ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ই কমার্সের জন্য জরুরী হচ্ছে ডিজিটাল সংযুক্তি। বস্তুত স্মার্ট বাংলাদেশের ব্যাকবোনই হচ্ছে ডিজিটাল সংযুক্তি। মোবাইলের ফোরজি সংযুক্তির পাশাপাাশি দেশের প্রায় প্রতিটি মানুষের দোরগোড়ায় অপটিক্যাল ফাইভার সংযোগ আমরা পৌছে দিয়েছি। এরই ধারাবাহিকতায় দেশে তের কোটিরও বেশি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। প্রযুক্তিতে ৩২৪ বছরের পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে ১৯৯৭ সালে ২জি, ২০১৩ সালে থ্রিজি, ২০১৮ সালে ফোরজি এবং ২০২১ সালে ফাইভজি যুগে বাংলাদেশ প্রবেশ করেছে। এর ফলে বাণিজ্য, শিল্প, শিক্ষা চিকিৎসা সহ দেশের অর্থনীতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে।
মন্ত্রী গতকাল বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) আয়োজিত ‘ই-কমার্স মুভার্স অ্যাওয়ার্ডস (ইসিএমএ) ২০২৩’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী। অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্সি, আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ই-ক্যাবের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য নাহিম রাজ্জাক এবং ইক্যাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ আব্দুল ওয়াহেদ তমাল প্রমূখ বক্তৃতা করেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী এবং ইক্যাবের উপদেষ্টা মোস্তাফা জব্বার ই-ক্যাব কেবল পন্য নয় সেবাও বিক্রি করছে উল্লেখ করে বলেন, ই-কমার্স তরুণ প্রজন্মের নিকট নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। ই-ক্যাবের গত নয় বছরের সফল পথচলার কথা উল্লেখ করে ডিজিটাল প্রযুক্তি বিকাশের এই অগ্রদূত বলেনদেশব্যাপী নিরবচ্ছিন্ন ডিজিটাল সংযুক্তির সুযোগ কাজে লাগিয়ে ইক্যাবের বিস্ময়কর অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল বাণিজ্য দুনিয়ায় ইক্যাব অল্প সময়ের মধ্যেই একটি স্বনামধন্য সংগঠনে পরিণত হয়েছে। ২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশের ঠিকানা আমরা ২০২১ সালে অতিক্রম করেছি। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের আরেকটি স্বপ্নের ঠিকানায় ২০৪১ সালের মধ্যে পৌঁছানোর অভিযাত্রা আমরা শুরু করেছি।
ডিজিটাল কমার্সে তরুণ উদ্যোক্তাদের সফলতার দৃষ্টান্ত তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমাদের তরুণ প্রজন্ম উপযুক্ত পরিবেশ পেলে স্মার্ট সভ্যতাকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবেন। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ কম খরচে ঘরে বসেই ডিজিটাল শপ থেকে কেনা পণ্য যাতে হাতে পান সেই লক্ষ্যে স্মার্ট ডাক বিতরণের উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করেছি।
তিনি বলেন, স্মার্ট ডাক ব্যবস্থায় দেশের ১০ হাজার পোস্ট অফিসকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন হাবের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহ করা সম্ভব হবে। স্বয়ংক্রিয় ট্র্যাকিং পদ্ধতিতে ক্রেতার পণ্য কোথায় আছে তাও সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব হবে। প্রতিটি ডাক ঘরে ই-কমার্সের জন্য একটি আলাদা কর্নার থাকছে যেখান থেকে পণ্য শর্টিং, ট্র্যাকিং এবং দ্রুততম সময়ে ক্রেতার কাছে পণ্য পৌঁছে দেয়া হবে।
তিনি বলেন, ডাকঘরকে স্মার্ট বাংলাদেশ যুগের উপযোগী করে গড়ে তুলতে ডিজিটাল সার্ভিস ডিজাইন ল্যাবের (ডিএসডিএল) প্রস্তাবের আলোকে স্মার্ট ডাকঘর প্রতিষ্ঠায় পরিচালিত সমীক্ষার চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে স্বল্প মেয়াদি, মধ্য মেয়াদি ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে ডাক সেবায় ডাকঘরের সমকক্ষ কোন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া দুরূহ হবে।
ডিজিটাল প্রযুক্তিতে বাংলাভাষার উদ্ভাবক মোস্তাফা জব্বার বলেন, প্রথম এবং দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লব মিস করে শতশত বছর প্রযুক্তিতে পশ্চাদপদ থেকে ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বে অনুকরণীয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে আমাদের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে দেশ প্রেমিক প্রতিটি মানুষকে এগিয়ে আসার আাহ্বান জানান মন্ত্রী। পরে ‘ই-কমার্স মুভার্স অ্যাওয়ার্ডস (ইসিএমএ) ২০২৩’ বিতরণ করা হয়।