মানুষের কোনো ধরনের সহায়তা ছাড়াই ছোট ছোট কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাব্যবস্থা তৈরি করতে পারবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মডেল। গতকাল শুক্রবার একদল গবেষকের প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রথম এ ধরনের গবেষণা করা হয়েছে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে, চ্যাটজিপিটি যে ধরনের মডেল দিয়ে তৈরি, সে ধরনের বড় আকারের এআই মডেলগুলো ছোট আকারের এআই তৈরি করতে পারবে। এ ধরনের এআই প্রযুক্তি দৈনন্দিন জীবনেও ব্যবহার করা যাবে।
এআইজিপ ইনকরপোরেশন, ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি ও ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্যাম্পাসের বিজ্ঞানীদের সহযোগিতায় তৈরি এই গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, বিশেষ এই মডেলগুলো কানে শোনার যন্ত্র উন্নত করতে, তেলের পাইপলাইন পর্যবেক্ষণ করতে এবং ঝুঁকিতে থাকা বিভিন্ন প্রজাতি খুঁজে বের করতে সক্ষম।
এআই প্রযুক্তি কোম্পানি এআইজিপের প্রধান নির্বাহী ইয়ান সুন ফক্স নিউজকে বলেন, ‘এই মুহূর্তে আমরা ছোট মডেল তৈরি করতে বড় মডেল ব্যবহার করছি। যেমন—বড় ভাই ছোট ভাইকে উন্নতি করতে সাহায্য করে। এটি স্ববিকশিত এআই তৈরির প্রথম পদক্ষেপ। এআই মডেল যে আরেক এআই মডেল তৈরি করতে পারে, এটা দেখানোর ক্ষেত্রে এটি প্রথম ধাপ।’
এআইজিপের সহপ্রতিষ্ঠাতা ও গবেষকদের একজন ইউবেই চেন বলেন, ‘মজার ব্যাপার হলো, স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছোট এআই মডেল তৈরি করে দেওয়ার জন্য আপনি বড় মডেলগুলো ব্যবহার করতে পারবেন। আমাদের বিশ্বাস, ভবিষ্যতে বড় ও ছোট এআই মডেলগুলো মিলে একটি পূর্ণাঙ্গ বুদ্ধিবৃত্তিক ব্যবস্থা তৈরি করতে পারবে।’
ইউবেই চেন ফক্স নিউজকে বলেন, ‘এআই থেকে তৈরি এই মডেলগুলো পারিপার্শ্বিক শব্দ থেকে মানুষের শব্দ আলাদা করতে পারে, সক্রিয়ভাবে সমস্যা প্রতিরোধ করার জন্য পাইপলাইনের ডেটা নিরীক্ষা করতে পারে, বন্যপ্রাণী ট্র্যাক করতে স্যাটেলাইট এবং স্থলভিত্তিক বিভিন্ন সেনসরের ডেটা বিশ্লেষণ করতে পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এই প্রযুক্তি যুগান্তকারী। কারণ, প্রথমবারের মতো আমরা একটি সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় পাইপলাইন ডিজাইন করেছি এর সাহায্যে। এই মাসে আমরা ডেটা জেনারেশন থেকে শুরু করে এআই মডেল তৈরি এবং কার্যকারিতা যাচাই পর্যন্ত মানুষের হস্তক্ষেপ ছাড়াই স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডিজাইন করা যেতে পারে এমন একধরনের মডেলের ধারণার প্রথম প্রমাণ দেখিয়েছি।’
ফক্স নিউজকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুন ও চেন এমন এক ডিভাইস প্রদর্শন করেন, যেটি মানুষের কার্যক্রম ট্র্যাক করতে পারে। এ জন্য ডিভাইসটি এআই ব্যবহার করে মানুষের চলাফেরাসংক্রান্ত তথ্য জড়ো ও বিশ্লেষণ করে। অথচ ডিভাইসটি আকারে ১০ পয়সার মুদ্রার চেয়েও ছোট।
সুন বলেন, এ ধরনের স্যাম্পল হলো টাইনি মেশিন লার্নিংয়ের উদাহরণ। অর্থাৎ ছোট এআই ব্যবস্থাগুলো ছোট আকারের ডিভাইসেও ব্যবহার করার যাবে। টাইনি মেশিন লার্নিং ক্ষমতা এআইয়ের বিস্তৃতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ থেকে বোঝা যায়, যেকোনো বস্তুই বুদ্ধিমান হয়ে উঠতে পারে। গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে, ভবিষ্যতে কফি মেশিন, ওভেন, ডিশওয়াশার ও টিভির মতো গৃহস্থালির কাজে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিগুলোতেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করা হতে পারে।