জুলাই মাসে সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা ৬ দিন বন্ধ থাকায় চলতি মাসের বিলের ৫০ শতাংশ সেবামূল্য মওকুফের দাবি উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে গ্রাহক এবং গ্রাহক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে কথা বলা হয়েছে। এরই মধ্যে এর পক্ষে নির্দেশনা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, দেশে টেলিযোগাযোগ সেবার বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবায় এক দেশ এক রেট গাইড লাইন অনুসারে একটানা ৩ দিন বন্ধ থাকলে ১৫ দিনের বিল পরিশোধ না করতে বলা হয়েছে। আর ৭ দিন একটানা বন্ধ থাকলে সারা মাসের বিল না দেওয়ার নির্দেশনা রয়েছে। এর মধ্যে দেশে ৬ দিন একটানা বন্ধ ছিল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। তাই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) থেকে এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন অনেকেই।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, গত ১৮ তারিখ থেকে সারা দেশে ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সেবা বন্ধ থাকায় টেলিযোগাযোগ শিল্পে ৩০ শতাংশ ব্যাবসা কমেছে। এতে করে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সঙ্গে ইন্টারনেট সুবিধাভোগী আরও ৫ কোটি গ্রাহক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। নিয়ম অনুযায়ী জুলাই মাসের বিল অর্ধেক নেওয়ার কথা। এ বিষয়ে গ্রাহকরা কথা বলছেন। আমরাও এমন দাবিই জানিয়েছি। বিটিআরসিকে এসংক্রান্ত স্পষ্ট নির্দেশনা দ্রুতই জানানোর জন্য আহ্বান করছি।
তবে বিষয়টি নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মহিউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে এখন পর্যন্ত আমাদের আলোচনা হয়নি। কোনো সিদ্ধান্ত হলে জানতে পারবেন।
অপরদিকে, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেটের চলতি মাসের বিলের ৫০ শতাংশ সেবামূল্য না নেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সব ব্রডব্যান্ড সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
গতকাল সোমবার মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এই আইনি নোটিশ পাঠান।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি সচিব এবং বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) চেয়ারম্যানসহ মোট চারজনকে এই নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
নোটিশে ইন্টারনেট না থাকার কারণে দেশের মানুষের যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তা অতিসত্বর ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে এবং বর্তমানে নিম্নগতির ইন্টারনেটের কারণে জনগণের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ১৮ জুলাই রাত ৯টা নাগাদ ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। পরে ২৩ জুলাই টানা পাঁচদিন পর রাজধানী ঢাকা ও চট্টগ্রামে সীমিত আকারে ইন্টারনেট সেবা চালু হয়। সারা দেশে কোটাবিরোধী আন্দোলনের জেরে মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছিলেন তথ্য ডাক, টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। অবশ্য, ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে কোনো দায় নেয়নি ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।