চীনা প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে সবথেকে বেশি লাভবান হবে ফিনল্যান্ডভিত্তিক বহুজাতিক নেটওয়ার্ক সরঞ্জাম নির্মাতা নকিয়া। চলতি বছরের এপ্রিল শেষে প্রথম প্রান্তিকের আয় ঘোষণার পর তারা আরো একটি বাণিজ্যিক ফাইভজি চুক্তি সম্পন্ন করেছে। বিশ্বের কিছু অঞ্চলে তারা প্রথমবারের মতো পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক প্রযুক্তি ফাইভজি স্থাপনের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। গত মঙ্গলবার নকিয়ার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রাজিব সুরি এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন। খবর রয়টার্স।
গত বুধবার মার্কিন বাণিজ্য বিভাগের ঘোষণার ভিত্তিতে হুয়াওয়েসহ ৭০টি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যের জন্য কালো তালিকাভুক্ত করে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সই করা নির্বাহী আদেশের ভিত্তিতে ওই ব্ল্যাকলিস্ট বা কালো তালিকা ঘোষণা করা হয়।
হুয়াওয়ের ওপর আরোপিত মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে রাজিব সুরি বলেন, সম্ভবত এখান থেকে দীর্ঘমেয়াদি সুবিধা পাওয়া যাবে। এ বিষয়ে এখনই নিশ্চিত করে কিছু বলা কঠিন। বিশ্লেষকরা অনুমান করছেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং হুয়াওয়ের মধ্যকার উত্তেজনা থেকে সুবিধা পাবে নকিয়া এবং এর সুইডিশ পিয়ার প্রতিষ্ঠান এরিকসন।
গত মাসে নকিয়া জানিয়েছে, ফাইভজি টেলিকম সরঞ্জাম যথাসময়ে সরবরাহ করতে ব্যর্থ হওয়ায় চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আশ্চর্যরকম লোকসানের মুখে পড়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
রাজিব সুরিও স্বীকার করে বলেন, ফাইভজি প্রযুক্তি সরবরাহ করতে তারা কিছুটা দেরি করে ফেলেছেন। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, অধিগ্রহণকৃত টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অ্যালকাটেল-লুসেন্টের সঙ্গে প্রযুক্তি পরিকল্পনা একীভূত করার কারণেই এমনটা ঘটেছে।
তিনি বলেন, আমাদের হাতে বর্তমানে ৩৭টি বাণিজ্যিক ফাইভজি চুক্তি রয়েছে। টি-মোবাইল, এটিঅ্যান্ডটি, এসটিসি এবং টেলিয়াসহ ২০টি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে সুরি বলেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী যে নকিয়া তার বার্ষিক আর্থিক নির্দেশনা অর্জন করতে পারবে।
গত এপ্রিলে নকিয়া তাদের ২০১৯ সালের পূর্বাভাস পুনরায় ঘোষণা করেছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, ২০১৯ সালে তাদের ডিলিউটেড আর্নিংস পার শেয়ার হবে ২৫ থেকে ২৯ ইউরো সেন্ট এবং নন-আইএফআরএস অপারেটিং মার্জিন হবে ৯ থেকে ১২ শতাংশ। হেলসিনকিতে এ প্রতিবেদন লেখার আগ পর্যন্ত নকিয়ার শেয়ারদর ১ দশমিক ৯০ শতাংশ বেড়েছে।
উল্লেখ্য, চীনের সঙ্গে অব্যাহত বাণিজ্যযুদ্ধের অংশ হিসেবে হুয়াওয়েকে নানাভাবে কোণঠাসা করার চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র। প্রতিষ্ঠানটিকে কালো তালিকাভুক্ত করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। হুয়াওয়ের যেকোনো যন্ত্রাংশ এবং স্মার্টফোন বিক্রি করতে চাইলে সেই মার্কিন প্রতিষ্ঠানকে সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। চলতি সপ্তাহের শুরুতে মার্কিন টেক জায়ান্ট গুগল জানিয়েছে, তারা হুয়াওয়ের সঙ্গে কিছু ব্যবসা স্থগিত করেছে। যদিও যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে হুয়াওয়ের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের সময় ৯০ দিন পেছানোর ঘোষণা দিয়েছে।