ভার্চুয়াল প্রাইভেট নেটওয়ার্কের সংক্ষিপ্ত রূপ হচ্ছে ভিপিএন। বিভিন্ন কারণে এই ভিপিএন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ে। ভিপিএন ব্যবহারে সুবিধার পাশাপাশি নানারকম ঝুঁকি ও অসুবিধা আছে। এর মধ্যে কিছু নিরাপদ আবার কিছু অনিরাপদ ভিপিএন আছে।
প্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞরা জানান, অনিরাপদ ভিপিএন ব্যবহারে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিতে পড়ার আশঙ্কা আছে। ইন্টারনেট ব্যবহারে ব্যক্তিগত সুরক্ষা, নিরাপত্তা বাড়ানো এবং অপ্রবেশযোগ্য কনটেন্ট দেখার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জনপ্রিয় হয়েছে ভিপিএন। তবে ভিপিএন ব্যবহার করা অবস্থায় ব্যাংক কিংবা অন্য কোনো মাধ্যমে যে কোনো ধরনের আর্থিক লেনদেন থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
নব্বইয়ের দশকে ভিপিএনের আবির্ভাব ঘটেছে। মূলত নিরাপত্তার স্বার্থেই ভিপিএন ব্যবহার করা হলেও স্ট্রিমিং, গোপনীয়তা, গেমিং, ভ্রমণ এবং নিষিদ্ধ সাইট ও কনটেন্টে অ্যাকসেস পেতেও ভিপিএন ব্যবহার করা হয়। শুরুতে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ব্যবহার করা হলেও বর্তমানে ব্যক্তি পর্যায়েই বেশি ব্যবহৃত হচ্ছে। পরিসংখ্যান বলছে, গুগল প্লে স্টোরে শীর্ষ ডাউনলোড করা পাঁচটি অ্যাপসের মধ্যে চারটি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ভিপিএন। এরপর আছে টিকটক।
বর্তমানে অসংখ্য ভিপিএন সফটওয়্যার ও অ্যাপ পাওয়া যায়। এই ভিপিএন টুল ডাউনলোড করার সময় ডিভাইস, ফেসবুক, ই-মেইলসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিয়ন্ত্রণ চলে যায় ভিপিএন নির্মাতার কাছে। এ ঝুঁকির পাশাপাশি অনেক সময় ইন্টারনেটের গতিও কমে যায়।
এ ছাড়া ভিপিএনের মূল উদ্দেশ্য তথ্য গোপন করা। তাই সরকারি সংস্থাগুলো চাইলেও অনেক ক্ষেত্রে এসব তথ্য উদঘাটন করতে পারে না। ভিপিএন ব্যবহার করে বিশ্বব্যাপী বহু অপরাধ সংঘটিত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে অপরাধীদের শনাক্ত করা খুবই কঠিন হয়ে পড়ে।
ফোর্বস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে বাংলাদেশে ভিপিএন ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১ দশমিক ৬ বিলিয়ন, যা মোট ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৩১ শতাংশ। বর্তমানে ভিপিএনের বাজার প্রায় ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার হলেও ২০৩০ সাল নাগাদ এটি ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবাধ ইন্টারনেট ব্যবহারে নানারকম কঠোর বিধিনিষেধ আছে। সেসব দেশে মূলত ভিপিএন ব্যবহার করেন বহু মানুষ। বর্তমানে শীর্ষ ব্যবহারকারী দেশ কাতার। দেশটিতে ৭০ শতাংশ মানুষ ভিপিএন ব্যবহার করেন। এরপর সংযুক্ত আরব আমিরাত ৬২ শতাংশ এবং সিঙ্গাপুর ৫৪ শতাংশ। কম ব্যবহারকারীর তালিকায় শীর্ষে সাউথ আফ্রিকা। সেখানে মাত্র ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ মানুষ ভিপিএন ব্যবহার করেন। এরপর জাপান ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং কেনিয়া ১ দশমিক ৯২ শতাংশ।
অনেক ভিপিএন বিনা মূল্যে বা কম খরচে ব্যবহার করা যায়। আবার অনেক ভিপিএন ব্যবহার করতে নির্দিষ্ট মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এসব ভিপিএনে বিভিন্ন উন্নত ফিচার ও উচ্চগতির সার্ভার ব্যবহারের সুবিধা পাওয়া যায়। তাই বাজারে থাকা সব ভিপিএনই ভালো পরিষেবা দেয় না। ব্যক্তিভেদে ভিপিএন বাছাই নির্ভর করে। তাই ভিপিএনের বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন প্রযুক্তিবিদরা।