কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে অনেকটাই নিশ্চুপ ছিলেন তরুণ প্রজন্মের কাছে অত্যন্ত জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব সোলায়মান সুখন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উপদেশ কিংবা অনুপ্রেরণামূলক বার্তা দিতে দেখা যেত তাকে। ফেসবুকে তার দেয়া স্ট্যাটাস মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যেত। এ প্রজন্মের কাছে আদর্শ বিজনেস সেলেব্রিটি ছিলেন সোলাইমান সুখন। কিন্তু ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার আসল রূপ বেরিয়ে আসলো।
তরুণদের কাছ থেকে পাওয়া জনপ্রিয়তা পেয়ে সেই তরুণদেরকে ধ্বংস করার নীল নকশা করার সাজিয়েছেন তিনি। আওয়ামী লীগের সঙ্গে পরিকল্পনা করেছেন ছাত্র-আন্দোলনকে কীভাবে দমাতে হবে। এজন্য আন্দোলনের সময় জনপ্রিয় কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদেরকে জোর করে স্কিপ্টেড ভিডিও বানানোর হুমকি দেয়া হয়েছে। এর বিনিময়ে তাদেরকে লাখ টাকার লোভও দেখানো হয়েছে। এমন অজস্র অভিযোগ সুলাইমান সুখনের বিরুদ্ধে। তিনি একাই নন, তার সঙ্গে সরকারকে মদদ দেওয়ার ক্যাম্পেইনে জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে দেশের আলোচিত ইনফ্লুয়েন্সার তৌহিদ আফ্রিদির বিরুদ্ধে।
সোলায়মান সুখন ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন নৌবাহিনীর সাথে। পরে ঢাবি থেকে আইবিএ করে বাংলাদেশের মাল্টিন্যাশনাল জবে জয়েন করেন। বর্তমানে ডাক বিভাগের ডিজিটাল লেনদেন নগদের চিফ পাবলিক রিলেশন বিভাগের পরিচালক। ফেসবুকে ৫ মিলিয়ন ফলোয়ারের মালিক সুখন করেছেন প্রায় ৬০০ এর বেশি পাবলিক সেশন।
এ ব্যাপারে মুখ খুলেছেন গায়ক তাশরিফ খান। এমনকি হাজারো তরুণদের আইডল আরএস ফাহিমও স্বীকোরক্তি দিয়েছেন তাওহিদ আফ্রিদির ব্যাপারে। তাদের অভিযোগ, কোটা আন্দোলন যখন চরমমাত্রায় ধারণ করেছে, যখন সরকার গুলি করে আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ, তখনই কন্টেন্ট ক্রিয়েটর দের টার্গেট করেছে উপরের মহল। যাদেরকে ছাত্ররা ফলো করে, তাদেরকে দিয়ে একটি ভিডিও বানানোর পরিকল্পনা করানো হয়। সেখানে তাদেরকে বলতে বাধ্য করা হবে, ছাত্রদেরকে রাজপথ ছেড়ে দিতে। নাশকতা যা হচ্ছে সব বিএনপি-জামায়াতরাই করছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় ছাত্র-জনতার পক্ষে সরব ছিলেন তাসরিফ খান। তার গান ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’ সামাজিক মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের মধ্যে জনপ্রিয়তা পায়। আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার কারণে সে সময় বিভিন্ন মহল থেকে চাপও এসেছে তাসরিফের ওপর।
সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে কারও নাম না নিয়েই সেসব কথা শেয়ার করেছেন তিনি। পোস্টে একজন সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সারের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন।
তবে যেহেতু তাসরিফ পোস্টে কারও নাম উল্লেখ করেননি, তাই নিশ্চিত হওয়া যায়নি তিনি কার দিকে ইঙ্গিত করেছেন। তবে নেটিজনদের একাংশ ধারণা করছেন ওই সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সার সোলায়মান সুখন।
আরএস ফাহিমও দাবি করেন, সরকারের পক্ষে ভিডিও করার জন্য তাকেও ডাকা হয়েছিল। লোভ দেখানো হয়েছিল লাখ টাকার। এ ব্যাপারে আওয়ামী লিগের পক্ষে কাজ করছিলেন সোলায়মান সূখন আর তৌহিদ আফ্রিদি। শুধু আর এস ফাহিম নয়, সুখন এবং আফ্রিদির ফোন পেয়েছিলো ফুডব্লগার রাফসান দ্য ছোট ভাই, রাকিন আবসারসহ আরো অনেক ইনফুলেন্সাররা। সোস্যাল মিডিয়ায় এ দুজনকে নিয়ে সমালোচনা। আখ্যায়িত করা হয়েছে নব্য রাজাকার হিসেবে।
সামাজিক মাধ্যমে তার বিষয়ে এমন খবর চাউর হওয়ার পর সোলায়মান সুখন এ ব্যাপারে অস্বিকার করেন। কিন্তু তৌহিদ আফ্রিদি নিজের পক্ষে সাফাই গিয়ে একটি ভিডিও আপলোড করেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, কোটায় ছাত্রদের পক্ষেই ছিলেন কিন্তু উপরমহলের চাপ থাকার কারণে তাকে চুপ থাকতে হয়েছে।