স্মার্টফোনে ফাস্ট চার্জিং আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ – এই নিয়ে প্রচুর যুক্তিতর্ক থাকলেও দ্রুত চার্জ হয় এমন স্মার্টফোন পছন্দ করেনা এমন মানুষ হয়ত খুঁজে পাওয়া যাবেনা। ফোন যত দ্রুত চার্জ হয়, তত দ্রুত তা ব্যবহারের উপযোগী হয়।
এই কারণে ফাস্ট চার্জিং বর্তমান স্মার্টফোন মার্কেটে একটি ফিচাররূপে দেখা হয়। স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলো কে কার চেয়ে অধিক ফাস্ট চার্জিং ফিচার প্রদান করতে পারে তা নিয়ে প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এই প্রতিযোগিতার সুবিধা হিসেবে কনজ্যুমার এর কাছে সুলভ মূল্যে পৌছে যাচ্ছে ফাস্ট চার্জিং স্মার্টফোন।
আমাদের পোস্টে জানতে পারবেন দ্রুত চার্জ হয় এমন সব ফোন সম্পর্কে। উল্লেখ্য যে পোস্টটিতে শুধুমাত্র ফাস্ট চার্জিং ফোনসমূহের তালিকা দেওয়া রয়েছে, যার মানে তালিকার ফোনগুলো নির্বাচনের সময় ফাস্ট চার্জিংকে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
অপো ফাইন্ড এক্স৬ প্রো – Oppo Find X6 Pro
খুব সম্প্রতি অপো বাজারে এনেছে তাদের এই ফ্ল্যাগশিপ ফোনটি। অপোর সেরা চার্জিং টেকনোলজি ব্যবহার করা হয়েছে এই ফোনে। অপোর সবথেকে দ্রুত চার্জ হওয়া ফোন বর্তমানে এটিই। ফ্ল্যাগশিপ সব ফিচারের সাথে এই ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৫০০০ মিলিএম্পের বড় ব্যাটারি। আর এই ব্যাটারির সাথে আছে অপোর সুপার ভুক ফাস্ট চার্জ টেকনোলজি। এই ফোনটিতে ১০০ ওয়াটে চার্জ করা যায়। অপোর মতে মাত্র ১০ মিনিটে ফোনটি ৫০% চার্জ হয়ে যায়। আর ফুল চার্জে সময় লাগে মাত্র ৩০ মিনিট।
পিডি চার্জিং সাপোর্ট করে ফোনটি। এছাড়া ব্যাটারির হেলথ থিক রাখতে অপো বিশেষ প্রযুক্তি রেখেছে। ফলে বারবার ফাস্ট চার্জেও দীর্ঘদিন ফোনটির ব্যাটারি ভালো থাকবে। এই ফোনটিতে ১০০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জ ছাড়াও আছে ৫০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং। ১০ ওয়াটের রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধাও পাবেন এখানে। অর্থাৎ চার্জের দিক থেকে সকল আধুনিক প্রযুক্তি এতে আছে।
এছাড়া ফোনের অন্য সকল স্পেক পুরোপুরি ফ্ল্যাগশিপ ঘরানার। আছে স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ চিপ, ৫০ মেগাপিক্সেলের সেরা ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম, ১২০ হার্টজের অ্যামোলেড ডিসপ্লে ইত্যাদি অনেক অনেক আধুনিক ফিচারের সুবিধা। যারা অপোর সেরা চার্জিং ফোন খুঁজছেন তাদের জন্যই অপোর এই বছরের সেরা ফোন এটি।
ফোনটি সম্প্রতি বাজারে আসায় দেশের বাজারে এখনও আসে নি। তবে ১৬ জিবি র্যাম ও ৫১২ জিবি স্টোরেজের ফোনটির দাম বাংলাদেশী টাকায় ১ লাখ ৩৯ হাজার টাকার আশেপাশে হতে পারে বলে ধারনা করা যায়।
শাওমি রেডমি নোট ১২ প্রো+ – Xiaomi Redmi Note 12 Pro+
শাওমির রেডমি সিরিজ বাজেটের মধ্যেই অসাধারন সব ফিচার নিয়ে আসে। এই ফোনটি গত বছর বাজারে এলেও এতে আছে শাওমির সবথেকে সেরা চার্জিং টেকনোলজি। কমের মধ্যেই যারা খুব দ্রুত চার্জের ফোন খুঁজছেন তারা এই ফোনটি দেখতে পারেন।
এই ফোনে আছে ১২০ ওয়াটের হাইপার চার্জ নামক শাওমির নিজস্ব টেকনোলজি। তারের মাধ্যমে ফোনটি সর্বোচ্চ ১২০ ওয়াটে চার্জ হতে পারে। পিডি ৩.০ চার্জিং প্রযুক্তিও সাপোর্ট করে ফোনটি। শাওমির মতে এই ফোনটি পুরোপুরি চার্জ হতে সময় লাগে মাত্র ১৯ মিনিট। তবে এখানে ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের কোন সুবিধা নেই।
