ফেসবুকের অপপ্রচার, মিথ্যা তথ্য ও গুজববিষয়ক একজন গবেষককে বরখাস্ত এবং তাঁর গবেষণাকর্ম বাতিল করে দিয়েছে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার প্রধান মার্ক জাকারবার্গের পক্ষ থেকে বড় অঙ্কের অনুদান পাওয়ার পর আমেরিকার স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়টি এমনটা করেছে। এতে করে বড় প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর অপপ্রচারের মুখোশ উন্মোচন আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ল বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস জানায়, জোয়ান ডোনোভান নামের এক বিশেষজ্ঞ ২০১৮ সালে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কেনেডি স্কুলের একটি টাস্ক ফোর্সের প্রধান হিসেবে কাজ শুরু করেন। তিনি সংবাদ মাধ্যমের অন্যায্য প্রভাব বা ম্যানিপুলেশন ও অনলাইন চরমপন্থা বিষয়ে বিশেষজ্ঞ। টাস্ক ফোর্সটির কাজ ছিল সংবাদ মাধ্যমের ম্যানিপুলেশন খতিয়ে দেখা।
ডোনোভান অভিযোগ করেন, সব কিছু ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ২০২১ সালে ফাঁস হওয়া ‘ফেসবুক পেপারস’ নিয়ে কাজ শুরু করার পর নড়েচড়ে বসে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বহুল আলোচিত এসব ফেসবুক পেপারসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির কনটেন্ট নিয়ন্ত্রণ ও ছড়িয়ে দেওয়া নিয়ে অনেক কিছু বলা হয়েছে। এসব পেপারস বের হওয়ার পর চাপে রয়েছে ফেসবুক।
নিজের গবেষণাকর্ম বাতিল হওয়ার পর ‘হুইসেলব্লোয়ার এইড’ নামের একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানের দ্বারস্থ হন ডোনোভান। দাতব্য প্রতিষ্ঠানটি বিভিন্ন কোম্পানির গোপন তথ্য ফাঁসকারীদের সহায়তাদান করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে আমেরিকার ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের শিক্ষা বিভাগ ও অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ে একটি অভিযোগ করেন ডোনোভান। ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যেই অবস্থিত হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, চলতি বছরের শুরুতে জাকারবার্গ ও তাঁর স্ত্রী প্রিসিলা চ্যান হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়কে ৫০ কোটি ডলার অনুদান দেন। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে গবেষণা করতে এ অর্থ ব্যয় করা হবে। চ্যান জাকারবার্গ ইনিশিয়েটিভ নামের দাতব্য প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এ অর্থ দান করা হয়।
জাকারবার্গের অনুদান পাওয়ার পর চলতি বছরের আগস্টে ডোনোভানকে বরখাস্ত করে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়। কেনেডি স্কুলের ওই টাস্ক ফোর্সটিও বাতিল করা হয়। বর্তমানে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করছেন ডোনোভান।