কয়েক দফায় শিক্ষা ছুটি ও প্রেষণে পাঁচ বছর যুক্তরাষ্ট্রে কাটানোর পরও দেশে ফেরেননি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানির (বিটিসিএল) প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ রায়। এমনকি কর্মস্থলের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগও বন্ধ করে দেন তিনি। এ ঘটনায় ‘অসদাচরণ ও পলায়ন’-এর দায়ে তাকে চাকরিচ্যুত করেছে সরকার।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বলছে, নিময় অনুযায়ী যোগাযোগের সব ধরনের চেষ্টা করেও তার হদিস মেলেনি। এজন্য গত ১৪ মে তাকে চাকরিচ্যুত করে আদেশ জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু হেনা মোরশেদ জামানের সই করা আদেশে বলা হয়েছে, সরকারি কর্মচারী বিধিমালা (শৃঙ্খলা ও আপিল) অনুযায়ী অসদাচরণ ও পলায়নের অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় বিশ্বজিৎ রায়কে চাকরি থেকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
টেলিযোগাযোগ বিভাগের দুজন কর্মকর্তা জাগো নিউজকে জানান, বিশ্বজিৎ রায় ২০১৫ সালে এক বছরের শিক্ষাছুটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর করতে যান। ২০১৭ সালে তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আরও এক বছর শিক্ষাছুটির অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০১৮ সালে তিন বছরের প্রেষণের ভূতাপেক্ষ অনুমোদন নেন তিনি। ২০২১ সালের শুরুতে তা আরও এক বছর বাড়ানো হয়।
তারা আরও জানান, প্রকৌশলী বিশ্বজিৎ রায় ২০২১ সালের জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রেষণের মেয়াদ আরও বাড়ানোর আবেদন করেন। কিন্তু টেলিযোগাযোগ বিভাগ তাকে দেশে ফিরে চাকরিতে যোগ দিতে নির্দেশ দেয়। এরপর ওই কর্মকর্তা তার কর্মস্থলের সঙ্গে আর কোনো যোগাযোগ রাখেননি।
পরে টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে যুগ্ম-সচিব প্রিয় সিন্ধু তালুকদারকে বিষয়টি তদন্তের জন্য এক সদস্যের কমিটি করে দেন। তদন্ত শেষে তার দেওয়া প্রতিবেদনে ‘ডিজারশনের’ অভিযোগ প্রমাণিত হয়। এরপর বিশ্বজিৎ রায়কে দ্বিতীয় দফা কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়, যার জবাবও মেলেনি।
সবশেষ টেলিযোগাযোগ বিভাগের সঙ্গে সরকারি কর্ম কমিশনও (পিএসসি) তাকে চাকরি থেকে স্থায়ী বরখাস্তের সিদ্ধান্তে মত দেয়। পরে রাষ্ট্রপতির সম্মতিতে এ কর্মকর্তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়।