মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস কাজ থেকে অবসর নিলেও বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞান ও উদ্ভাবন–সংক্রান্ত গবেষণার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন। এর পাশাপাশি প্রচুর বই পড়েন তিনি। শুধু তা–ই নয়, নিজের পছন্দের বইগুলো অন্যদের পড়ার পরামর্শও দেন। সম্প্রতি নিজের ব্লগ সাইট ‘গেটস নোটস’-এ পছন্দের পাঁচটি বইয়ের নাম প্রকাশ করেছেন বিল গেটস।
চারটি বইয়ে কোনো না কোনোভাবে আপনার চারপাশের জগৎকে বুঝতে সহায়তা করবে। তালিকার প্রথমে থাকা বইটির নাম ‘অ্যান আনফিনিশড লাভ স্টোরি’। লেখক ডরিস কার্নস গুডউইন। আমি ডরিসের লেখা বইয়ের বিশাল ভক্ত। ডরিসের আত্মজীবনী না পড়া পর্যন্ত তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতাম না। বইটিতে তাঁর প্রয়াত স্বামীর সঙ্গে তাঁর জীবনের অনেক বিষয় আলোকপাত করা হয়েছে। তাঁর স্বামী মার্কিন ইতিহাসের অন্যতম উত্তাল সময়ে প্রেসিডেন্ট কেনেডি ও জনসনের নীতিবিশেষজ্ঞ ও বক্তৃতা লেখক হিসেবে কাজ করেছেন। ডরিস একজন প্রতিভাবান লেখক। তাঁর প্রেমের গল্পের বিভিন্ন অধ্যায় কেনেডি হত্যাকাণ্ড ও ভিয়েতনাম যুদ্ধের অধ্যায়ের মতোই আকর্ষক ও আলোকিত বলা যায়।
দ্বিতীয় বইয়ের নাম ‘দ্য অ্যাংশাস জেনারেশন’, লেখক জোনাথন হাইডট। এই বইয়ে আজকের তরুণদের কথা বলা হয়েছে। তরুণদের সঙ্গে কাজ করা বা শেখানোর চেষ্টা করছেন যাঁরা, তাঁদের অবশ্যই বইটি পড়া উচিত। বইটি আমার ছোটবেলার কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। তখন আমি প্রায়ই বাবা–মায়ের তত্ত্বাবধান ছাড়া বাইরে ঘুরতে ঘুরতে সময় কাটিয়েছি। মাঝেমধ্যে সমস্যায় পড়েছি। সেসব সমস্যার কারণেই আমি আজ এ পর্যায়ে এসেছি। লেখক বইটিতে খেলানির্ভর শৈশব থেকে ফোনভিত্তিক শৈশবে স্থানান্তরিত হওয়ার কারণে শিশুর আবেগ বিকাশের প্রক্রিয়া কীভাবে বদলে যাচ্ছে, সেই সম্পর্কে ধারণা দিয়েছেন। লেখক কেবল সমস্যার কথা তুলে ধরেননি, বাস্তব সমাধান নিয়েও আলোচনা করেছেন।
তৃতীয় বই ‘ইঞ্জিনিয়ারিং ইন প্লেইন সাইট’, লেখক গ্রাডি হিলহাউস। আপনি কি কখনো মাটিতে থাকা কোনো অস্বাভাবিক আকারের পাইপের দিকে তাকিয়েছেন? তখন ভেবেছেন সেটা কী? যদি এমন করেন, তাহলে বইটি আপনার জন্য। হিলহাউস এই বইতে তারের বাক্স থেকে শুরু করে ট্রান্সফরমার, মোবাইল ফোনের টাওয়ারসহ আমরা প্রতিদিন যেসব রহস্যময় কাঠামো, দেখি তা নিয়ে আলোচনা করেছেন। এসব কীভাবে কাজ করে, তার ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। অনেক বিষয়ে কৌতূহল মেটাতে বইটি বেশ সহায়ক বলা যায়। বইটিতে এমন সব প্রশ্নের উত্তর পাবেন, যা আপনি জানেন না।
চতুর্থ বই ‘দ্য কামিং ওয়েভ’, লেখক মুস্তাফা সুলেমান। মুস্তাফার বৈজ্ঞানিক ইতিহাস সম্পর্কে গভীর ধারণা রয়েছে। তিনি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ বিভিন্ন প্রযুক্তি, যেমন জিন সম্পাদনার মতো অন্য সব বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি সম্পর্কে লিখেছেন। এসব আবিষ্কার যেভাবে সমাজের ওপর প্রভাব তৈরি করেছে, সেগুলোর ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। লেখক আমাদের বিভিন্ন ঝুঁকির জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেছেন। আপনি যদি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) উত্থান সম্পর্কে জানতে চান, তবে বইটি সেরা।
ডরিস হেঙ্কেলের লেখা ‘ফেদেরার’ নামের বইটি সবার জন্য নয়। এটি বেশ ব্যয়বহুল আর বেশ ভারী। যদি আপনি বা আপনার পছন্দের কেউ রজার ফেদেরারের ভক্ত হন, তবে তাঁর জীবন ও ক্যারিয়ার সম্পর্কে জানার জন্য এটি একটি দুর্দান্ত বই। আমি ভেবেছিলাম, রজারের সব ইতিহাস আমি জানি। কিন্তু বইটি থেকে আমি রজারের শুরুর দিকের অনেক কথা জেনেছি। বইটিতে অনেক ছবি রয়েছে, যা আমি আগে কখনো দেখিনি। বইটি টেনিস ভক্তদের জন্য দারুণ একটি বই