স্থানীয় বাজার পর্যায়ে ১০ শতাংশ হারে উৎসে আয়কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডে (এনবিআর) আবেদন করেছেন রাষ্ট্রায়ত্ব টেলিকম সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল)।
বিটিসিএলের অর্থ বিভাগ থেকে দেয়া এই আবেদনের চিঠিতে ইন্টারনেটে দ্বৈতকর প্রতিরোধে উপাত্তসহ কর অব্যাহতির সপক্ষে কয়েকটি যুক্তি তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, ইন্টারনেটে দ্বৈতকর পরিশোধ করা সত্ত্বেও আমদানি পর্যায়ে পরিশোধ করা করের চালান আয়কর রিটার্নে প্রদর্শন করতে পারছে না বিটিসিএল।
চিঠিতে বলা হয়েছে, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য বিটিসিএল নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাণিজ্যিকভাবে লাভবান না হওয়া সত্ত্বেও বিটিসিএল অনেক ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থে দেশের তথ্য ও প্রযুক্তি উন্নয়ন খাতে বিশেষ করে পাহাড়ি জনপদ ও প্রত্যন্ত এলাকাসহ ইউনিয়ন পর্যায়ে ডাটা ইন্টারনেটসহ টেলিকম সেবা স্বল্প মূল্যে প্রদান করে আসছে। ডাটা ইন্টারনেট সার্ভিস প্রদানের জন্য বিভিন্ন বৈদেশিক অপারেটর থেকে ব্যান্ডউইথ সেবা বৈদেশিক মুদ্রায় ক্রয় করা হয়। এ ধরনের অর্থ পরিশোধের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ হারে উৎসে কর বিটিসিএলকে পরিশোধ করতে হচ্ছে। বৈদেশিক অপারেটররা ব্যান্ডউইথ সরবরাহের জন্য তাদের নিজ নিজ দেশীয় বিধিবিধানের আলোকে প্রযোজ্য আয়কর ও ট্যাক্স প্রদান করে থাকে। সেবা প্রদানকারী বৈদেশিক প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের দেশে কর প্রদানের প্রত্যায়ন বিটিসিএলকে প্রদান করলে বিটিসিএল থেকে বর্তমানে ১০ শতাংশ হারে উৎসে আয়কর কর্তনের বিষয়টি অব্যাহতি প্রদান করা যেতে পারে।
এছাড়াও, বিটিসিএলের কাছে বৈদেশিক অপারেটরদের পাওনা থেকে উৎসে আয়কর কর্তন করা হলে সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সেবা প্রদানে সম্মত হবে না বলেও চিঠিতে জানানো হয়েছে। এ সিয়ে চিঠিতে লেখা হয়েছে, ব্যান্ডউইথ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের ওপর আয়কর আরোপযোগ্য হলে তা বিটিসিএল থেকে প্রদান করায় বিটিসিএল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। বিটিসিএল ব্যান্ডউইথের মূল্য বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের ক্ষেত্রে উৎসে ১০ শতাংশ হারে আয়কর কর্তন করা হলেও একই ব্যান্ডউইথ স্থানীয় বাজারে বিভিন্ন আইএসপি/আইআইজি অপারেটরদের কাছে বিক্রির সময়ও তাদের নিকট জারি করা ইনভয়েস থেকে ১০ শতাংশ হারে উৎসে আয়কর কর্তন করে বিল পরিশোধ করছে। এক্ষেত্রে একই সেবার জন্য আমদানি পর্যায়ে ১০ শতাংশ এবং স্থানীয় বাজারে বিক্রির ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ হারে আয়কর কর্তন করা হলে দ্বৈতকর আরোপ হচ্ছে। একই সেবার বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রায় পরিশোধের ক্ষেত্রে বিটিসিএলকে মূসক পরিশোধ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। অধিকন্তু এ ধরনের দ্বৈতকর আরোপ করা হলে নির্ধারিত ব্যান্ডউইথের মূল্য বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে।
এ নিয়ে বিটিসিএল জানিয়েছে, এ বিষয়ে আগেও একাধিক চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু কাজে আসেনি। তাই আবারো গ্রাহক পর্যায়ে স্বল্প মূল্যে সেবা প্রদানের বৃহত্তর স্বার্থে সেবা মূল্যের বিপরীতে আয়কর থেকে অব্যাহতি চেয়েছে সংস্থাটি।