ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় টুলে তৈরি বিভিন্ন কনটেন্ট চরমপন্থী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডকে সহজ করে তুলেছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রক সংস্থায় এমন অভিযোগ দায়ের করেছেন অজ্ঞাতনামা এক ব্যক্তি। তিনি দাবি করেছেন, আল কায়েদার মতো সংগঠনগুলোর ফেসবুক পেজে বিভিন্ন কনটেন্ট স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি হচ্ছে, যা শেয়ারের মাধ্যমে সংগঠনগুলো তাদের সম্পর্কিত নানা তথ্য ছড়িয়ে দিচ্ছে সহজেই। তবে ফেসবুকের দাবি, এ কনটেন্টগুলো মুছে ফেলতে তারা আগের চেয়ে বেশি উন্নতি করেছে।
অভিযোগটি করা হয়েছে পাঁচ মাসব্যাপী একটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোর বিভিন্ন ফেসবুক পেজে এ সময়ের মধ্যে তিন হাজার লাইক পড়েছে অথবা নানাভাবে যুক্ত হয়েছে। এছাড়া এসব সংগঠন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ্যেই কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। আর ফেসবুকের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা এসব পেজে বিভিন্ন উপলক্ষ কেন্দ্র করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নানা ধরনের ভিডিও কনটেন্ট তৈরি করছে, যা সংগঠনগুলো আবার শেয়ার করে।
গবেষণাটিতে আরো দেখা গেছে, আল কায়েদা তাদের বিজনেস পেজে ফেসবুকের স্বয়ংক্রিয় ভিডিও তৈরির টুলের মাধ্যমে নির্মিত একটি ভিডিওচিত্র প্রকাশ করেছে। এতে লাইক পড়েছে ৭ হাজার ৪১০টি। এছাড়া ফেসবুক আরো বেশি সমর্থক খুঁজে পেতে সন্ত্রাসী গ্রুপটিকে মূল্যবান তথ্য দিয়ে সহায়তা করছে। একই অবস্থা বিদ্যমান শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী এবং নািস মতাবলম্বী সংগঠনগুলোর ক্ষেত্রেও।
ইউএস সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে দায়ের করা অভিযোগটিতে বলা হয়েছে, ফেসবুক দাবি করছে তারা চরমপন্থী কনটেন্টগুলো সরিয়ে ফেলছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এ ধরনের কনটেন্ট এখনো সাইটটিতে রয়ে গেছে। অর্থাৎ আপত্তিকর কনটেন্ট সরিয়ে ফেলার কথা বলে ফেসবুক মূলত তার শেয়ারহোল্ডারদের প্রতি বিভ্রান্তিমূলক আচরণ করছে।
ন্যাশনাল হুইসেলব্লোয়ার সেন্টারের পরিচালক জন কোস্টাইক বলেন, ওই অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির পক্ষে ফেসবুকের ব্যাপারে এ অস্বস্তিকর তথ্য প্রকাশ করতে পেরে আমি কৃতজ্ঞ। বিবৃতিতে তিনি বলেন, আমরা আশা করছি এসইসি এ বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
এ অভিযোগের ব্যাপারে ফেসবুক এক বিবৃতি জানিয়েছে, প্রচুর বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা এসব উসকানিমূলক কনটেন্ট সরিয়ে ফেলতে গত দুই বছরের চেয়ে অনেক সফল হয়েছে। তাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।
এদিকে চলতি সপ্তাহে ফেসবুকের সহপ্রতিষ্ঠাতা ক্রিস হাফস দ্য নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায় ‘টাইম টু ব্রেকআপ ফেসবুক’ শিরোনামে লেখা সম্পাদকীয়তে বলেছেন, সরকার এ বিষয়ে মার্ক জাকারবার্গকে অবশ্যই জবাবদিহিতার মুখোমুখি করবে।