সামাজিক নিরাপত্তা বিধান কর্মসূচির বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের টাকা নগদ একাউন্ট থেকে উধাও হয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি পঞ্চগড় সদর উপজেলার হত দরিদ্রদের একাউন্ট হ্যাক করে কে বা কারা লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে, তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। এ ঘটনায় ভুক্তভোগিরা সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ও সমাজসেবা অফিসে গিয়ে হারিয়ে যাওয়া টাকার হদিস খুঁজছেন। কিন্তু এ দায় সমাজসেবা অধিদপ্তরের কেউ কাঁধে নিতে না চাওয়ায় হত দরিদ্র শত শত বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে।
ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, ভাতা মোবাইলের নগদ একাউন্টে আসার কয়েকদিন আগে সমাজসেবা অফিস থেকে যাচাই-বাছাইয়ের জন্য ডাকে। তারপর থেকেই শুরু হয় ফোন আসা। মোবাইলে সমাজসেবা অফিসের পরিচয়ে এক ব্যক্তি ফোন দিয়ে বলেন- আপনার বয়স্ক ভাতার টাকা একাউন্টে পাঠানো হবে। দয়া করে আপনার মোবাইলে প্রেরিত কোড নম্বরটি বলেন। এমনকি এটাও বলেন যে কয়েকদিন আগে অফিসে ডাকা হয়েছিল। এভাবেই প্রতারণা করে হাতিয়ে নেয় হতদরিদ্র পরিবারের লাখ লাখ টাকা।
কামাতপাড়া এলাকার রেজিয়া বেগম বলেন, তার নগদ একাউন্টে বয়স্ক ভাতার ১৮০০ টাকা ছিল। এক ব্যক্তি ফোনে সমাজসেবা অফিসের পরিচয় দিয়ে বলেন, আপনার মোবাইলে একটি কোড গেছে দয়া করে নম্বরটি বলেন। আপনাকে টাকা পাঠানো হবে।
হারিভাসা এলাকার প্রতিবন্ধী ফজলুল করিম বলেন, আমি এমনি প্রতিবন্ধী তার ওপর সড়ক দুর্ঘটনায় একটি পা ভেঙ্গে বিছানায়। ফোন করে বলেন, আপনার নম্বরে টাকা যাবে ভুল বুঝিয়ে পিন নম্বর নেয়। পরে সুস্থ হয়ে টাকা তুলকে গিয়ে দেখি নাই।
একই এলাকার খমিরন নেছার বিধবা ভাতা টাকা ভুল বুঝিয়ে নিয়ে যায়। স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা জানান, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধীদের ভাতার টাকা উন্নত তথ্য প্রযুক্তির যুগে এত সহজে হজম করবে প্রতারক চক্র। তাদের দাবি এঘটনায় সমাজসেবা অফিস ও নগদ অফিসের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিলেই বেড়িয়ে পড়বে এর রহস্য।
তথ্য সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলা ও পৌরসভায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী মোট ভাতাভোগীর সংখ্যা ২৩ হাজার ৩৬৫ জন। তবে এদের মধ্য থেকে কতজনের টাকা হ্যাক করে নেয়া হয়েছে তার কোনো সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তারা সবাই নগদের মাধ্যমে ভাতা পাচ্ছেন। প্রতি তিন মাসে ভাতা ১ হাজার ৮০০, বিধবা ১ হাজার ৬৫০ ও প্রতিবন্ধী ভাতা ২ হাজার ১৫০ টাকা পাবেন। গত মাসের শেষ সপ্তাহে নগদের মাধ্যমে সুবিধাভোগিদের একাউন্টে আসা শুরু করে টাকা।
উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মোছা. লায়লা আরজুমান জানান, বিষয়টি নিয়ে আমরা ঢাকায় কথা বলেছি, যারা কাজ করে। এটি নিয়ে আমরা খুবই বিব্রতকর অবস্থায় আছি। কিভাবে ভাতাভোগির নম্বরটি তাদের কাছে যাচ্ছে। তবে সচেতনতার জন্য আমরা ইউনিয়নে মাইকিং করেছি, যে পিন নম্বর কাউকে দিবেন না।