটনা।
অ্যাপটি সিঙ্গাপুরের একটি সংস্থার। বিগো লাইভ অ্যাপের ব্যবহারকারীরা বেশিরভাগই তরুণ-তরুণী এবং প্রবাসী বাংলাদেশি নাগরিক। এটি ব্যবহার করে একই সঙ্গে টেক্সট ও ভিডিও চ্যাট করা যায়। সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে একটি বোর্ডে (ভিডিও চ্যাটে) যুক্ত হতে পারেন আটজন পর্যন্ত। তারা একই সঙ্গে নিজেদের দেখতে ও শুনতে পারেন। এছাড়া তাদের চ্যাটিং (ভিডিও) দেখতে পারেন অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ।
স্ট্রিমিংয়ে আড্ডা দেওয়ার জন্য ব্যবহারকারীদের ভার্চ্যুয়াল মুদ্রা ‘ডায়মন্ড’ বা ‘বিনস’ কিনতে হয়। অ্যাপটিতে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অশ্লীল গল্প, ছবি ও ভিডিও শেয়ার করা হয় এখানে। অনেকেই খুঁজতে থাকেন প্রতারণার সুযোগ। কেউ ফাঁদে পা দিলেই তার সর্বস্ব লুটে নেওয়ার উপায়ও তাদের জানা রয়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে উপদেশমূলক বক্তব্যও প্রচার করা হয় এখানে।
এছাড়াও বিভিন্ন গ্যাং তৈরি হয়েছে এই প্ল্যাটফর্মে। যারা নানাভাবে ব্যবহারকারীদের সঙ্গে প্রতারণা করে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। ২০১৯ সালে যখন তারা বাংলাদেশে ব্যবসার জন্য ‘লাইসেন্স’ নেয়, সেই সময়ে বলা হয়েছিল যে তারা মূলত সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট , কম্পিউটার যন্ত্রাংশ উৎপাদন, ক্রয়-বিক্রয়সহ ডিজিটাল পণ্য বিক্রি করবে। কিন্ত ভিডিও চ্যাটের নামে অর্থ লেনদেন করতে পারবে না। কিন্তু নিয়ম না মেনেই টাকা লেনদেন করা হয়েছে।
গত বছর দেশে এই অ্যাপ ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়। তারপরও নানাভাবে জুয়ায় আসক্ত হয়ে অনেকেই এই অ্যাপ ব্যবহার করছেন। হারাচ্ছেন সর্বস্ব। অনেকেই অর্থ খুইয়ে হতাশায় ডুবে যাচ্ছেন। এরপর বেছে নিচ্ছেন আত্মহত্যার মতো কাজ।