চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) বিশ্বব্যাপী ট্যাবলেট বাজারের আকার বৃদ্ধি পেয়েছে। ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশনের (আইডিসি) প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের তুলনায় এ বছর এপ্রিল-জুনে ট্যাবলেট বিক্রি বেড়েছে ২২ শতাংশের বেশি। এ সময় সারা বিশ্বে ডিভাইসটি বিক্রি হয়েছে ৩ কোটি ৪৪ লাখ ইউনিট। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ প্রবৃদ্ধির অন্যতম কারণ হলো নতুন আপডেটেড ট্যাবলেট বাজারে আসা, কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা ও পোর্টেবল ডিভাইস হিসেবে আগের থেকে ট্যাবলেটের ব্যবহার বেড়ে যাওয়া। খবর গিজচায়না।
আইডিসির প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ট্যাবলেট বিক্রির দিক থেকে শীর্ষে রয়েছে টেক জায়ান্ট অ্যাপল। কোম্পানিটি এবার ১ কোটি ২৩ লাখ ইউনিট আইপ্যাড বিক্রি করেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৮ দশমিক ২ শতাংশ বেশি। এ সফলতায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে অ্যাপলের নতুন ১১ ইঞ্চি ও ১৩ ইঞ্চি আইপ্যাড এয়ার ও আইপ্যাড প্রো মডেলগুলো। এ সময় অ্যাপলের আইপ্যাড বেশি বিক্রি হয়েছে চায়নার বাইরের দেশগুলোয়। কারণ অ্যাপল চায়নায় স্থানীয় ব্র্যান্ডগুলোর সঙ্গে শক্তিশালী প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়। অ্যাপলের পর ট্যাবলেট বাজারে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে স্যামসাং। তারা এ প্রান্তিকে বিক্রি করেছে ৬৯ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট, যা গত বছরের তুলনায় সাড়ে ১৮ শতাংশের বেশি। যদিও কোম্পানিটি এ সময় বাজারে বড় ধরনের নতুন কোনো ট্যাবলেট আনেনি, তবে স্যামসাংয়ের কার্যকর মার্কেটিং কৌশল ও পারফরম্যান্স এ প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে। এ তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছে লেনোভো। কোম্পানিটি ২০২৪ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ২৫ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট বিক্রি করেছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৬ দশমিক ৭ শতাংশ বেশি। এ প্রবৃদ্ধিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছে লেনোভোর ডিটাচেবল ট্যাবলেট সেগমেন্ট। এ সময় কোম্পানিটির রেগুলার ট্যাবলেট বিক্রি বেড়েছে ১২ শতাংশের কাছাকাছি, আর ডিটাচেবল ট্যাবলেটের বিক্রয় বৃদ্ধির হার ৪০ শতাংশের কাছাকাছি। এ প্রান্তিকে ২৩ লাখ ইউনিট ট্যাবলেট বিক্রি করে চতুর্থ অবস্থানে আছে হুয়াওয়ে, যা গত বছরের তুলনায় ৪০ শতাংশের বেশি। বিশ্লেষকরা বলছেন, হুয়াওয়ের এ বড় সাফল্যে অবদান রেখেছে জুনে মেটপ্যাড ইলেভেন পয়েন্ট ফাইভএস উন্মোচন ও চীনে অনলাইন প্রমোশন।
আইডিসির প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, চলতি বছর এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ট্যাবলেট বিক্রির সফলতার দিক থেকে শীর্ষ পাঁচটি কোম্পানির মধ্যে শেষে রয়েছে শাওমি। কোম্পানিটি এ সময় ২০ লাখ ইউনিট ডিভাইস বিক্রি করেছে। গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এ বছর শাওমির ট্যাবলেট বিক্রি বেড়েছে ৯৫ শতাংশের কাছাকাছি। তারা নিজ দেশ চীন ও এশিয়ার অনেক দেশে প্রচুর ট্যাবলেট বিক্রি করছে। এছাড়া ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও স্পেনের মতো ইউরোপীয় দেশগুলোতেও আরো জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে ডিভাইসগুলো।
প্রযুক্তিবিদরা বলছেন, ল্যাপটপ ও স্মার্টফোনের মতো ট্যাবলেটের গ্রহণযোগ্যতা দিন দিন বাড়ছে। কোম্পানিগুলো ব্যবহারকারীর সুবিধার কথা চিন্তা করে নতুন নতুন ফিচার ও আপডেটসহ বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট নিয়ে আসছে বাজারে। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের তথ্যানুযায়ী, কভিড-১৯ মহামারীর সময় ওএলইডি ট্যাবলেটের জনপ্রিয়তা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বিশ্লেষক ও সংশ্লিষ্টদের প্রত্যাশা, এ ধারা চলমান থাকবে এবং ২০২৪ সালে এর ব্যবহার আরো বাড়বে।