পূর্বাভাস এমনই ছিল। যুক্তরাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে টেলিযোগাযোগ সেবা সরবরাহের কার্যক্রম পরিচালনায় ফেডারেল কমিউনিকেশন কমিশনের (এফসিসি) অনুমতি নাও পেতে পারে চায়না মোবাইল। গতকাল এফসিসির সদস্যরা ভোটের মাধ্যমে সর্বসম্মতিক্রমে চীনা কোম্পানিটির আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। এফসিসি জানিয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টির আশঙ্কা থেকেই চায়না মোবাইলকে যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়া হয়নি। খবর টেলিকম এশিয়া ও এএফপি।
এফসিসির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম শুরু করলে এর নিয়ন্ত্রণ থাকবে চায়না মোবাইলের হাতে এবং এখানে চীনা সরকারের নিয়ন্ত্রণ থাকবে। এ অবস্থায় যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কোম্পানিটিকে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিলে তা ‘জাতীয় নিরাপত্তা ও আইনের শাসন বাস্তবায়নকে ঝুঁকির মুখে ফেলবে।’
এফসিসির এ সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বাজার ধরতে চায়না মোবাইলের আট বছরের দীর্ঘ প্রচেষ্টার সমাপ্তি ঘটল। তবে এ রকম কিছু হবে, তা আগে থেকেই অনুমিত ছিল। বিশেষ করে গত মাসে যখন এফসিসির চেয়ারম্যান অজিত পাই জনসম্মুখেই চায়না মোবাইলের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন, তখনই এর ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আভাস পাওয়া গিয়েছিল।
বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল অপারেটর কোম্পানি চায়না মোবাইলের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট গ্রাহকের সংখ্যা ৯৩ কোটিতে পৌঁছেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি চেয়ে সর্বপ্রথম ২০১১ সালে আবেদন করে কোম্পানিটি। তাদের এ আবেদন দীর্ঘদিন ঝুলে থাকার পর অবশেষে গতকাল অনুষ্ঠিত ভোটে এফসিসির পাঁচ সদস্য তা প্রত্যাখ্যানের পক্ষে মত দেন। এফসিসির পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, জাতীয় নিরাপত্তা ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর সঙ্গে ‘ব্যাপক পর্যালোচনা’ এবং ‘গভীর পরামর্শের’ পর সিদ্ধান্তটি নেয়া হয়েছে।
কমিশনার ব্রেন্দান কার বলেন, চায়না ইউনিকন ও চায়না টেলিকমসহ চীন সরকারের আরো কিছু মোবাইল কোম্পানি যুক্তরাষ্ট্রে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এ কোম্পানিগুলোর ২১৪ ধারার অধীনে এখানে মালিকানা রয়েছে, চায়না মোবাইলও এমনটা চেয়েছিল। এ প্রসঙ্গে কমিশনার বলেন, ‘এ ২১৪ ধারা রদ করা যায় কিনা এ বিষয়টি পর্যালোচনা করে দেখবে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থাগুলো।’
চীনের টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানিগুলো সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে তীব্র প্রত্যাখ্যানের মুখে পড়ছে। এ দলে রয়েছে হুয়াওয়ে ও জেডটিই। জাতীয় নিরাপত্তায় হুমকি সৃষ্টি করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বার এ কোম্পানিগুলোর জন্য বন্ধ।