প্রযুক্তি বাজারে প্রতি বছরই নতুন মডেলের স্মার্টফোন আনছে অ্যাপল। ২০০৭ সালের জুনে প্রথম আইফোন উন্মোচন করেন স্টিভ জবস। এর পর একাধিক সিরিজ বাজারজাত করেছে কোম্পানিটি। তবে গত চার বছরে বিশেষ করে ফাইভজি সংযোগ চালুর পর আইফোন ক্রয়ে গ্রাহককে উদ্বুদ্ধ করতে তেমন পরিবর্তন আনতে পারেনি কুপারটিনোর প্রযুক্তি জায়ান্টটি। বাজার বিশ্লেষকদের মতে, যদি অ্যাপল নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে চায় তাহলে উদ্ভাবনী কিছু করতে হবে।
গত বছর মোট আয়ের অর্ধেকের বেশি আইফোন খাত থেকে এসেছে কিন্তু গ্রাহক পর্যায়ে নতুন ডিভাইস কেনার হার অনেকটাই কমে গেছে।
সিএনএন-এ প্রকাশিত খবরে বলা হয়, চলতি বছরের ডেভেলপার সম্মেলনে হয়তো অ্যাপল ভিন্ন কিছু করার ইঙ্গিত দেবে। ব্যবহারকারী পর্যায়ে নতুন স্মার্টফোন কেনার মধ্যবর্তী যে সময় তা সব কোম্পানির বিক্রিতেই প্রভাব ফেলছে। এদিক থেকে বেশি সমস্যায় রয়েছে অ্যাপল। এর মধ্যে চীনের বাজারে হুয়াওয়ের সঙ্গে প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন আইনি জটিলতা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার চাপ রয়েছে।
গতকাল থেকে শুরু হওয়া বার্ষিক ডেভেলপার সম্মেলনে অ্যাপল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ওপর বেশি জোর দিচ্ছে বলে প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে। প্রযুক্তিবিশারদদের মতে, এআইয়ের ব্যবহার নিশ্চিতে ওপেনএআইয়ের সঙ্গেও চুক্তি করতে পারে কোম্পানিটি। এর মাধ্যমে পণ্যের মানোন্নয়নের পাশাপাশি অন্যদের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে থাকবে।
প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, সামনের বসন্তে আইফোন ১৬ সিরিজ উন্মোচন করা হবে। এতে এআইনির্ভর একাধিক ফিচার থাকবে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা, যা একইসঙ্গে কোম্পানিকে বাজারের শীর্ষস্থান ধরে রাখতে সহায়তা করবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
এআইয়ের ব্যবহার এখনো শুরু না করলেও সহসাই প্রযুক্তি খাতের শীর্ষস্থান হারাচ্ছে না অ্যাপল। কেননা গত বছর শুধু আইফোন বিক্রি করেই ২০ হাজার কোটি ডলার আয় করেছে। তবে প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে হলে বিক্রি ও প্রচারণা কৌশলে পরিবর্তন আনাসহ উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিতে হবে।
সম্মেলন শুরুর আগে সিএনএনকে দেয়া সাক্ষাৎকারে ডি এ ডেভিডসনের বিশ্লেষক গিল লুরিয়া জানান, আগের মতো একই বৈশিষ্ট্যের প্রেজেন্টেশন গ্রাহককে আকৃষ্ট করতে পারবে না। অ্যাপল যদি এর বিক্রি বা ব্যবসা বাড়াতে চায় তাহলে গ্রাহক কেন আইফোন ১৬ কিনবে সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা দিতে হবে।
বিনিয়োগকারীরাও অ্যাপলের ওপর নির্ভর করছেন। বিশেষ করে এআইয়ের ব্যবহার ও বিকাশের দিক থেকে অন্য কোম্পানিগুলো এখন অনেক এগিয়েছে। এ প্রতিযোগিতায় অ্যাপল নিজেদের অবস্থান তৈরিতে কতটুকু সক্ষম সে বিষয়ে এখন তাদের নজর।
ইমার্কেটারের সিনিয়র অ্যানালিস্ট গাদজো সেভিলা ই-মেইলে পাঠানো বিবৃতিতে বলেন, ‘অ্যাপলের জন্য সময় এখন বেশ কঠিন। মাইক্রোসফটের পর বাজারমূল্যের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে এনভিডিয়া। এআই কম্পিউটার বাজারজাতের মাধ্যমে বর্তমানে কোম্পানিটি অ্যাপলের সঙ্গেও অঘোষিত প্রতিযোগিতায় রয়েছে। এ সময় অ্যাপলের যেকোনো ভুল পদক্ষেপ শীর্ষস্থান হারানোর বড় কারণ হয়ে দাঁড়াবে।’