এএমডি ও ইনটেলের মতো মার্কিন চিপ কোম্পানির প্রসেসর নিজেদের সরকারি কম্পিউটার ও সার্ভারের ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন নির্দেশ জারি করেছে চীন।
এ ছাড়া, মাইক্রোসফট উইন্ডোজ ও অন্যান্য বিদেশি ডেটাবেজ থাকা পণ্যের পরিবর্তে স্থানীয় পণ্য ব্যবহারের নির্দেশনাও রয়েছে নতুন এ নীতিমালায়, যাকে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে চলমান প্রযুক্তি বাণিজ্য যুদ্ধের সর্বশেষ ধাপ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে রয়টার্স।
নীতিমালা অনুসারে, এখন থেকে চীনের বিভিন্ন সরকারি সংস্থাকে অবশ্যই এএমডি ও ইনটেলের চিপের পরিবর্তে ‘নিরাপদ ও নির্ভরযোগ্য’ স্থানীয় পণ্য ব্যবহার করতে হবে। এই তালিকায় অনুমোদন পেয়েছে ১৮টি প্রসেসর, যার মধ্যে রয়েছে হুয়াওয়ে ও চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি ‘ফিটিয়াম’-এর বানানো চিপ। আর উভয় কোম্পানিই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নিষিদ্ধ।
নতুন এ নির্দেশিকা উত্থাপিত হয়েছিল গত বছরের ডিসেম্বরে। আর সম্প্রতি খুবই নিভৃতে এর বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে, যার বড় প্রভাব পড়তে পারে ইনটেল ও এএমডি’র ওপর। পাশাপাশি এর অর্থ দাঁড়ায়, চীন এরইমধ্যে নিজস্ব পিসি চিপ যথেষ্ট উন্নত করতে পেরেছে যার ফলে ইনটেল-এএমডিকে না হলেও চলে।
ব্রিটিশ দৈনিক ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস প্রতিবেদনে বলেছে, গত বছর ইনটেলের সামগ্রিক আয়ের (পাঁচ হাজার চারশ কোটি ডলার) ২৭ শতাংশ ও এএমডি’র (দুই হাজার তিনশ কোটি ডলার) আয়ের ১৫ শতাংশ এসেছিল চীন থেকে। তবে, এর মধ্যে কতগুলো চিপ সরকার কর্তৃক ও কতগুলো প্রাইভেট খাতে ব্যবহার করা হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।
যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি প্রযুক্তির ওপর এখন পর্যন্ত চীনের সবচেয়ে আগ্রাসী নিষেধাজ্ঞা জারির ঘটনা এটি। গত বছর চীনের বিভিন্ন স্থানীয় কোম্পানির গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামোতে মাইক্রনের চিপ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল বেইজিং।
এর বিপরীতে, যুক্তরাষ্ট্রও চিপ উৎপাদন থেকে শুরু করে অ্যারোস্পেস খাতে কাজ করা বেশ কয়েকটি চীনা কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এমনকি চীনে এনভিডিয়ার মতো মার্কিন কোম্পানির এআইভিত্তিক ও অন্যান্য চিপ বিক্রির ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বাইডেন প্রশাসন।
যুগান্তকারী প্রসেসর উৎপাদনের খাতে আধিপত্য বিস্তার করে আছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও নেদারল্যান্ডস। সম্প্রতি ‘এএসএল’, ‘নিকন’ ও টোকিও ইলেকট্রনের মতো কোম্পানির তৈরি লিথোগ্রাফি মেশিন বিক্রির ক্ষেত্রে নিজেদের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আরও কঠোর করার বিষয়ে একমত হয়েছে দেশগুলো।
অন্যদিকে, বাইদু, হুয়াওয়ে, শাওমি ও ওপোর মতো চীনা কোম্পানি এরইমধ্যে এমন ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে নিজস্ব সেমিকন্ডাক্টর নকশার কাজ শুরু করেছে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য দেশ থেকে তাদের চিপ আমদানির সুযোগ বন্ধ হয়ে যাবে।