স্যামসাং, অপো সহ অন্যান্য বড় স্মার্টফোন নির্মাতারা ২০২৪ সালে উৎপাদন বাড়ানোর পরিকল্পনা করছে। এর মাধ্যমে সাম্প্রতিক বছরগুলোর মন্দা থেকে অ্যান্ড্রয়েড শিল্পের বেরিয়ে আসার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। পরিকল্পিত বৃদ্ধির পরিসর প্রায় ৬-৯ শতাংশ। এছাড়া প্রিমিয়াম সেগমেন্টে আরো বেশি বৃদ্ধির প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। খবর নিক্কেই এশিয়া।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্যানুসারে, ২০২২ সালে কমার পর স্মার্টফোনের চালান চলতি বছর এক দশকের মধ্যে তাদের সর্বনিম্ন পয়েন্টে নেমে আসবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্যামসাং ইলেকট্রনিকস তাদের সরবরাহকারীদের জানিয়েছে, আগামী বছর ২৪ কোটির বেশি স্মার্টফোন তৈরির লক্ষ্য নিয়ে এগোচ্ছে, যা ২০২৩ সালের শুরুর দিকে দেয়া ক্রয়াদেশ পূর্বাভাসের চেয়ে প্রায় ৯ শতাংশ বেশি।
স্যামসাংয়ের প্রক্ষেপণ অনুসারে, ২০২৩ সালে তুলনায় আগামী বছর গ্যালাক্সি জেড সিরিজের ফ্লাগশিপ ফোল্ডেবল স্মার্টফোন প্রায় ৮ শতাংশ বেশি উৎপাদন করবে। এছাড়া গ্যালাক্সি এ এবং গ্যালাক্সি এম সিরিজের সাশ্রয়ী মূল্যের ফোনগুলো ১০ শতাংশের বেশি উৎপাদন করবে।
স্যামসাং কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আগামী বছর গ্যালাক্সি এস আল্ট্রা মডেলের শিপমেন্ট দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়েছে তারা। কারণ হিসেবে ভোক্তার অধিক চাহিদার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
নিক্কেই এশিয়াকে একটি সূত্র জানিয়েছে, একাধিক চীনা স্মার্টফোন নির্মাতাও তাদের সরবরাহকারীদের কাছে তুলনামূলক শক্তিশালী পূর্বাভাসের কথা জানিয়েছে।
স্যামসাং ও অন্যান্য প্রায় সব অ্যান্ড্রয়েড ফোন নির্মাতাদের সরবরাহকারী একটি সংস্থার এক নির্বাহী বলেন, ‘আমরা দেখছি সব অ্যান্ড্রয়েড ফোন নির্মাতা ২০২৪ সম্পর্কে আরো আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠেছে। এটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, স্যামসাং আগামী বছরের জন্য ক্রয়াদেশ যুক্ত করছে। কারণ, এটি এখনো হ্যান্ডসেট বাজারের বড় কোম্পানি। তাদের এমন পূর্বাভাস শিল্পটি পুনরুদ্ধারের বড় ইঙ্গিত।’
স্যামসাংয়ের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অ্যান্ড্রয়েড ফোন নির্মাতা চীনের অপ্পো আগামী বছর ১৫ কোটি ইউনিট উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে, যা ২০২৩ সালের ১৪ কোটি ১০ লাখের চেয়ে ৬ শতাংশ বেশি।
হুয়াওয়ে টেকনোলজিস আবারো ফাইভ জি স্মার্টফোনের শিপিং শুরু করছে। ২০২৪ সালের জন্য ৭ কোটি হ্যান্ডসেট তৈরি করার পরিকল্পনা করছে তারা।
স্মার্টফোনের অন্যান্য উপাদান সরবরাহকারীদের একজন নির্বাহী বলেন, ‘বছরব্যাপী মন্দা থেকে এটিকে সম্পূর্ণ পুনরুদ্ধার বলা যাবে না। তবে অবশ্যই পুনরুদ্ধারের লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি।’
কাউন্টারপয়েন্টের পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৩ সালের সব হ্যান্ডসেট শিপমেন্টের প্রায় ৪ শতাংশ ছিল জেনারেটিভ এআই স্মার্টফোন, যা পরের বছর প্রায় ৮ শতাংশ হবে। আর ২০২৭ সালের মধ্যে এটি ৪০ শতাংশ হবে।
সিউলের ইউজিন ইনভেস্টমেন্ট অ্যান্ড সিকিউরিটিজের এক সিনিয়র বিশ্লেষক লি সেউং উ বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোনের বাজার আগামী বছর সামান্য বৃদ্ধি পাবে। জেনারেটিভ এআই আগামী বছর বড় পরিবর্তন আনবে বলে আমি মনে করি না। যদিও এটি দীর্ঘমেয়াদে অবশ্যই ভালো খবর।’