কয়েক মাস ধরে জন্ম ও মৃত্যু সনদ সংগ্রহে ব্যাপক ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন সাধারণ নাগরিকরা। বিশেষ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন্ন ভর্তি মৌসুমের আগে চোখে যেন অন্ধকার দেখছেন অভিভাবকরা। মাসের পর মাস ভোগান্তি পোহালেও কোনো সমাধান হচ্ছিল না জন্ম নিবন্ধন সনদ নিয়ে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রিভ সিস্টেমস জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধনের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়কে শর্তানুযায়ী সবকিছু বুঝিয়ে দেয়নি বলে অভিযোগ দপ্তরটির। এমন প্রেক্ষাপটে জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন তথ্য ব্যবস্থার (বিডিআরআইএস) দায়িত্ব পেয়েছে জাতীয় টেলিযোগাযোগ তদারকি কেন্দ্র বা এনটিএমসি।
ভবিষ্যতে কখনো বিডিআরআইএস সার্ভারে কোনো জটিলতা হবে না এমন লক্ষ্যেই সিস্টেমটি তৈরি করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন এনটিএমসির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান। আগামী ছয় সপ্তাহের মধ্যে জন্ম ও মৃত্যু সনদ- সংক্রান্ত জটিলতার নিরসন হবেও দাবি সংস্থাটির।
২০০৪ সালে প্রণীত এবং ২০০৬ সাল থেকে কার্যকর হওয়া আইনের মাধ্যমে অন্তত ১৯টি সেবার ক্ষেত্রে জন্মনিবন্ধন সনদ প্রয়োজনীয় করা হয়। বিশেষ করে পাসপোর্ট ইস্যু, বিবাহবন্ধন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেওয়া, জমি নিবন্ধন-সংক্রান্ত সেবা পেতে এবং ১৮ বছর বয়সের নিচে যাদের জাতীয় পরিচয় (এনআইডি) নেই তাদের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল। তবে সার্ভার জটিলতা, ডাটাবেজের তথ্য ফাঁস হওয়ার মতো ঘটনায় জন্মনিবন্ধন সনদ পাওয়া এক প্রকার সোনার হরিণ পাওয়ার মতো হয়ে যায়। জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধক জেনারেলের কার্যালয় থেকে ইন্টারনেটে নাগরিকদের তথ্য ছড়ানোর পর দেখা দেয় সার্ভার জটিলতা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা সার্ভার বন্ধ এবং ‘ডাউন’ থাকার ফলে জন্মসনদ পেতে ব্যাপক ভোগান্তি ও হয়রানি পোহাতে হয়।
এই বিষয়ে রিভ সিস্টেমস জানিয়েছে, রিভ সিস্টেমসের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রিভ সিস্টেমস সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে ২০২২ সালের জুলাই মাসে সফটওয়্যারটির সোর্স কোড, ইউজার ম্যানুয়াল ইত্যাদি সরবারহ করার মাধ্যম সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চূড়ান্তভাবে বুঝিয়ে দেয়। হস্তান্তরের পর থেকে রিভ সিস্টেমসের এই প্রকল্পের সাথে কোনোরকম প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা নেই এবং কোনোরকম কারিগরি সহায়তা প্রদান করে না। সংশ্লিষ্ট দপ্তর তাদের নিজস্ব তত্বাবধানে অদ্যাবধি প্রকল্পটি প্রয়োজনীয় রক্ষনাবেক্ষন, পরিবর্তন কিংবা পরিবর্ধন করে থাকে।
যতদিন এই রক্ষনাবেক্ষন এর দায়িত্ব রিভ সিস্টেমসের অধীনে ছিলো ততদিন এই সফটওয়্যারে কোনো ধরনের জটিলতা দেখা যায়নি।