দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য অবৈধভাবে বিক্রি হওয়া ফোনকে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করে অবিলম্বে এসব ফোনের ব্যবহার ও বিক্রি বন্ধে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে দেশীয় মোবাইল ফোন উৎপাদনকারীদের সংগঠন মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার বা ’এনইআইআর’ এর কার্যক্রম গতিশীল করারও আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
বুধবার (মার্চ ২৭) বিকেলে রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান এমআইওবি’র নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, দেশের ফোন প্রস্তুতকারকদের সংগঠন, মোবাইল ফোন অপারেটর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ সব অংশীজনের সঙ্গে আলোচন শেষে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ২০২১ সালে এনইআইআর চালু করে। এই সিস্টেমের মাধ্যমে কার্যকরভাবে মোবাইল ফোনের অবৈধ আমদানি ও বিক্রয় রোধ করা সম্ভব হবে। ২০২০ সালে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন বিপুল অর্থ ব্যয় করে এনইআইআর সিস্টেম স্থাপন করে। কিন্তু দুঃখের বিষয় ২০২১ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে এনইআইআর চালু করার কিছুদিনের মধ্যেই তা স্থগিত বা শিথিল করে দেয়া হয়।
নেতারা বলেন, দেশের ১৭টি মোবাইল ফোন উৎপাদক প্রতিষ্ঠানের প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ রয়েছে এই খাতে। যেখানে কর্মসংস্থান হয়েছে কারিগরিতে দক্ষ ২৫ হাজার মানুষের। তাই এই শিল্পকে বাঁচাতে এনইআইআর চালু করতে হবে।
পাশাপাশি এই পদ্ধতি চালু না হওয়ার কারণে বছরে সরকার ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে, এছাড়া বর্তমানে সন্ত্রাসীরা সিমকার্ড বাদে ওয়াইফাই বা অন্য কোনো প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন সক্ষম। যদি মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বরটিও সিমের সঙ্গে রেজিস্ট্রি করা থাকে তবে আইপি অ্যাড্রেস ও আইএমইআই’র মাধ্যমে এসব সন্ত্রাস মোকাবিলা করা সম্ভব। এনইআইআর পদ্ধতিতে এই নিরাপত্তা খুব সহজেই প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব।
যদি ভোক্তার এনআইডির অধীনে মোবাইল ফোন রেজিস্ট্রেশন করা থাকে, সেক্ষেত্রে অন্য কেউ বেআইনিভাবে তা ব্যবহার করবে না এবং এতে মোবাইল ফোন চুরি, ছিনতাই নিরূৎসাহিত হবে। এ ছাড়া মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হয়রানিমূলক কার্যক্রমও নিরূৎসাহিত হবে।
২০২১ সালে এনইআইআর চালু করা হলেও ফের তা বন্ধ করে দেয়ার ফলে দেশে বৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেটের বাজারে বড় ধস নেমে আসে। বর্তমানে মোবাইল ফোনের বাজারের প্রায় ৪০ শতাংশই দখল করে আছে দেশে অবৈধভাবে প্রবেশ করা মোবাইল ফোন। এতে সরকার বছরে ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। এই পরিস্থিতি উত্তরণে প্রধানমন্ত্রী, টেলিযোগাযোগমন্ত্রী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন সহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয় এমআইওবি’র পক্ষে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন এমআইওবির সভাপতি জাকারিয়া শাহিদ ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মেসবাহউদ্দিন। এ ছাড়া সংগঠনের অন্যান্য নেতারা উপস্থিতি ছিলেন।