ফোনটি পুরোপুরি ফ্ল্যাগশিপ ফোন নয়। তবে ভালো পারফর্মেন্স ও ক্যামেরা রয়েছে এই ফোনে। চিপ হিসেবে পাবেন মিডিয়াটেকের ডাইমেন্সিটি ১০৮০ ৫জি চিপ। এয়ার ক্যামেরা সেকশনে আছে ২০০ মেগাপিক্সেলের উন্নত মানের ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম। ১২০ হার্টজের ৬.৬৭ ইঞ্চির ওলেড ডিসপ্লে ও অন্যান্য ফিচারে সমৃদ্ধ এই ফোনটি দাম অনুযায়ী সেরা ফিচার দিচ্ছে ক্রেতাদের। দেশের বাজারে ফোনটি আনঅফিসিয়ালভাবে পাওয়া যাচ্ছে। ৮ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজের এই ফোনটির মূল্য বর্তমানে ৩৮ হাজার ৩০০ টাকা থেকে শুরু হয়েছে।
শাওমি রেডমি কে৬০ প্রো – Xiaomi Redmi K60 Pro
শাওমির ফ্ল্যাগশিপ সিরিজের ফোন এটি। ফোনটি অফিসিয়ালভাবে শুধু চীনে পাওয়া গেলেও দেশের আনঅফিসিয়াল বাজারে সহজেই পাওয়া যায়। ফ্ল্যাগশিপ সিরিজের এই ফোনটিতে শাওমি তাদের সেরা চার্জিং টেকনোলজি ব্যবহার করেছে।
ফোনের ব্যাটারি ৫০০০ মিলিএম্পের। এই ফোনেও পেয়ে যাবেন ১২০ ওয়াটের সুপার ফাস্ট চার্জের সুবিধা। শাওমির নিজস্ব লিকুইড কুলিং টেকনোলজি থাকায় চার্জের সময়ও সহজে গরম হয় না। ফলে ব্যাটারি ভালো থাকবে দীর্ঘদিন। এটি পিডি ৩.০ এবং কিউসি৩+ চার্জিং টেকনোলজি সাপোর্ট করে। ফলে বিভিন্ন টেকনোলজির ফাস্ট চার্জ দিয়ে সহজেই ফোনটি চার্জ করা যাবে। শাওমির মতে মাত্র ১৯ মিনিটে ফোনটি পুরোপুরি চার্জ করা সম্ভব। শুধু ওয়্যার্ড চার্জই নয় আছে ওয়্যারলেস চার্জের সুবিধাও। ৩০ ওয়াট পর্যন্ত ওয়্যারলেস চার্জ করা যায় ফোনটি।
এছাড়া ফোনে স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ চিপ, ৫৪ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম, ৬.৬৭ ইঞ্চি ১২০ হার্টজের ওলেড ফ্ল্যাগশিপ ডিসপ্লেও রয়েছে। ফোনটি পুরোপুরি ফ্ল্যাগশিপ ফোন হওয়ায় সকল স্পেকেই সবথেকে সেরা ও আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। দেশের বাজারে ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্টের মূল্য ৮৮ হাজার টাকা থেকে শুরু হয়েছে।
শাওমি ১৩ প্রো – Xiaomi 13 Pro
শাওমির একদম লেটেস্ট ফ্ল্যাগশিপ সিরিজের ফোন এটি। শাওমির সেরা চার্জিং টেকনোলজির সুবিধা পাওয়া যাবে এই ফোনটিতেও। এই ফোনে দেয়া হয়েছে ৪৮২০ মিলিএম্পের ব্যাটারি। তবে ফোনে ১২০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং থাকায় এই ফোনটি খুবই দ্রুত চার্জ করে ফেলা সম্ভব। শাওমির হাইপার চার্জ প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই ফোনটি মাত্র ১৯ মিনিটে পুরোপুরি চার্জ করা যাবে বলে জানিয়েছে শাওমি। পিডি ৩.০ এবং কুইক চার্জ ৪ এর প্রযুক্তি সাপোর্ট করে এই ফোনটি। তাই এই প্রযুক্তির চার্জার দিয়ে সহজেই চার্জ করে ফেল আজাবে ফোনটি। এছাড়া শাওমির নিজস্ব ১২০ ওয়াটের চার্জার বক্সেই দেয়া রয়েছে।
৫০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধাও রাখা হয়েছে এখানে। শাওমির মতে ওয়্যারলেস চার্জিং ব্যবহারে ফোনটি ৩৬ মিনিটে পুরোপুরি চার্জ হতে পারে। ১০ ওয়াটের রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জের প্রযুক্তি থাকায় এই ফোনের মাধ্যমে অন্যান্য বিভিন্ন গ্যাজেট বা ফোনও চার্জ করা যাবে সহজেই।
