লেনোভো ও এর সহায়ক সংস্থা মটোরোলা মোবিলিটি জার্মানিতে বড় একটি আইনি প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছে। দেশটির একটি আদালত ওয়্যারলেস ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডব্লিউএএন) মডিউলসহ কোম্পানি দুটির ডিভাইস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
মার্কিন প্রযুক্তি ফার্ম ইন্টারডিজিটালের সঙ্গে পেটেন্ট বিরোধের জেরে এ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। মূলত ওয়্যারলেস ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডব্লিউএএন) মডিউলটি মোবাইল ইন্টারনেট সংযোগের জন্য অপরিহার্য একটি প্রযুক্তি।
মে মাসের শুরুর দিকে মিউনিখের জেলা আদালত ইন্টারডিজিটালের পক্ষে এ রায় দেয়। ইন্টারডিজিটালের পক্ষ থেকে ৪০ লাখ ইউরো সিকিউরিটি ডিপোজিট পরিশোধ করার পর বিক্রয় নিষেধাজ্ঞা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। মূলত এ পেটেন্ট বিরোধ লেনোভোর ডিভাইসে ব্যবহৃত ওয়্যারলেস ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডব্লিউএএন) প্রযুক্তির লাইসেন্সিং শর্তাবলি নিয়ে তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে সম্প্রতি বাজারে আসা মটোরোলা এজ ফিফটি আল্ট্রার মতো স্মার্টফোনও রয়েছে। এ ডিভাইসে এমন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যার পেটেন্ট রয়েছে ইন্টারডিজিটালের কাছে। তবে এ প্রযুক্তি ব্যবহারে লেনোভোকে কত টাকা দিতে হবে তা নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে।
অন্যদিকে ইন্টারডিজিটালের দাবি, লেনোভো ন্যায্য ও যুক্তিসংগত লাইসেন্সিং ফি দেয়নি, এজন্য আইনি ব্যবস্থা নিয়েছে ইন্টারডিজিটাল। তবে লেনোভোর দাবি, ইন্টারডিজিটালের দেয়া শর্তগুলো ন্যায্য নয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানিয়েছে প্রযুক্তি কোম্পানিটি।
রায়ের ফলে জার্মানিতে লেনোভোর ব্যবসায় তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এখন থেকে লেনোভো জার্মানিতে কোনো ওয়্যারলেস ওয়াইড এরিয়া নেটওয়ার্ক (ডব্লিউডব্লিউএএন) সক্ষম ডিভাইস বিক্রি ও আমদানি করতে পারবে না। এছাড়া নিষেধাজ্ঞার মধ্যে স্মার্টফোন, ট্যাবলেট ও ল্যাপটপ রয়েছে যা জিএসএম, ইউএমটিএস, এলটিই ও ফাইভজির মতো মোবাইল নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসছে।
মটোরোলার স্মার্টফোন ও লেনোভোর বিস্তৃত মোবাইল ডিভাইস উভয়ই এ রায়ের কারণে প্রভাবিত হবে বলে মনে করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা। এরই মধ্যে লেনোভো ও মটোরোলা তাদের জার্মান ওয়েবসাইট থেকে কিছু ডিভাইস সরিয়ে ফেলেছে। তবে কিছু খুচরা বিক্রেতার কাছে এখনো কিছু ডিভাইস মজুদ রয়েছে। এ মজুদ শেষ হয়ে গেলে ঘাটতি ও সরবরাহের সংকট দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বাজার বিশ্লেষকরা।
পেটেন্ট লাইসেন্সিং সংক্রান্ত এ ঘটনা বৈশ্বিক প্রযুক্তি শিল্পে চলমান উত্তেজনার প্রবণতাকে তুলে ধরেছে। পেটেন্ট হোল্ডারদের পক্ষে আইন প্রণয়নের কারণে জার্মানি একটি কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। এটি বিশ্বব্যাপী প্রধান বাজারগুলোয় কোম্পানিগুলো কীভাবে লাইসেন্সিং চুক্তি নিয়ে আলোচনা করবে তা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করতে পারে। বর্তমানে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকলেও কোম্পানিগুলো আগামীতে একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে বলে আশা করছেন প্রযুক্তি বিশ্লেষকরা।