বছরের পর বছর মামলা ঝুলিয়ে রেখে গ্রামীফোনে নিয়োজিত কর্মীদের বেতন ভাতা বন্ধ সহ অন্যান্য সকল আইনি অধিকার থেকে বঞ্চিতদের সপক্ষে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বৈষম্য বিরোধী গ্রামীণফোন কর্মাচারীরা। সোমবার রাজধানীর ভাটারায় বসুন্ধরা আবাসিক এলাকার সামনে অবস্থিত জিপি হাউজের সামনে এই বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দেন কয়েক শ’ কর্মী।
গ্রামীনফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাসুলুল আমিন মুরাদের নেতৃত্বে অবস্থান কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কমিউনিকেশন সেক্রেটারি আদিবা জেরিন চৌধুরী সহ ইউনিয়নের অন্যান্য নেতাদের মদ্যে আজাহার ইসলাম, শাহরীয়র মুরতুজা, শাহজাহান শাহ, আসাদুজ্জামান, হাবিবুর রহমান।
রাসুলুল আমিন মুরাদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, উচ্চআদলতে আপিল বিভাগের রায় বাস্তবায়ন না করে গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষ যে ধৃষ্টতা প্রদর্শন করিয়াছে তা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ ও সরকারের প্রতি অসম্মানজনক ও ন্যাক্কারজনক। গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের এই বেআইনী ছাঁটাই, অবৈধ লক-আউট ও অসৎ শ্রম আচরনসহ সকল অবৈধ ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মকান্ডের বিষয়ে তদন্তপূর্বক গ্রামীণফোন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহন করতে বেআইনী ছাটাইয়ের শিকার ২০২ জন কর্মীকে তাদের স্বীয় কর্মে পুনর্বহালের ব্যবস্থা গ্রহণ ও নির্দেশনা প্রদানের জন্য বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিকট জোর দাবি জানাচ্ছি।
সমাবেশে বক্তারা জানান, ২০১২ সালের ২৫ মে শুধু মাত্র ট্রেড ইউনিয়ন আবেদন করার অপরাধে ২১৩ জন কর্মীকে বেআইনীভাবে কোন রকম আত্মপক্ষ সমর্থন করার সুযোগ না দিয়ে সরাসরি চাকরিচ্যুত করেছিল গ্রামীণফোনের লিঃ। এদের মধ্যে থেকে ২২ জন কর্মী এই অন্যায় ও বৈষম্যের প্রতি মাতানত না করে আপসহীন থেকে বিগত ১৩ বছর ধরে আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বিভিন্ন আদালতে আইনি যুদ্ধ চালিয়ে আসছে। অপরদিকে অপারেটরটি বিগত সরকারের সাথে আঁতাত করে বছরের পর বছর ধরে আইনের প্রক্রিয়া গুলোকে সুকৌশলে প্রলম্বিত করছে বলে দাবি করেন বিক্ষোভকারীরা।
সমাবেশে জানানো হয়, করোনা মহামারীর সময়ে গ্রামীণফোন লিঃ এর ব্যবসা প্রসার ও মুনাফা উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি হওয়া সত্বেও ২০২০ সালের ২৩-এপ্রিল কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের সাধারণ শাখা হতে মহাপরিদর্শককে চিঠি দিয়ে শ্রমিক ছাটাই/ চাকুরীচ্যুতি বন্ধ রাখা হয় (স্মারক নম্বরঃ ৪০.০১.০০০০.১০২.২৭.০৩০.১৮.৭৭৯) কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু ০২১ সালে ২১-জুন, যখন করোনা দ্বিতীয় ঢেউ তুঙ্গে সম্পূর্ণ দেশ যখন স্থবির ছিল, সরকারী নির্দেশনা অমান্য করে ১৫৯ জন কর্মীকে একসাথে ছাঁটাই করা হয়। যদিও উল্লেখিত কর্মীদের একটি মামলা মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন ছিল। কিন্তু আপিল বিভাগের রায়কে সম্মান না দেখিয়ে অন্য একটি মামলার মাধ্যমে স্বাভাবিক আইনি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত কর ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ। এটা বাংলাদেশ সরকারের সংবিধান এর ধারাঃ ১১১ এর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।