ক্যানভা হলো একটি গ্রাফিক ডিজাইন প্লাটফর্ম, যা ভিজ্যুয়াল কন্টেন্ট তৈরির জন্য টুল সরবরাহ করে। এটি ব্যবহারবান্ধব ইন্টারফেস প্রদান করে, যার মধ্যে ড্রাগ অ্যান্ড ড্রপ ফাংশনালিটি রয়েছে। ফলে যাদের খুব বেশি ডিজাইন সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা নেই তাদের জন্য এটি ব্যবহার করা সহজ হয়। ক্যানভা বিভিন্ন ধরনের প্রকল্পের জন্য টেমপ্লেট ও ডিজাইন উপাদান সরবরাহ করে। ব্যবহারবান্ধব হওয়া ছাড়াও ক্যানভার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, প্লাটফর্মটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময়। অ্যাপটি সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট তৈরি করতে, ওয়ালপেপার ডিজাইন করতে এবং আরো অনেক কাজেই ব্যবহার করা যায়। ডিজাইন অভিজ্ঞতা ছাড়াই ক্যানভা ব্যবহারের কিছু চমৎকার উপায় জানিয়েছেন লেখক ও ফটোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ ড্যানি মায়োর্কা।
ইনস্টাগ্রাম পোস্ট ও রিল: ইনস্টাগ্রামে ছবি ও ভিডিও পোস্ট করা হলে এটি অস্পষ্ট বা ‘ব্লারি’ দেখায়। ফলে অনেক ভালো কোয়ালিটির ছবিও পোস্ট করার পর মান নষ্ট হয়ে যায়। যদিও ইনস্টাগ্রামের ছবিগুলোর কম্প্রেশন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয়, তবে পোস্ট ও রিলসের আকার পরিবর্তন করলে তা কিছুটা স্পষ্ট দেখাবে। আর ক্যানভা এ সুবিধা দিয়ে থাকে, যা ছবির আকার পরিবর্তনকে সহজ করে তোলে। এছাড়া ছবিতে টেক্সট ও অন্যান্য ফিচার যুক্ত করতেও ক্যানভার বিভিন্ন টেমপ্লেট ব্যবহার করা যায়। অ্যাপটি ফিল্টার ও স্লাইডার দিয়ে ছবি সম্পাদনা করে দেবে।
ওয়ালপেপার: ফোন বা কম্পিউটারের জন্য ওয়ালপেপার কাস্টোমাইজ করার একটি ভালো অপশন হতে পারে ক্যানভা। বিশেষ করে স্মার্টফোনের ওয়ালপেপারের জন্য এটি কার্যকরী। ওয়ালপেপার তৈরি করতে ফোন বা কম্পিউটার স্ক্রিনের সমান মাত্রা নির্বাচন করতে হবে ও ক্যানভার প্রি-ডিজাইনকৃত লেআউটগুলো ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া ডিজাইনকে উন্নত করতে চাইলে বিভিন্ন উপাদানও যোগ করা যাবে।
মিম তৈরি: সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশেষ করে ফেসবুকে বর্তমানে মিম বেশ জনপ্রিয়। বিভিন্ন বিষয়কে হাস্যরস ও কৌতুকের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয় বিভিন্ন মিমসে। ক্যানভা এ মিম তৈরির কাজটি সহজ করে দেয়। এক্ষেত্রে ব্যবহারকারী তার প্রয়োজনমতো টেক্সট যুক্ত করে নিজে ডিজাইন তৈরি করে নিতে পারবেন। মিমের জন্য সাধারণভাবে ব্যবহৃত ফন্টের পরিবর্তে অন্য ফন্টও নির্বাচন করতে পারেন। ক্যানভা মিম কাস্টমাইজ করার জন্য বিভিন্ন মজার ছবিও সরবরাহ করে। মিমের জন্য যেকোনো ছবি ব্যবহার করতে পারেন, জনপ্রিয় মিম টেমপ্লেটগুলো পুনরায় তৈরি করতে পারেন অথবা সম্পূর্ণ নতুনভাবে শুরু করতে পারেন। কিছু ছবি ক্যানভা সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে পাওয়া যায়, কিন্তু ফ্রি অপশনও পর্যাপ্ত রয়েছে।
ক্যালেন্ডার তৈরি: কেউ যদি ক্যালেন্ডার মুদ্রণ করতে চান বা ডেস্কটপ ও মোবাইল স্ক্রিনের জন্য ডিজাইন করতে চান, তবে ক্যানভা একটি দুর্দান্ত টুল হতে পারে। ডিজিটাল প্ল্যানার তৈরি করতেও ক্যানভা ব্যবহার করতে পারেন। অ্যাপটি ব্যবহার করে সাপ্তাহিক বা মাসিক ক্যালেন্ডার তৈরি করা যায় ও চাইলে পছন্দমতো ছবিও যুক্ত করা যায়।
জুমের জন্য ভার্চুয়াল ব্যাকগ্রাউন্ড: জুম কলকে আরো মজাদার করতে কাস্টম ভার্চুয়াল ব্যাকগ্রাউন্ড ব্যবহার করতে পারেন। যদিও জুম অ্যাপের মধ্যেই ব্যাকগ্রাউন্ড পরিবর্তন করার অপশন রয়েছে, তবে ক্যানভায় নিজের মতো ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরি করলে আরো অনেক বিকল্প পাবেন। ক্যানভায় বিভিন্ন ধরনের ব্যাকগ্রাউন্ড যেমন র্যান্ডম প্যাটার্ন, ইন্টেরিয়র ডিজাইন অথবা অফিস স্টাইল ব্যাকগ্রাউন্ড পাওয়া যাবে। এছাড়া পছন্দমতো বিভিন্ন স্থানও তৈরি করা যাবে। প্রযুক্তিসংশ্লিষ্টরা বলছেন, কেউ যদি নিয়মিত জুম ব্যবহার করেন, তবে অন্তত পাঁচটি ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরির কথা বিবেচনা করতে। ফলে একাধিক কাস্টমাইজেশন অপশন থাকবে।
জন্মদিনের কার্ড: অনলাইনে বিভিন্ন টুল ও সেবা থাকার কারণে জন্মদিনের কার্ড পাঠানো ভুলে যাওয়ার আর কোনো অজুহাত নেই। এক্ষেত্রে ক্যানভা কম পরিশ্রমে ফোল্ড করা ও ফোল্ড না করা জন্মদিনের কার্ড তৈরি করে দেবে। কেউ চাইলে পরবর্তী সময়ে এগুলো প্রিন্টও করতে পারবেন।