বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দ্বারা গৃহীত ডিজিটাল উদ্যোগগুলোর ৪৮ শতাংশ তাদের ব্যবসায়িক লক্ষ্য পূরণ বা অতিক্রম করে। অন্যদিকে ডিজিটাল প্রকল্পগুলোকে এগিয়ে নিতে প্রতিষ্ঠানের যেসব প্রধান তথ্য কর্মকর্তা (সিআইও) ও আইটি ম্যানেজাররা সক্রিয়ভাবে কাজ করেন, তাদের মধ্যে ৭১ শতাংশ নিজেদের লক্ষ্য অর্জন বা তার চেয়ে বেশি সফল হয়। এ গোষ্ঠীকে ‘ডিজিটাল ভ্যাংগার্ড’ বলা হয়। নেতৃস্থানীয় গবেষণা ও পরামর্শ কোম্পানি গার্টনারের একটি বৈশ্বিক জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। জরিপটি ৩ হাজার ১০০ জন সিআইও ও প্রযুক্তি নির্বাহী, পাশাপাশি ১ হাজার ১০০ জন আইটি সেক্টরের বাইরের নির্বাহীদের ওপর পরিচালিত হয়।
ডিজিটাল ভ্যাংগার্ড বলতে সেই সিআইও ও অন্যান্য নির্বাহীকে বোঝানো হয়, যারা তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে ডিজিটাল প্রকল্পগুলো সফল বাস্তবায়নে সক্রিয়ভাবে জড়িত থাকেন। গার্টনারের ভাইস প্রেসিডেন্ট রাফ গেলার্সের মতে, এ নেতারা অন্য সিআইও ও নির্বাহীদের তুলনায় ডিজিটাল উদ্যোগের সফলতা নিয়ে বেশি উদ্বিগ্ন। তারা ডিজিটাল ডেলিভারির দায়িত্ব ভাগাভাগি করে নেয়। অর্থাৎ আইটি বিভাগের ওপর সম্পূর্ণ দায়িত্ব না দিয়ে, এসব নেতা বিভিন্ন বিভাগের সঙ্গে কাজ করেন, যেন ডিজিটাল উদ্যোগগুলো সঠিকভাবে বাস্তবায়ন হয়।
টেকমনিটর বলছে, প্রথাগতভাবে আইটি বিভাগ মূলত প্রযুক্তিগত সমাধান প্রদানের দায়িত্বে ছিল। নির্বাহীরা সাধারণত নির্দিষ্ট প্রকল্পের স্পন্সর হিসেবে কাজ করতেন, কিন্তু তারা বাস্তবায়নে গভীরভাবে জড়িত থাকতেন না। এ নতুন পদ্ধতি ঐতিহ্যগত ধারার থেকে একটি বড় পরিবর্তন নির্দেশ করে, এটি বোঝায় যে প্রযুক্তির সফল ব্যবস্থাপনায় নেতৃত্বের মধ্যে সহযোগিতা এবং পারস্পরিক দায়িত্ব এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সংস্থাগুলোর মধ্যে প্রযুক্তি পরিচালনার একটি আরো সমন্বিত ও দায়িত্বশীল পদ্ধতির ওপর জোর দেয়।
গার্টনারের গবেষণা ২০২৫ সালে সিআইওদের গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ প্রবণতাও প্রকাশ করে, যা নতুন প্রযুক্তির প্রতি দৃঢ় আগ্রহের ইঙ্গিত দেয়। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৮৭ শতাংশ সিআইও সাইবার নিরাপত্তা প্রযুক্তিতে আরো ব্যয় করার পরিকল্পনা করছেন এবং একই শতাংশের লক্ষ্য জেনারেটিভ এআইয়ে আরো বিনিয়োগ করা। এছাড়া বিনিয়োগ বাড়বে এমন অন্য ক্ষেত্রগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (৮৪ শতাংশ), ব্যবসায়িক বুদ্ধিমত্তা ও ডাটা বিশ্লেষণ (৮২ শতাংশ) এবং ক্লাউড প্লাটফর্ম (৭৯ শতাংশ)।
অন্যদিকে জরিপে দেখা গেছে, ৪৩ শতাংশ সিআইও পুরনো অবকাঠামো ও ডাটা সেন্টার প্রযুক্তিতে ব্যয় কমানোর পরিকল্পনা করছেন। অনেক প্রতিষ্ঠান পুরনো সিস্টেমগুলো থেকে দূরে সরে ক্লাউডভিত্তিক সমাধানের দিক যাচ্ছে। এদিকে কর্মশক্তি উন্নয়নেও প্রতিষ্ঠানগুলোর কিছু সমস্যা উঠে এসেছে জরিপে। মাত্র ১৬ শতাংশ সিআইও তাদের আইটি বিভাগের বাইরে প্রযুক্তি দক্ষতা তৈরির পরিকল্পনা করেন, যা প্রকল্পের কার্যকারিতা প্রভাবিত করতে পারে বলে মত দেন প্রযুক্তিবিদরা।