ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মূল চালিকা শক্তি হচ্ছে কৃষি, প্রযুক্তি, পোশাক এবং প্রবাসী। এই চারটা উৎস থেকেই বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের অধিকাংশ আয় বা রাজস্ব অর্জিত হচ্ছে। তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সমবায়ের ভিত্তিতে কৃষি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। সেই সোনার বাংলার অসম্পূন্ন অথনৈতিক মুক্তির আন্দোলন সফল করছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রতিমন্ত্রী আজ সিংড়া উপজেলায় আয়োজিত কৃষি প্রযুক্তি মেলা-২০২৪ এবং কৃষি যন্ত্রপাতি ও উপকরণ সংরক্ষণাগার এর নব-নির্মিত ভবনের শুভ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অনলাইনে যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে, আমাদের কৃষকদের মুখে হাসি ফুটেছে। কৃষকরা সময় মতো ন্যায্য মূল্যে সার, তেল, বীজ ও বিদ্যুৎসহ সবকিছুতে সহযোগিতা পাচ্ছে বলেই আজ বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন। তিনি বলেন বাংলাদেশের সাড়ে তিন কোটি কৃষি শ্রমিক রয়েছে। যারা মাঠে সোনার ফসল ফলাচ্ছে, মৎস্য চাষিরা মাছের চাহিদা মিটাচ্ছে। এছাড়া দেশে পোল্ট্রি শিল্প এবং ডেইরি শিল্প গড়ে উঠেছে। যার ফলে আমাদের চাহিদা মেটানো সম্ভব হচ্ছে।
প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, শিক্ষার প্রসার ও প্রযুক্তির প্রভাবে বর্তমানে প্রতিবছর প্রায় ১৬ লক্ষ কৃষি শ্রমিক কমে যাচ্ছে, ফলে কৃষি শ্রমিকের বিরাট একটা চাহিদা তৈরি হচ্ছে। আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যতীত এই চাহিদা পূরণ সম্ভব নয়। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কৃষকদের বিনামূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি ও ভর্তূকি প্রদান করছেন। বিগত ১৫ বছরে সিংড়ায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার খাল ও ১০০ কিলোমিটার নদী খনন করা হয়েছে। যার ফলে কৃষকদের জন্য যেমন বিনামূল্যে সেঁচের ব্যবস্থা হয়েছে পাশাপাশি মৎস্যজীবীদের জন্যও মৎস্যচাষের সুযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি আরও বলেন গত ১৫ বছরে সিংড়ার শস্য উৎপাদন প্রায় ১ দশমিক ৫ লক্ষ মেট্রিক টন এবং মৎস্য উৎপাদন প্রায় ৫-৭ হাজার মেট্রিক টন বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিমন্ত্রী পলক জানান, সিংড়াতে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ গবেষণা কেন্দ্র এবং কৃষি প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপনের জন্য একটি প্রকল্প প্রণয়নের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এই গবেষণা কেন্দ্র ও প্রশিক্ষণ ইন্সটিটিউট স্থাপন হলে কৃষি ও মৎস্য উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে এবং শস্য ও মৎস্য ভান্ডার আরও সমৃদ্ধ হবে। পাশাপাশি সিংড়ার ৫ লক্ষ মানুষের চাহিদা পূরণের পর বাংলাদেশের অন্যান্য এলাকার খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণেও ভূমিকা রাখতে পারবে বলেও তিনি জানান।
অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে সিংড়া উপজেলার নির্বাহী অফিসার, সিংড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মৎস্য কর্মকর্তা, স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দসহ এলাকার কৃষকগণ উপস্থিত ছিলেন।
পরে প্রধানমন্ত্রী উপহার সিংড়ার কৃষকদের কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন, সুফলভোগী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠি ২০০টি পরিবারের মধ্যে ২০টি করে মোট ৪০০০টি মুরগি এবং আম গাছ প্রতিমন্ত্রীর পক্ষে উপজেলা প্রাণীসম্পদ অফিসার বিতরণ করেন। ইতিপূর্বে ২০০টি পরিবারের মধ্যে ০১টি করে মুরগির ঘর বিতরণ করা হয়েছে।