ছয় মাসে ৩০০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধ করেছে ফেসবুক
ফেসবুকে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কত তা নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে ভুয়া অ্যাকাউন্ট শনাক্ত এবং বন্ধের বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বিশ্বের সবচেয়ে বড় এ সোস্যাল মিডিয়া জায়ান্টটি। এরই অংশ হিসেবে গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ছয় মাসে মোট ৩০০ কোটি ভুয়া অ্যাকাউন্ট বন্ধের তথ্য জানিয়েছে ফেসবুক। গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
ফেসবুকের ভাষ্যে, ২০১৮ সালের ডিসেম্বর শেষে ফেসবুকের মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারী ২৩০ কোটিতে পৌঁছেছে। কিন্তু জনপ্রিয় প্লাটফরমটির বিপুলসংখ্যক ব্যবহারকারীর মধ্যে ভুয়া বা ডুপ্লিকেট অ্যাকাউন্টও রয়েছে অনেক। ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংখ্যা কত, তা নিশ্চিত করেনি প্রতিষ্ঠানটি। তবে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর অন্তত ৫ শতাংশ ভুয়া অ্যাকাউন্টধারী। আর এসব অ্যাকাউন্ট ভারত, ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনের মতো দেশগুলোয় সবচেয়ে বেশি।
ফেসবুক তাদের স্বচ্ছতাবিষয়ক প্রতিবেদনে ভুয়া অ্যাকাউন্টের সংজ্ঞায় বলেছে, একজন ব্যবহারকারী যখন তার আসল অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি অন্য অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করেন, তখন তাকে ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। প্রতিষ্ঠানটি ভুয়া অ্যাকাউন্টকে দুটি শ্রেণীতে ভাগ করেছে। প্রথমত, ব্যবহারকারীর ভুল শ্রেণীবদ্ধ অ্যাকাউন্ট; যা ব্যবসা, প্রতিষ্ঠান কিংবা অন্য কোনো কাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে খোলা হয়। দ্বিতীয়ত, অনাকাঙ্ক্ষিত অ্যাকাউন্ট, যা ফেসবুকের নীতিমালা ভঙ্গ করে অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য খোলা হয়। স্প্যামিংয়ের জন্য যেসব অ্যাকাউন্ট খোলা হয়, তা এ ধরনের অ্যাকাউন্টের আওতাধীন।
ফেসবুক জানায়, সীমিত পরিসরের একটি নমুনা অ্যাকাউন্টের অভ্যন্তরীণ পর্যালোচনার ওপর ভিত্তি করে ভুয়া অ্যাকাউন্টের আনুমানিক হিসাব করা হয়েছে। ভুয়া অ্যাকাউন্টের হিসাবে উপনীত হতে বেশকিছু বিষয় খেয়াল রেখেছে তারা। ভুয়া অ্যাকাউন্টের যে আনুমানিক হিসাব দেয়া হয়েছে, তা শতভাগ সঠিক এমনটা বলা যায় না। কারণ ভুয়া অ্যাকাউন্ট হিসাব করা খুবই কঠিন কাজ। আনুমানিক হিসাব থেকে ভুয়া অ্যাকাউন্টের প্রকৃত সংখ্যা কমবেশি হতে পারে।
ফেসবুক অক্টোবর-মার্চ সময়ে ১ কোটি ১১ লাখ সন্ত্রাসবাদ ছড়ায় এমন কনটেন্ট মুছে দিয়েছে। ৫ কোটি ২৩ লাখ সহিংস গ্রাফিকস কনটেন্ট সরিয়েছে এবং ৭৩ লাখ সহিংস পোস্ট, ছবি ও ফেসবুক পোস্ট সরিয়েছে।
বর্তমানে ভুয়া সংবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে গুগল, ফেসবুক ও টুইটারের মতো ইন্টারনেট জায়ান্টগুলো বেশ চাপের মধ্যে রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গত প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময়ে রুশ সরকার ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রত্যক্ষ মদদে ফেসবুক ও টুইটারের প্লাটফরম ব্যবহার করে রুশ ব্যবহারকারীরা নির্বাচনের সময়ে ভুয়া সংবাদ ছড়িয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এসব প্লাটফরমে ভুয়া সংবাদ ছড়িয়ে পড়ার কারণে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হতে পেরেছেন, বিভিন্ন পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ উঠেছে। তাই এসব প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানকে কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকে প্রস্তাব করছেন।