মোবাইল! আজকাল মানুষের সবচেয়ে আপন বস্তু। মোবাইল তৈরির শুরু থেকে এখন পর্যন্ত পক্ষে-বিপক্ষে অনেক মন্তব্য সবারই জানা। আবার দেশ-বিদেশে মোবাইল ব্যবহারেও ঘটেছে বহু দূর্ঘটনা। মোবাইলের পাশাপাশি সিম কার্ড নিয়ে সৃষ্টি হয়েছিল বিভিন্ন জটিলতা।
কখনো সিম বন্ধ, কখনো নিবন্ধন। অবশেষে সব জটিলতা নিরসনে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন করেছে বিটিআরসি। মোবাইল ও সিম কার্ড ব্যবহার সব ঠিকঠাক থাকলেও এখনো টাকা রিচার্জ নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন দেশের অনেক শিক্ষার্থী।
মধ্য বয়সী নারী আর নতুন গৃহবধূরা। তারা ফ্লাক্সি করতে গেলে মূহুর্তের মধ্য সেই নাম্বার চলে যায় অন্যদের মাঝে। এরই হাত ধরে শুরু হয় মিসকল, সরাসরি কল দিয়ে বখাটেদের বিরক্তিকর আচরণ। তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে মিথ্যার ফাঁদে ফেলে ভয়ভীতি দেখিয়ে গড়ে তুলে বিভিন্ন ধরনের শারিরিক ও মানসিক সম্পর্ক।
এসব কারণ দেখে-শুনে মোবাইল ব্যবহারে একাবারেই অনিইচ্ছুক ছিল বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)’র শিক্ষার্থী সুলতানা ইয়াসমিন সুমী। তিনি ববি’র মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্রী। বাড়ী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার চরখাজুরা গ্রামে। বাড়ী ছেড়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকার কারণে মা-বাবার সাথে যোগাযোগের জন্য তার মোবাইল ব্যবহার জরুরী হয়ে পরে। এরপর তিনি ২০১৩ সালে একটি স্মার্টফোন কিনেন। অপরিচিত নাম্বার থেকে কল আসাকে কেন্দ্র দেশের বিভিন্ন স্থানে বহু ঘটনা শুনে সুমী নিজে নিজে মনস্থির করলো কখনোই তার মোবাইলে ফ্লাক্সি করবেন না।
কেন মোবাইলে ফ্লাক্সি না করে রিচার্জ কার্ড ব্যবহার করেন? এমন প্রশ্নের জবাবে সুলতানা ইয়াসমিন সুমি বলেন, এই পুরুষ শাসিত সমাজ ব্যবস্থায় নারীরা কোন ভাবেই নিরাপদ না। রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র ফ্লাক্সিলোড দোকানেও নারীরা হয়রানী আর প্রতারণার স্বীকার হচ্ছে। ফ্লাক্সি করতে গেলেই দোকানদারসহ ওৎ পেতে থাকা অনেকেই মোবাইল নাম্বার টুকে নেয় নারীদের। সাথে সাথেই চেষ্টা শুরু করে ফোনালাপনের।
এরপর জন্ম নেয় বহু অনাকাঙ্খিত ঘটনার। ব্যক্তিগত মোবাইল কেনার পরই চিন্তা করলাম দোকানে গিয়ে ফ্লাক্সিলোড করা একেবারেই নিরাপদ না। তাই মোবাইল কেনার পর ২০১৩ সাল থেকে শুরু করে চলতি বছরের গেল এপ্রিল মাস পর্যন্ত প্রায় ৭৫ হাজার ২৮০ টাকার ২ হাজার ৮৭০টি রিচার্জ ও মিনিট কার্ড ব্যবহার করি। যার মধ্যে গ্রামীনফোন, বাংলালিংক, রবি, এরাটেল ও টেলিটক সিমের ৩০০, ৫০, ৩০, ২০, ২৫, ১০, ৯ টাকার রিচার্জ ও মিনিট কার্ড রয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘এমন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন ও মোবাইল কোম্পানির এগিয়ে আসা উচিত। সার্বিক সমাধানে একটি আইন ও নিয়ম করে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জোড় সুপারিশও জানান এই আত্ম নিরাপত্তাকারী ও মেধাবী শিক্ষার্থী সুমী।