আইফোনে ‘গোল্ডডিগার’ নামে বিরল ভাইরাসের আক্রমণ হয়েছে। আইওএস অপারেটিং সিস্টেমকে টার্গেট করে এই আক্রমণ। ব্যবহারকারীদের ফেস রিকগনিশনসহ সংবেদনশীল নানা তথ্য চুরি করছে এটি।
আগ্রাসী ব্যাংকিং ট্রোজানের (ব্যাংক অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন সংবেদনশীল তথ্য চুরি করে) গুচ্ছের একটি হল এই ভাইরাস। এটি এশিয়া প্যাসিফিক (এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয়) অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের আইফোনে দেখা গেছে।
গত বছর ভাইরাসটি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনে দেখা যায়। কিন্তু এটির নতুন সংস্করণ তৈরি হয়েছে, যেটি আইফোনে হামলা করে। এটি বিরল বা অস্বাভাবিক ঘটনা। কারণ, অ্যাপল অপারেটিং সিস্টেমের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য জন্য সুপরিচিত।
সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক কোম্পানি গ্রুপ– আইবি আইওএসের এই ভাইরাস প্রথম লক্ষ্য করে। গত বছরের অক্টোবরে ভাইরাসটি অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে আক্রমণ করে। সেই সময় থেকে ভাইরাসটিকে এই কোম্পানি পর্যবেক্ষণ করছে এবং গোল্ডডিগার নামকরণ করে। ক্ষতিকর প্রোগ্রামটি একটি ব্যাংকিং ট্রোজান। ক্রিপ্টো ওয়ালেট, ব্যাংকিং অ্যাপ, ওই–ওয়ালেটকে লক্ষ করে হামলা করে অর্থ সম্পর্কিত তথ্য চুরি করে ট্রোজান ভাইরাস।
প্রাথমিকভাবে এটি ভিয়েতনামে পাওয়া যায় এবং পরবর্তীতে গুচ্ছ ভাইরাস হিসেবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে পাওয়া যায়।
কোম্পানিটি বলেছে, আইওএসের ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করে তৈরি একটি নতুন অত্যাধুনিক মোবাইল ট্রোজান খুঁজে পাওয়া গেছে। এটি ‘GoldPickaxe. iOS’ নামে চিহ্নিত করা হয়েছে। ভাইরাসটি ফেস রিকগনিশন, পরিচয় ও এসএমএসের সংবেদনশীল তথ্যও চুরি করে।
কোম্পানিটি বলছে, এই ভাইরাস তৈরি করতে ডিপফেকের মতো এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। এই ডিপফেক, ডকুমেন্ট ও এসএমএসের ডেটা ব্যবহার করে ডিভাইসগুলো ও ব্যাংকিং অ্যাপগুলোয় হ্যাকাররা প্রবেশ করে।
টেস্টফ্লাইট অ্যাপের মাধ্যমে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে। ডেভেলপারদের পরীক্ষা–নিরীক্ষা করার জন্য নতুন ফিচারগুলো এই অ্যাপে দেওয়া হয়। তবে অ্যাপল দ্রুত ভাইরাসটি সরিয়ে ফেলে। এখন ভাইরাসটি নানা উপায়ে ডিভাইসে প্রবেশ করছে।
চীনের সাইবার অপরাধী গ্রুপ এই ভাইরাস ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য দায়ী বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের ডিভাইসগুলোতে এই ভাইরাস বেশি আক্রমণ করছে। পরবর্তীতে এটি অন্যান্য অঞ্চলে ছড়িয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।
অ্যাপল এই ভাইরাস সম্পর্কে অবগত আছে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছে আইফোনের প্রস্তুতকারক কোম্পানিটি।