সাইবার নিরাপত্তায় ম্যালওয়্যার বর্তমানে বড় আতঙ্ক। বড় থেকে ছোট কোম্পানি, ব্যক্তিগত কম্পিউটার এবং স্মার্টফোনও এখন ম্যালওয়্যারের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত নয়। মূলত ম্যালওয়্যার ক্ষতিকর সফটওয়্যার, যা কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ক্ষতি করে থাকে। এজন্য ম্যালওয়্যার থেকে রক্ষায় সিকিউরিটি সফটওয়্যার ব্যবহার জরুরি। মেক ইউজ অব প্রতিবেদন অবলম্বনে সেরা ছয়টি অ্যান্টিভাইরাস বা অ্যান্টিম্যালওয়্যার সফটওয়্যারের তথ্য।
১. ম্যালওয়্যারবাইটস: ম্যালওয়্যারবাইটস একটি অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যার যা কম্পিউটার ও মোবাইল ডিভাইসকে ম্যালওয়্যার, ভাইরাস এবং অন্যান্য অনলাইন ঝুঁকি থেকে রক্ষার্থে কাজ করে। এটি ডিভাইস থেকে ম্যালওয়্যার সার্চ করে মুছে ফেলতে সক্ষম। অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার সফটওয়্যারটি উইন্ডোজ, ম্যাকওস, অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস এবং ক্রোমওএসে ব্যবহার করা যায়। এর পেইড ও ফ্রি দুটি ভার্সন রয়েছে।
২. মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার: মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার হলো মাইক্রোসফট নির্মিত একটি নিরাপত্তা সফটওয়্যার। এটি একই সঙ্গে একাধিক ডিভাইস ও ক্রস প্লাটফর্মে সুরক্ষা পরিষেবা প্রদান করতে পারে। মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার মাইক্রোসফট ৩৬৫ সাবস্ক্রিপশনের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত থাকে। এর সঙ্গে বেশ কয়েকটি অ্যান্টিভাইরাস ও অ্যান্টি-ম্যালওয়্যার ফিচারও সরবরাহ করা হয়ে থাকে। মাইক্রোসফট ডিফেন্ডার ডিভাইসের সঙ্গে সংযুক্ত সব অ্যাকাউন্টের নিরাপত্তা ঝুঁকি শনাক্ত করার পাশাপাশি সফটওয়্যারটি ডিভাইস সুরক্ষায় রিকমেন্ডেশন দিতে পারে।
৩. অ্যাপল এক্সপ্রোটেক্ট: ম্যাক কম্পিউটারের সুরক্ষায় কাজ করে অ্যাপল নির্মিত বিল্ট ইন এক্সপ্রোটেক্ট সফটওয়্যার। সফটওয়্যারটিতে স্ক্যান করে ম্যালওয়্যার শনাক্ত হলে ব্লক করে থাকে। এটি অ্যাপ ও ফাইল ডাউনলোড করার আগে ম্যালওয়্যার আছে কিনা তাও স্ক্যান করতে পারে। এরই সঙ্গে ব্যাকগ্রাউন্ডে বিপজ্জনক ফাইল বা প্রোগ্রামগুলোও স্ক্যান করতে পারে। এটি আলাদা করে আপডেট করা দরকার হয় না, কারণ অ্যাপল স্বয়ংক্রিয়ভাবে এক্সপ্রোটেক্ট আপডেট করে থাকে।
৪. ক্যাসপারস্কি: ক্যাসপারস্কি একটি দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার। ক্যাসপারস্কি কোনো ব্যবহারকারীকে কতগুলো অনলাইন ট্র্যাকার অনুসরণ করেছে সেটা দেখানোর মতো সহায়ক কিছু প্রাইভেসি ফিচারও দিয়ে থাকে। সফটওয়্যারটি ব্যবহার করে ম্যালওয়্যার ঝুঁকি পরীক্ষা করতে চাইলে ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট অ্যাপ্লিকেশন ও প্রোগ্রামকে স্ক্যান করতে পারবেন। ক্যাসপারস্কির নিজস্ব সাফারি ও ক্রোমের জন্য ব্রাউজার এক্সটেনশন রয়েছে। এছাড়া শিশুদের সুরক্ষায় এতে একটি সেফ কিডস অ্যাপও রয়েছে।
৫. সার্ফশার্ক অ্যান্টিভাইরাস: বর্তমানে সার্ফশার্ক তাদের ভিপিএন পরিষেবার জন্য বেশ সুপরিচিত। তবে সার্ফশার্ক ওয়ান প্লানের সঙ্গে একটি অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার ব্যবহারের ব্যবস্থা রয়েছে। অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যারটি ডিভাইস স্ক্যানের মাধ্যমে ক্ষতিকারক ফাইল বা প্রোগ্রাম শনাক্ত করে পৃথক করে। এতে ব্যবহারকারী নিজের প্রয়োজন অনুসারে ফুল বা কুইক স্ক্যান করতে পারবেন। অ্যান্টিভাইরাস ছাড়াও সার্ফশার্কের ভিপিএনে রয়েছে কিল সুইচ, অ্যাড ট্র্যাকার ব্লকার, প্রাইভেসি রক্ষার্থে বিকল্প আইডি তৈরি, ডাটা ব্রিচ মনিটরিং, র্যানসমওয়্যার শিল্ডসহ ওয়েবক্যাম প্রটেকশন।
৬. বিটডিফেন্ডার: বিটডিফেন্ডার আরেকটি পরীক্ষিত অ্যান্টিভাইরাস সফটওয়্যার, যা ব্যবহারকারীর ডিভাইসে থাকা অ্যাপগুলোর ফাইল অ্যাকসেস নিয়ন্ত্রণ করার সুবিধা দিয়ে থাকে। এর টাইম মেশিন সিকিউরিটি ফিচারটি অতিরিক্ত সুরক্ষা স্তর হিসেবে কাজ করে যা ব্যবহারকারীর ব্যাকআপ এনক্রিপ্ট বা ধ্বংস করার চেষ্টা করে এমন ম্যালওয়্যারের বিরুদ্ধে সুরক্ষা দেয়। এছাড়া ঝুঁকিপূর্ণ ওয়েবসাইট শনাক্ত করতে বিটডিফেন্ডারের একটি ট্র্যাফিকলাইট ব্রাউজার এক্সটেনশন রয়েছে।