দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় শিক্ষা উপকরণের জন্য গুগল ক্রোম ব্রাউজারের ব্যবহার বেড়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এর মধ্যে রয়েছে গবেষণা করা, টিউটোরিয়াল দেখা ও প্রবন্ধ লেখাসহ বিভিন্ন কাজ। স্কুল প্রজেক্ট থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসাইনমেন্ট পর্যন্ত যেকোনো কাজেই শিক্ষার্থীরা ক্রোম ব্রাউজার ব্যবহার করছে। ক্রোমের এক্সটেনশনগুলো হচ্ছে এক ধরনের সহায়ক টুল, যার মাধ্যমে ব্রাউজারের ফিচার বাড়ানো যায়। এটি ব্যবহারকারীদের উৎপাদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। শিক্ষার্থীদের জন্য এমন ছয়টি দরকারি এক্সটেনশন স্ল্যাশগিয়ার প্রতিবেদন অবলম্বনে তুলে ধরা হলো।
১. অ্যাডবি অ্যাক্রোব্যাট: সাধারণ শিক্ষার্থীদের পিডিএফ ফাইল নিয়ে বিভিন্ন কাজ করতে হয়। অ্যাডবি অ্যাক্রোব্যাট এক্সটেনশনটি ক্রোমে পিডিএফ প্রায় সব ধরনের কাজের সুবিধা যোগ করে। অতিরিক্ত কোনো সফটওয়্যার ডাউনলোড না করেই পিডিএফ ফাইল তৈরি, পড়া, সম্পাদনা ও ফাইল পূরণ করা যায় এটি ব্যবহার করে। এক্সটেনশনটির টুলবারে প্রয়োজনীয় সব টুল রয়েছে। যার মাধ্যমে সহজে টেক্সট হাইলাইট, নোট ও প্রয়োজনে স্বাক্ষর যুক্ত করা যায়। অ্যাডবি অ্যাক্রোব্যাটের ডেস্কটপ অ্যাপ জানা থাকলে এটি ব্যবহার করা আরো সহজ। তবে কিছু বিশেষ ফিচার ব্যবহার করতে সাবস্ক্রিপশন ফি দিতে হবে।
২. আস্কিফাই: ইউটিউব থেকে নোট তৈরির জন্য অন্যতম একটি ক্রোম এক্সটেনশন হলো আস্কিফাই। অনেক শিক্ষার্থী কোনো বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ইউটিউব ভিডিও দেখে থাকে। আস্কিফাই ক্রোম এক্সটেনশনে ভিডিও দেখার সময় নোট নেয়াকে আরো সহজ করে তোলে। এর মাধ্যমে ব্যবহারকারী চাইলে ম্যানুয়ালি বা স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্ক্রিনশট নিতে পারে। এতে নোট ও স্ক্রিনশট একসঙ্গে সংরক্ষণ করা হয়। এছাড়া ব্যবহারকারী চাইলে নোট টাইপ করার জন্য ভয়েস ডিক্টেশন বা টাইমস্ট্যাম্প যুক্ত করতে পারে। আস্কিফাই ইউটিউব ছাড়াও অন্য ওয়েবসাইটেও কাজ করে। আস্কিফাইয়ের বেসিক সংস্করণটি ফ্রি, তবে কিছু উন্নত ফিচার ব্যবহার করতে সাবস্ক্রিপশনের ব্যবস্থা রয়েছে।
৩. হেলপার বার্ড: স্ক্রিনের সামনে দীর্ঘ সময় ধরে থাকা চোখের ওপর চাপ তৈরি করে। এজন্য দীর্ঘ স্ক্রিন টাইম চোখের দেখার সক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। হেলপারবার্ড এক্সটেনশন ব্যবহারকারীর জন্য ওয়েবসাইটের ভিজুয়াল পরিবর্তনে সহায়তা করে। এর মাধ্যমে ২৫টি ফন্ট স্টাইল থেকে নিজের পছন্দমতো ফন্ট নির্বাচন করা যায়। এছাড়া টেক্সট সাইজ, স্পেস ও রঙ পরিবর্তন করা যায়। এরই সঙ্গে ডিসলেক্সিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য একটি বিশেষ মোড রয়েছে। এক্সটেনশনটিতে টেক্সট টু স্পিচ ফিচারও রয়েছে। এক্সটেনশনটির বেসিক ফিচারগুলো ফ্রি হলেও প্রিমিয়াম ফিচারের জন্য সাবস্ক্রিপশন প্রয়োজন।
৪. ফোকাস মোড: ইন্টারনেটে মনোযোগ নষ্ট করার মতো অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে, যা শিক্ষার্থীদের মনোযোগের ক্ষেত্রে বাধা হতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য ফোকাস মোড এক্সটেনশন এ সমস্যা এড়াতে সাহায্য করে। এটি ভিন্ন পদ্ধতিতে মনোযোগ নষ্ট করা ওয়েবসাইটগুলোকে ব্লক করে। এর একটি পদ্ধতি হলো ‘কাজে ফিরে আসুন’ মেসেজ দেখানো। আরেকটি হলো ওয়েবসাইটে প্রবেশের আগে অপেক্ষা করতে বাধ্য করা। তবে কোন সাইট ব্লক করতে হবে এবং কখন ব্লক করতে হবে সেটা ব্যবহারকারী নির্ধারণ করতে পারবে।
৫. ওয়েব হাইলাইটস: প্রায় সময়ই ওয়েবপেজ থেকে নোট তৈরি করা শিক্ষার্থীদের পড়া মনে রাখতে সাহায্য করে। ওয়েব হাইলাইট এক্সটেনশন ব্যবহারকারীর টেক্সট হাইলাইট ও নোট তৈরির সুবিধা দিয়ে থাকে। ব্যবহারকারী যদি ওয়েবপেজ বন্ধ করে তার পরও হাইলাইট করা টেক্সট এতে থেকে যায়। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ফ্ল্যাশকার্ড বানানো ছাড়াও অন্য অ্যাপে নোট এক্সপোর্ট করতে পারে। ওয়েব হাইলাইটস এক্সটেনশনটির বেশির ভাগ ফিচার বিনামূল্যে পাওয়া গেলেও কিছু প্রিমিয়াম ফিচারের জন্য সাবস্ক্রিপশন ফি রয়েছে।
৬.মাইবিব: সূত্র বা উদ্ধৃত উল্লেখ করা একাডেমিক লেখার একটি বড় অংশ। মাইবিব এক্সটেনশন এ কাজকে আরো সহজ করে। এক্সটেনশনটিতে নয় হাজারেরও বেশি সূত্র উদ্ধৃতি করার স্টাইল রয়েছে। ওয়েবপেজে থাকা অবস্থায় এক্সটেনশন আইকনটি ক্লিক করে পছন্দের ফরমেটে নির্বাচন করা যাবে। এরই সঙ্গে এটির মাধ্যমে সরাসরি ওয়ার্ড ডকুমেন্ট কপি করা যাবে। এছাড়া মাইবিব ওয়েবসাইট কতটা বিশ্বাসযোগ্য সে সম্পর্কে তথ্য দিয়ে থাকে। আর এক্সটেনশন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে ব্যবহার করা যায়।
পড়া, নোট তৈরি ও সূত্র বা উদ্ধৃতি উল্লেখ করার মতো কাজে এসব এক্সটেনশন শিক্ষার্থীদের শিখন প্রক্রিয়াকে আরো উৎপাদনশীল ও কার্যকরী করে তুলতে সাহায্য করবে।