চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সক্ষমতার ব্যক্তিগত কম্পিউটার (পিসি) বিক্রি হয়েছে ১৪ শতাংশ, যা গত প্রান্তিকে ছিল ৭ শতাংশ। এ সময় উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমের এআই সক্ষমতার কম্পিউটার বিক্রি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। বাজার গবেষণা সংস্থা ক্যানালিসের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, ২০২৪ সালের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে উইন্ডোজ এআই পিসির বিক্রি বেড়েছে গত প্রান্তিকের তুলনায় ১২৭ শতাংশ। খবর গ্যাজেট থ্রিসিক্সটি।
ক্যানালিসের প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী ৮৮ লাখ এআই সক্ষমতার পিসি বিক্রি করেছে ডিভাইস নির্মাতারা। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি অর্থাৎ অ্যাপলের সিলিকন চিপসেট ব্যবহৃত এআই কম্পিউটার বিক্রি হয়েছে ৬০ শতাংশ। অন্যদিকে উইন্ডোজ পিসি বিক্রি হয়েছে ৪০ শতাংশের কিছু কম। বিক্রির দিক থেকে অ্যাপল শীর্ষস্থানে থাকলেও ডেল, লেনোভো ও এইচপির মতো অন্য কোম্পানিগুলোর এআই পিসি বাজারে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছে। এ সময় ৮০০ ডলারের (প্রায় ৯৫ হাজার টাকা) বেশি দামের উইন্ডোজ পিসিগুলোর বিক্রি আগের সময়ের তুলনায় ৯ শতাংশ বেড়েছে৷। উইন্ডোজ পিসি নির্মাতাদের মধ্যে এআই পিসি মার্কেটে লেনোভোর ইয়োগা স্লিম ও থিংকপ্যাড ল্যাপটপের বাজার হিস্যা ৬ শতাংশ। ডেলের ইন্সপাইরন, এক্সপিএস ও ল্যাটিটিউড মডেলের বাজার হিস্যা ৭ শতাংশ। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বাজার হিস্যা এইচপির ৮ শতাংশ, যেখানে ভূমিকা রেখেছে এইচপির নতুন এলিটবুক ও অমনিবুক কোপাইলট প্লাস পিসিগুলো। উল্লেখ্য, চীনভিত্তিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান লেনোভো ২০২৭ সালের মধ্যে তাদের সব পিসিতে এআই অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানিয়েছিল। কোম্পানির ইন্টেলিজেন্স ডিভাইসেস গ্রুপের প্রেসিডেন্ট লুকা রোসি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও চীনে ক্রেতারা এআই-নির্ভর পিসিগুলোর প্রতি বেশি আগ্রহী। তাই লেনোভো সব পিসিতে এআই অন্তর্ভুক্ত করতে চায়।’
অন্যদিকে কোয়ালকমের স্ন্যাপড্রাগন এক্স সিরিজের চিপসেট ছাড়া হয় চলতি বছরের জুনে। বিশ্লেষকরা বলছেন, এন চিপগুলো এআই-সক্ষম কম্পিউটারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দ্বিতীয় প্রান্তিকের শেষের দিকে বাজারে আসার কারণে এ সময়কালে স্ন্যাপড্রাগন এক্স সিরিজের চিপসেটসহ কম্পিউটার অপেক্ষাকৃত কম বিক্রি হয়েছে।
ক্যানালিসের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, অ্যাপল তাদের সব নতুন কম্পিউটারে এম-সিরিজ চিপ ব্যবহার করে, যেগুলো এআই কাজের জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। কিছু উইন্ডোজ পিসিতে এখনো পুরনো প্রসেসর ব্যবহার করা হচ্ছে, যা এআইতে ফোকাস করে না।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) জানিয়েছে, চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (এপ্রিল-জুন) সামগ্রিকভাবে ব্যক্তিগত কম্পিউটার বিক্রির পরিমাণ ৩ শতাংশ বেড়েছে। এ সময় বিশ্ববাজারে বিক্রি হয়েছে ৬ কোটি ৪৯ লাখ ইউনিট কম্পিউটার।
আইডিসির বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, এআই প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইসের চাহিদা বাড়ার কারণে বিশ্বে কম্পিউটার বিক্রি বেড়েছে। প্রযুক্তি খাতসংশ্লিষ্ট ও বিশ্লেষকদের তথ্যানুযায়ী, সব খাতে কম্পিউটারের চাহিদা বাড়ার বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। উইন্ডোজ ১১-এর ব্যবহার ও এআই ফিচারযুক্ত কম্পিউটারের কারণে বছরের বাকি সময় গ্রাহক পর্যায়ে চাহিদা ঊর্ধ্বমুখী থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন তারা।