কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) চ্যাটবট হিসেবে চ্যাটজিপিটি প্রযুক্তি খাতে ভালো অবস্থানে রয়েছে। নতুন এ সহায়ক প্লাটফর্ম বর্তমানে বিশ্বের শীর্ষ কোম্পানি থেকে শুরু করে ব্যক্তি পর্যায়ে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর ও সমাধান দিচ্ছে। চ্যাটজিপিটি ছাড়াও আরো কিছু বিকল্প প্লাটফর্মও প্রকাশ্যে এসেছে। প্রযুক্তিবিদদের অভিমত, সার্বিকভাবে প্লাটফর্মগুলো ব্যবহারকারীদের বিকল্প অভিজ্ঞতা দেবে।
ক্লড এআই: চ্যাটজিপিটির বিকল্প প্লাটফর্ম হিসেবে শীর্ষে রয়েছে ক্লডএআই। এআই প্রযুক্তি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। সেদিক থেকে ক্লডএআই সৃজনশীলতা ও সঠিক উত্তর দেয়ার সক্ষমতায় চ্যাটজিপিটির পরই রয়েছে। চারটি কারণে এটি চ্যাটজিপিটির সমকক্ষ বলে মনে করা হয়। এগুলো হলো কঠোর নিরাপত্তা স্তর, বিস্তৃত কনটেক্সট, সাম্প্রতিক তথ্যনির্ভরতা ও সৃজনশীল লেখনি তৈরি।
গুগল জেমিনি: চ্যাটজিপিটির আরেক প্রতিযোগী গুগলের জেমিনি। প্রথমে বার্ড এআই নামে এলেও পরে এটিকে ক্লড এআই নামকরণ করা হয়। প্রযুক্তিবিদদের মতে, এটি সবচেয়ে শক্তিশালী ও বহুল ব্যবহৃত। আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে, এটি ওপেনএআইয়ের জিপিটি ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলের ওপর নির্ভরশীল নয়। এছাড়া এতে প্রতিনিয়ত নতুন ফিচার যুক্ত করছে গুগল।
মাইক্রোসপট কোপাইলট: বিং এআই চ্যাট থেকে নতুন নামে প্রকাশ্যে এসেছে মাইক্রোসফট কোপাইলট। এটি ওপেনএআইয়ের জিপিটি ফোর প্রযুক্তি ব্যবহার করে থাকে। কোনো প্রশ্নের উত্তর দেয়ার ক্ষেত্রে কোপাইলট ওয়েব, জিপিটি ফোর মডেল ও মাইক্রোসফটের নিজস্ব প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপডেটেড তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। চ্যাটজিপিটির মতো ডাল ই ইমেজ জেনারেশন মডেল ব্যবহার করে কোপাইলট আকর্ষণীয় ছবি তৈরি করতে সক্ষম।
পারপ্লেক্সিটি এআই: কোপাইলটের মতো পারপ্লেক্সিটি এআইও শক্তিশালী সার্চ ইঞ্জিন যুক্ত। চ্যাটবটটি ব্যবহারকারীদের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য অভ্যন্তরীণ এআই মডেল ও রিয়েল টাইম ওয়েব ডাটা ব্যবহার করে থাকে। এটি বিভিন্ন বিষয়ে জার্নালের সূত্র থেকে শুরু করে গবেষণার কাজেও সহায়তা করে থাকে।
পিআইএআই: এআই স্টার্টআপ ইনফ্লেকশন নির্মিত পিআই কনভারসেশনাল কার্যক্রমে এগিয়ে। মূলত দ্বিপক্ষীয় কথোপকথনের দিক থেকে এ প্লাটফর্ম অন্যদের থেকে আলাদা। অন্য চ্যাটবটগুলো প্রশ্নের বিপরীতে শুধু উত্তর দিয়ে থাকে। কিন্তু এটি কথোপকথন চালিয়ে যাওয়ার মাধ্যমে কার্যকর সমাধান প্রদানে কাজ করে থাকে।
কোরা নির্মিত পিওই: অন্যান্য চ্যাটবটের তুলনায় কোরা নির্মিত পিওই মূলত একটি এআই প্লাটফর্ম। এটি ব্যবহারকারীদের বর্তমানে বিদ্যমান এআই লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে থাকে। এতে গুগলের পাস ও জেমিনি, মেটার লামা, অ্যানথ্রোপিকের ক্লডসহ একাধিক ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল রয়েছে।
ইউচ্যাট: ওপেনএআইয়ের জিপিটি ৩.৫ ও ফোর মডেলের সংমিশ্রণে ইউচ্যাট তৈরি করা হয়েছে। জিপিটি ফোরের সুবিধাগুলো ব্যবহারের জন্য মাসিক ২০ ডলার ফি দিতে হয়।
ক্যারেক্টার ডট এআই: এ প্লাটফর্মটি নামের মতোই কাজ করে থাকে। অর্থাৎ ব্যবহারকারীরা বিখ্যাত অভিনেতা থেকে শুরু করে ঐতিহাসিক ব্যক্তি বা চলচ্চিত্রের চরিত্রের সঙ্গে কথোপকথনের সুবিধা দেবে। এদের মধ্যে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প থেকে শুরু করে আয়রন ম্যানের টনি স্টার্কও রয়েছেন।
বর্তমানে আরো অনেক কোম্পানি নিজস্ব এআইনির্ভর চ্যাটবট চালুতে বিনিয়োগ করছে। ফলে সামনের বছরগুলোয় চ্যাটবটের সংখ্যা আরো বাড়বে বলে মনে করছেন প্রযুক্তিবিদরা।