চীনা কোম্পানি হুয়াওয়ের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অভিযোগের পাল্লা ক্রমে ভারী হয়ে উঠছে। সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক স্টার্টআপ সিএনইএক্স অভিযোগ করেছে তাদের প্রযুক্তিতে অবৈধভাবে প্রবেশের জন্য একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে নিযুক্ত করেছে টেলিযোগাযোগের গিয়ার সরবরাহকারী হুয়াওয়ে। কোম্পানিটির অভিযোগ শিয়ামেন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক বো মাওয়ে গবেষণা প্রকল্পে কাজের নাম করে মূলত তাদের প্রযুক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নিয়েছেন। গত সপ্তাহে টেক্সাসের একটি আদালতে দায়ের করা অভিযোগে এসব কথা জানিয়েছে সিএনইএক্স।
বিভিন্ন ডাটা সেন্টারে ব্যবহূত সলিড স্টেট ড্রাইভের (এসএসডি) পারফরম্যান্স বৃদ্ধিসক্ষম প্রযুক্তি তৈরি করাই সিএনইএক্সের মূল কাজ। হুয়াওয়ের সঙ্গে স্টার্টআপটির বিবাদ নতুন কিছু নয়। ২০১৭ সাল থেকেই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঝামেলা চলছে। গত সপ্তাহে টেক্সাস আদালতে দায়ের করা অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে দুই কোম্পানির তিক্ততা নতুন মোড় নেয়।
টেক্সাসের কেন্দ্রীয় আদালতে দায়ের করা অভিযোগে সিএনইএক্স দাবি করেছে, গবেষণা প্রকল্পের কাজের অংশ হিসেবে কোম্পানির একটি সার্কিট বোর্ডের বিষয়ে জানতে চেয়েছিলেন অধ্যাপক বো মাও। কোম্পানিটি দাবি করে তারা ‘তথ্য প্রকাশ করা হবে না’ এমন শর্তে স্বাক্ষরের বিনিময়ে সার্কিট বোর্ডের বিষয়ে অধ্যাপককে তথ্য দেয়া হয়। তবে এ অধ্যাপক হুয়াওয়ের হয়ে কাজ করছে, এমনটা তারা জানত না বলে অভিযোগ করেছে সিএনইএক্স। ফলে অধ্যাপককে দেয়া তাদের পণ্যের বিস্তারিত প্রযুক্তিগত তথ্যগুলো মূলত হুয়াওয়ের হাতেই চলে যায়।
সিএনইএক্সের পক্ষ থেকে আরো বলা হয়েছে, ‘হুয়াওয়ে সিএনইএক্সের মালিকানা ও বাণিজ্য গোপনীয়তা-সংক্রান্ত তথ্যগুলো হাতিয়ে নিয়েছে এবং তা হুয়াওয়ের সলিড স্টেট ড্রাইভ কন্ট্রোলারের কাছে স্থানান্তর করেছে।’
প্রতিবেদনটি প্রসঙ্গে হুয়াওয়ে অথবা মাওয়ের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগের কারণে ২০১২ সালে বাজার থেকে হুয়াওয়ের তৈরি গিয়ার তুলে দেয় যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির আশঙ্কা ছিল এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে গুপ্তচরবৃত্তি পরিচালনা করবে চীন। যদিও চীনের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের এ ধরনের দুশ্চিন্তা পুরোপুরি ভিত্তিহীন।
এদিকে সিএনইএক্সের সহপ্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে একজন রনিয়ে হুয়াং টেক্সাসে হুয়াওয়ের একটি সাবসিডিয়ারিতে কাজ করতেন। ২০১৩ সালে তিনি হুয়াওয়ে ছেড়ে চলে আসেন এবং সিএনইএক্স প্রতিষ্ঠা করতে সহায়তা করেন। ২০১৭ সালে হুয়াওয়ে অভিযোগ করে সিএনইএক্স এবং হুয়াং তাদের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করেছে। হুয়াংয়ের অধীনে স্বাক্ষরিত সব চুক্তির পেটেন্ট পাওয়ার অধিকার রয়েছে বলেও দাবি করে হুয়াওয়ে।