আকাশ কেবল সিন্ডিকেট বন্ধ করে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের ওটি টি প্লাটফর্মে লিনিয়া টিভি সম্প্রচারের দাবিতে গ্রাহক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন এর পক্ষ থেকে মাননীয় সম্প্রচার উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। সেই সাথে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বিটিআরসির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব আমিনুল ইসলামের সাথে সাক্ষাৎ করেন।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন এস এস ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খলিল উজ- জামান, সিনিয়র উপ (মিডিয়া) সহকারী পরিচালক মোঃ জাকির হোসেন, এবং সংগঠনের তথ্য ও দপ্তর সম্পাদক শেখ ফরিদ।
বিটিআরসি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বলেন, এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী দাবি আমরা বিষয়টি আলোচনা করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ কি হবে তা পরবর্তীতে জানানো হবে।
এস এস ডিপার্টমেন্টের মহাপরিচালক ব্রিগেডের জেনারেল খলিল উজ- জামান বলেন, আইএসপি দের বলা হয়েছে ইন্টারনেটে লিনিয়ার টিভি সম্প্রচারের জন্য। আমাদের পক্ষ থেকে আইনগতভাবে বা কোনভাবেই বন্ধ করা হয়নি। কারা কিভাবে বন্ধ করেছে এটি দেখা দরকার। তিনি প্রয়োজনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন কে আশ্বস্ত করেন। এছাড়াও আলোচনা হয় কমিশন আইন এবং কমিশনের ক্ষমতা সম্পর্কিত এবং আগামী দিনে করণীয় সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে আবেদনে বলা হয়, বেক্সিমকো এবং আকাশ ব্যবসা সহযোগী কেবল সিন্ডিকেটের কতিপয় ব্যবসায়ী বা ব্যক্তি এতদিন অনৈতিক ভাবে এবং রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে অযৌক্তিকভাবে ইন্টারনেটের অবাধ সম্প্রচার বা ওটি টি প্ল্যাটফর্মে লিনিয়ার টিভি সম্প্রচারের বাধা প্রদান করে লিনিয়ার টিভি ফিড বন্ধ করে দেয়। যার ফলে গ্রাহকের কাছে ইন্টারনেটের সংযোগ থাকলেও প্রায় সাড়ে তিন কোটি গ্রাহক তথ্য প্রাপ্তি, বিনোদন ও শিক্ষার জন্য ওটি টি প্লাটফর্ম ব্যবহার থেকে বঞ্চিত হয়েছে।
সরকারি তথ্যে দেখা যায় গত জুন ২০২৪ পর্যন্ত দেশে ১৪.২১৭কোটির বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী রয়েছেন। যার দেশের মোট জনসংখ্যার আশি শতাংশ। কিন্তু বাস্তবে ইন্টারনেটের পরোক্ষ ব্যবহারকারী দেশের শতভাগ জনগোষ্ঠী। ইন্টারনেটের চাহিদা ও ব্যবহার বৃদ্ধির কারণে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুক, youtube, টিক টক, নেটফ্লিক্স সহ অন্যান্য ওটি টি প্লাটফর্মে দর্শক দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মোবাইল ডিভাইসে লিনিয়ার টিভি চ্যানেল গুলোর সম্প্রচারের অনুমতি দিয়ে সরকার তথ্য পপ্তির অবাধ স্বাধীনতার প্রশংসা কুড়িয়ে ছিল। কিন্তু সরকারের ভিতরে থাকা অসাধু আকাশ কেবল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী এবং তার সাথে যুক্ত কতিপয় কেবল ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে ইন্টারনেট পরিষেবা অন্যতম মাধ্যম লিনিয়ার টেলিভিশন ফিড বন্ধ করে। এই পরিষেবা সিন্ডিকেট করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে বেক্সিমকো ও তার সহযোগী কতিপয় কেবল সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী। সেই সাথে রাষ্ট্রকে বঞ্চিত করেছে হাজার হাজার কোটি টাকার রাজস্ব থেকে। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ক্যাবলের গ্রাহকের সংখ্যা কত এবং কত টাকা প্রকৃতপক্ষে রাজস্ব খাতে যায় এই তথ্য সরকারের কাছে স্পষ্ট নয়।
একটি এলাকায় একাধিক ব্রডব্যান্ড সেবা দানকারী থাকলো টেলিভিশন কেবল ব্যবসায়ী মাত্র একজন। ফলে গ্রাহক চাইলেই কম মূল্যে কিংবা অন্য কেবল সেবা নিতে পারেনা।
বর্তমান গ্লোবাল ভিলেজে কোনভাবেই ইন্টারনেটের স্বাধীনতা খর্ব করা যেমন উচিত নয় তেমনিভাবে ইন্টারনেটের স্বাধীনতা বন্ধ করে দেওয়া মানবাধিকার লঙ্ঘনের সমতুল্য।
সংগঠনের পক্ষ থেকে মোবাইল ডিভাইসে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ও টি টি প্লাটফর্মে লিনিয়ার টিভি পুনরায় উন্মুক্ত করতে অন্তত অন্তবর্তী সরকারের তথ্য সম্প্রচার ও টেলিযোগ উপদেষ্টা সেই সাথে টেলিযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন নিকট দাবির পক্ষে ৭ টি ব্যাখ্যা উপস্থাপন করা হয়।