ভারতীয় ফোন নম্বরের আড়ালে আন্তর্জাতিক কল শনাক্ত এবং ব্লক করতে নতুন স্প্যাম ট্র্যাকিং সিস্টেম আনল কেন্দ্র দেশটির সরকার। মঙ্গলবার এই ঘোষণার পর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ১.৩৫ কোটি স্প্যাম কল চিহ্নিত করে ব্লক করা হয়েছে। গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর আগেই টেলিকম পরিষেবা প্রদানকারীরা কলগুলোকে ব্লক করেছে।
‘ইন্টারন্যাশনাল ইনকামিং স্পুফড কল প্রিভেনশন সিস্টেম’ লঞ্চের অনুষ্ঠানে ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বলেন, ‘ভারতবাসীকে সাইবার জালিয়াতির হাত থেকে বাঁচাতে এবং দেশকে নিরাপদ ডিজিটাল ক্ষেত্র হিসাবে গড়ে তুলতে এটি সরকারের আর একটি বড় পদক্ষেপ।’
দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় মোবাইল নম্বরকে (+৯১) হাতিয়ার করে স্পুফড কলের মাধ্যমে সাইবার জালিয়াতি চালিয়ে আসছে আন্তর্জাতিক স্ক্যামাররা। এই নিয়ে জেরবার গ্রাহকরা। এই সমস্যার সমাধানেই ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনকামিং স্পুফড কল প্রিভেনশন সিস্টেম’ নিয়ে এসেছে কেন্দ্র সরকার। আগামীদিনে +৯১ নম্বর থেকে এই ধরণের স্পুফড কল উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পাবে বলে আশা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এই নম্বরগুলো দেখলে মনে হবে ভারতীয় ফোন নম্বর। হুবহু এক। কিন্তু আদতে ফোনগুলো বিদেশ থেকে আসছে। কলিং লাইন আইডেন্টিটি হেরফের করে এই ধরণের কল করে স্ক্যামাররা। অধিকাংশ কলই করা হয় আর্থিক জালিয়াতির উদ্দেশ্যে। এছাড়া সরকারি কর্তার ছদ্মবেশে ভয় দেখানো কিংবা আতঙ্ক সৃষ্টির উদ্দেশ্যেও করা হচ্ছে।
এমনকি ডট বা ট্রাই কর্মকর্তা সেজে ফোন করে মোবাইল সংযোগ কেটে দেওয়ার হুমকি, ডিজিটাল গ্রেফতারি, ক্যুরিয়ারে মাদক দ্রব্য পাঠানো, সেক্স র্যাকেট চালানোর মতো ঘটনাও সামনে এসেছে। এরপরই আসরে নামে ডিপার্টমেন্ট অব কমিউনিকেশনস এবং টিএসপিএস। দুই সংস্থা যৌথভাবে এই সিস্টেম তৈরি করেছে যাতে গ্রাহকের কাছে পৌঁছানোর আগেই আন্তর্জাতিক স্পুফড কল শনাক্ত করে ব্লক করা যায়।
ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, সরকারের সবরকমভাবে চেষ্টা করলেও হয়ত দেখা গেল প্রতারকরা অন্য কোনও ভাবে সফল হয়ে গেল। সে ক্ষেত্রে এমন ফোনের জন্য গ্রাহক সঞ্চার সাথীর চক্ষু ফেসিলিটিতে এই ধরনের জালিয়াতির রিপোর্ট করতে পারেন।
চক্ষুতে সাইবার জালিয়াতি নিয়ে রিপোর্ট করা যায়। তৎক্ষণাত ব্যবস্থাও নেয় কর্তৃপক্ষ। এটি সাইবার জালিয়াতি থেকে নাগরিকদের রক্ষা করার জন্য ডিপার্টমেন্ট অফ কমিউনিকেশনসের আরও একটি পদক্ষেপ। এই সিস্টেমও আন্তর্জাতিক ইনকামিং স্পুফ কল ব্লক করে এবং শনাক্ত করে।