পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে যত নিচে যাওয়া যায় ততই রহস্যময় সব তথ্য পাওয়া যায়। তবে, এই ভূগর্ভ সম্পর্কে আমাদের জানার পরিধি খুবই অল্প। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রহস্যময় বস্তু হচ্ছে পৃথিবীর কেন্দ্র, যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয়ে থাকে কোর।
বিজ্ঞান বলছে, পৃথিবীর কেন্দ্র থাকা এই কোর নিজের মতো করে ঘুরছে। তবে, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানালেন, ধীর হয়ে গেছে পৃথিবীর কোর। ঘুরতে শুরু করেছে উল্টোদিকে!
বিজ্ঞানভিত্তিক সাময়িকী নেচার বলছে, পৃথিবীর অভ্য়ন্তরকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়—ক্রাস্ট, ম্যান্টল ও কোর। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ এই অংশেই সম্প্রতি দেখা গেছে এক পরিবর্তন। গবেষকরা দেখতে পেয়েছেন, কোর অংশটির ঘূর্ণন কমে গেছে। ক্রমে তা থেমেও যায়।
এখন পৃথিবীর উপরিভাগ যে অভিমুখে ঘুরছে, তার ঠিক বিপরীত অভিমুখে ঘুরছে কোর।
এই কোরই পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণ অংশ। সূর্যের উপরিভাগের সঙ্গে এর তুলনা করা হয়ে থাকে। এখানে রয়েছে নিকেল ও লোহা। এটি আমাদের পায়ের নিচে ৫ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে অবস্থিত। এবার জানা গেল, এই কোর উল্টোদিকে ঘুরতে শুরু করেছে।
এর ফলে কী হতে পারে?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভয়ের কিছু নেই। পৃথিবীর উপরিভাগে এই কেন্দ্রের ঘূর্ণনের কোনো প্রভাবই পড়বে না। তবুও পুরো বিষয়টির দিকেই নজর রাখা হবে বলেও জানাচ্ছেন তাঁরা। আপাতত এতে আশঙ্কার কিছু নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। তবে, এই গতিতে ঝামেলা হলে ভূমিকম্প হতে পারে কোথাও কোথাও।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি সায়েন্স ফোকাস বলছে, এর আগে ২০১০ সালে পৃথিবীর কেন্দ্রের ঘূর্ণনের গতি আচমকাই কমে যায়। মনে করা হচ্ছে, পৃথিবীর কেন্দ্রের এমন আচরণ নতুন নয়। ৩৫ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে এই ঘূর্ণনের অভিমুখ বদলায়। এবারও তাই হচ্ছে।
এ সংক্রান্ত গবেষণায় যুক্ত ইউনিভার্সিটি অব সাউদার্ন ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক জন ভিদাল বিবিসি সায়েন্স ফোকাসকে বলেন, ১৯৯০ সালের পর থেকেই আমরা জেনে আসছি এই কোরের গতিতে পরিবর্তন আসছে। আর তা নিয়ে বিস্তর গবেষণাও হয়েছে। এবার জানা গেল সত্যটা।