ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত কমিশনার হারুন অর রশীদকে অবৈধ মোবাইল ফোনের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করতে বলেছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে টেলিযোগাযোগ অধিদপ্তরে ‘দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেট উৎপাদনে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে পলক এসব কথা বলেন।
পলক বলেন, আমাদের হ্যান্ডসেটের রেজিস্ট্রেশন সিস্টেম এবং কাস্টমসের ট্যাক্স পেইড ইম্পোর্টেড মোবাইল ফোনের ডাটাবেজ বিটিআরসির কাছে সংরক্ষিত থাকে যাতে আমাদের ল’এনফোর্সিং এজেন্সি, ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর, ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি যখনই অভিযানে যাবে তখনই রিয়েল-টাইম ভেরিফাই করা সম্ভব হয়।
তিনি বলেন, আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গভর্নমেন্ট, ইন্ডাস্ট্রি, অ্যাকাডেমিয়া এবং মিডিয়া পার্টনারশিপ প্রয়োজন। এটা তৈরি হয়েছে বলেই প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছি। এটাকে আরও ব্যবসায় বান্ধব, আন্তরিক, ও বিশ্বাসযোগ্য পর্যায়ে নেওয়ার মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ মধ্যম আয়ের দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হবো। সেক্ষেত্রে আমাদের টেলিকম ও মোবাইল ইন্ডাস্ট্রি খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
প্রতিমন্ত্রী পলক আরও বলেন, আমরা টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের পরিবর্তে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ আইন করছি। আমরা নিয়ন্ত্রণের থেকে টেলিযোগাযোগের সম্প্রসারণের দিকে নজর দিচ্ছি যাতে, কর্মসংস্থানের পাশাপাশি রফতানি আয় বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়। টেলিযোগাযোগ আইনের মাধ্যমে অবৈধ মোবাইল হ্যান্ডসেট ব্যবহারকারীদের প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
নাগরিকদের তথ্য-উপাত্তের নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য তাদেরকে মোবাইল হ্যান্ডসেট নিবন্ধনের জন্য উৎসাহিত করা হবে বলে জানান পলক।
তিনি বলেন, আমরা রেগুলার মার্কেট মনিটরিং করতে চাই। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা মোবাইল ফোন এক্সপোর্টের উপর সরকারের পক্ষ থেকে ১০ শতাংশ ক্যাশ ইনসেনটিভস দেওয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন। আমরা খুব দ্রুত স্মার্টফোন পেনিট্রেশন এবং ব্রডব্যান্ড পেনিট্রেশন বাড়াতে চাই।
ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, এদিকে আমাদের নজর আছে। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে দেশে মোবাইল আনা হচ্ছে। রাজধানীর মোতালেব প্লাজা, গুলিস্তান পাতাল মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্কসহ নামীদামি মার্কেটে দেদার বিক্রি হচ্ছে কর ফাঁকির ফোন। যার কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। একই সঙ্গে দেশীয় মোবাইল ফোন উৎপাদনকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
সেমিনারে মোবাইল অপারেটরদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, দেশে একই আইএমইআই (ইন্টারন্যাশনাল মোবাইল ইকুইপমেন্ট আইডেনটিটি) নম্বর দিয়ে দেড় লাখের বেশি মোবাইল হ্যান্ডসেট চলছে। নামীদামি ব্র্যান্ডের মোড়কে গ্রাহকের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অবৈধ মোবাইল ফোন। দেশীয় মোবাইল ফোন উৎপাদকেরা জানান, অবৈধভাবে কর ফাঁকি দিয়ে লাগেজ-ব্যাগেজে আনা মোবাইল ফোনের বাজারজাত বন্ধ না হলে কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে হবে হ্যান্ডসেট উৎপাদকদের।