ফেসবুকের মূল প্রতিষ্ঠান মেটার মালিকানাধীন বিশ্বের জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপ। বিশ্বে কয়েক কোটি ব্যবহারকারী রয়েছে অ্যাপটির। যার মধ্যে ভারত অন্যতম। ওই দেশে কোটি কোটি ব্যবহারকারী। বিপুল সংখ্যক এই হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহারকারীদের জন্য দুঃসংবাদ। দেশটিতে বন্ধ হতে পারে এই অ্যাপের পরিষেবা।
দিল্লি হাইকোর্টে আলটিমেটাম দিয়ে দিল মেটা। সংস্থা জানিয়েছে, তাদেরকে যদি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন ভাঙতে বলা হয় তাহলে ভারতে পরিষেবা বন্ধ করতে হবে। হোয়াটসঅ্যাপের দাবি, এনক্রিপশন ইউজারদের প্রাইভেসি নিশ্চিত করে। তাই এই সুবিধা বন্ধ করা যাবে না। এই মুহূর্তে সারা বিশ্বে হোয়াটসঅ্যাপে সবথেকে বেশি ইউজার রয়েছে ভারতে।
ভারতে যে কারণে বন্ধ হতে পারে হোয়াটসঅ্যাপ
হোয়াটসঅ্যাপ নিয়ে ফের বিতর্ক শুরু। দিল্লি হাইকোর্টে অ্যাপ বন্ধ করার কথা জানাল মেটা। কোম্পানি জানিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপকে যদি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন বন্ধ করতে বলা হয় তাহলে ভারতে পরিষেবা বন্ধ করতে হবে। ফেসবুক মালিকাধীন এই অ্যাপের সবথেকে বড় বাজার ভারত। ৯০ কোটির বেশি হোয়াটসঅ্যাপ ইউজার রয়েছে ভারতে। সুতরাং, ওই দেশে যদি অ্যাপটি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে বিরাট বড় সিদ্ধান্ত হবে।
ভারত ছেড়ে যাওয়ার কথা জানাল হোয়াটসঅ্যাপ
ভারত সরকারের পক্ষ থেকে একটি নতুন আইটি আইন আনা হয়েছে। দিল্লি হাইকোর্টে একটি সেই আইনের অধীন এক রায়ে চ্যালেঞ্জ করেছে হোয়াটসঅ্যাপ তথা মেটা। কোম্পানির হয়ে তেজস করিয়া আদালতে জানান, আমাদের যদি এনক্রিপশন ভাঙতে বলা হয় তাহলে হোয়াটসঅ্যাপ বন্ধ করতে হবে। মানুষ হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে শুধুমাত্র তার গোপনীয়তা নীতির জন্য। যা কোম্পানির সরবরাহ করে।
এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশনের সুবিধা কী?
এটি একটি প্রাইভেসি ফিচার যা অনেক বছর ধরেই হোয়াটসঅ্যাপ দিয়ে থাকে। এটির সুবিধা হল প্রেরক বা সেন্ডার যা পাঠাচ্ছেন তিনি এবং যিনি রিসিভ করছেন বা প্রাপক তারা দুইজন ছাড়া আর কেউ জানতে পারবে না। সে মেসেজ হোক বা ছবি। হোয়াটসঅ্যাপের প্রাইভেসি পলিসিতেও এই ফিচারের উল্লেখ করা হয়েছে।
কী কারণে হোয়াটসঅ্যাপের এমন জানিয়েছে?
ভারত সরকারের নতুন আইটি নিয়মে হোয়াটসঅ্যাপকে চ্যাটগুলো ট্রেস করতে এবং বার্তাগুলো যারা পাঠিয়েছেন তাদের শনাক্ত করতে বলা হয়েছে। হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, এটি তাদের প্রাইভেসি পলিসি বা এনক্রিপশন ব্যবস্থাকে দুর্বল করে। পাশাপাশি ভারতীয় সংবিধানের অধীনে ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা নীতি লঙ্ঘন করে। তাই তারা এই এনক্রিপশন ভাঙতে পারবে না।
প্রাইভেসি ও শনাক্তকরণের মধ্যে ভারসাম্য চায় ভারত সরকার
দেশটির কেন্দ্র সরকার জানিয়েছে, অনলাইন সুরক্ষা এবং ক্ষতিকর কনটেন্ট রুখতে মূল ব্যক্তিকে শনাক্ত করা জরুরি। যারা সমাজে ভুয়া তথ্য ও হিংসা ছড়াচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলোর দায়িত্ব। সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়েছে, ট্রেস করার জন্য কিছু মেকানিজম বা প্রযুক্তি আনা উচিত। তবে বিষয়টির জটিলতা বুঝতে পেরে প্রাইভেসি ও শনাক্তকরণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার কথা জানিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
তাহলে কি ভারতে বন্ধ হবে হোয়াটসঅ্যাপ?
দিল্লি হাইকোর্টে এনক্রিপশন ভাঙা যাবে না বলে জানিয়েছে মেটা। যদিও তার পালটা যুক্তি দিয়েছে সরকারও। আনুষ্ঠানিক ভাবে এখনও কিছু ঘোষণা করেনি কোম্পানি। তাছাড়া হোয়াটসঅ্যাপে সবথেকে বেশি ব্যবহারকারী রয়েছে ভারতীয়। তাই দেশে হোয়াটসঅ্যাপ যে সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।