এছাড়া ফোনটির পুরো স্পেকই ফ্ল্যাগশিপ লেভেলের। ১২০ হার্টজ অ্যামোলেড ডিসপ্লে, স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ চিপ, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ সহ কোনদিকেই কমতি নেই এই ফোনটির। দেশের বাজারে আনঅফিসিয়ালভাবে এটি পাওয়া যায়। ১২ জিবি র্যাম ও ২৫৬ জিবি স্টোরেজের ফোনটির মূল্য শুরু ৯৬ হাজার টাকা থেকে।
শাওমি ব্ল্যাক শার্ক ৫ – Xiaomi Black Shark 5
শাওমির ব্ল্যাক শার্ক সিরিজের ফোনগুলো পুরোপুরি গেমিং ফোকাসড ফোন। আর গেমারদের জন্য ভালো ব্যাটারি ব্যাকাপ ও দ্রুত চার্জিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই এই ফোনেও শাওমি তাদের সেরা চার্জিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। ৪৬৫০ মিলিএম্পের ব্যাটারি রয়েছে এই ফোনে। আধুনিক ফোনগুলো থেকে কিছুটা কম ব্যাটারি নিয়ে বাজারে এলেও ১২০ ওয়াটের হাইপার চার্জ টেকনোলজি এই ফোনটিকে খুবই দ্রুত চার্জ করে ফেলার নিশ্চয়তা দেয়। শাওমির মতে ১৫ মিনিটেই ফোনটিকে পুরো চার্জ করে ফেলা সম্ভব।
ফোনটির চার্জের গতিকে নিয়ন্ত্রন করার জন্য আলাদা সফটওয়্যারও দেয়া রয়েছে। ১২০০ বার ফোনটিকে চার্জ বা ডিসচার্জ করা যাবে, ফলে দীর্ঘদিন ব্যাটারি ভালো থাকবে ফোনটির। চার্জের ক্ষেত্রে আরও বেশ কিছু ভালো ভালো প্রযুক্তি ব্যবহার করায় ফাস্ট চার্জিং ফোন হিসেবে এটি খুবই ভালো একটি পছন্দ হতে পারে।
এছাড়া চিপ হিসেবে আছে স্ন্যাপড্রাগনের কিছুটা পুরনো ফ্ল্যাগশিপ চিপ ৮৭০। ভালো পারফর্মেন্সের সাথে পাওয়া যাবে ১৪৪ হার্টজের সুন্দর অ্যামোলেড ডিসপ্লে, ৬৪ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ, গেমের জন্য আলাদা বিভিন্ন প্রযুক্তি ইত্যাদি। ফোনটির বর্তমান বাজার মূল্য আনঅফিসিয়াল মার্কেটে ৫৩ হাজার টাকা। এই টাকায় আপনি ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজ পেয়ে যাবেন।
ভিভো এক্স৯০ প্রো – vivo X90 Pro
মূলত ফটোগ্রাফি ফোন হিসেবে এই ফোনটি পরিচিত হলেও এতে ভিভোর সেরা চার্জিং টেকনোলজি রয়েছে। ফলে অন্যান্য সকল ফ্ল্যাগশিপ ফিচারের সাথে এই ফোনটি বাজারের অন্যতম সেরা চার্জিং ফোন হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে সহজেই।
এই ফোনে দেয়া হয়েছে ভিভোর ১২০ ওয়াটের ফ্ল্যাশ চার্জ প্রযুক্তি। ফলে ফোনটির ৪৮৭০ মিলিএম্পের বড় ব্যাটারি মাত্র ৮ মিনিটে ৫০% চার্জ নিয়ে নিতে পারে। সফটওয়্যারের সাহায্যে ভিভো এই ফোনে চার্জের গতিকে নিয়ন্ত্রন করে ব্যাটারির হেলথ ঠিক রাখে। ব্যালেন্স কিংবা ফাস্ট দুই মোডে ফোনটিকে চার্জ করা যায়। এছাড়া ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের সুবিধাও রাখা হয়েছে। ৫০ ওয়াট গতিতে ওয়্যারলেস চার্জ করা যায় এই ফোনটিকে। সব মিলিয়েই বাজারের অন্যতম সেরা চার্জিং ফোন বর্তমানে এটি।
ফোনের বাকি সব ফিচারে দেয়া হয়েছে ফ্ল্যাগশিপ স্পেক। মিডিয়াটেক ডাইমেন্সিটি ৯২০০ প্রসেসর, ৬.৭৮ ইঞ্চির অ্যামোলেড ১২০ হার্টজ ডিসপ্লে, স্টেরিও স্পিকার ইত্যাদি অনেক ফিচার আছে। সবথেকে আকর্ষণীয় হচ্ছে এই ফোনটির ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম। বাজারের অন্যতম সেরা মোবাইল ক্যামেরা দেয়া আছে এই ফোনটিতে। ফলে যারা ভালো চার্জ স্পিডের সাথে ভালো ক্যামেরা ফোন খুঁজছেন তাদের প্রিয় ফোন হতে পারে এটি। ফোনটি বর্তমানে বাংলাদেশের আনঅফিসিয়াল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ১ লাখ ১৫ হাজার টাকায়।
ভিভো আইকুও ১০ প্রো – vivo iQOO 10 Pro
চীনের বাজারে এই ফোনটি গতবছর ভিভোর সবথেকে দ্রুতগতির একটি চার্জিং ফোন হিসেবে এসেছিল। এই ফোনটি অন্যান্য দেশে না পাওয়া গেলেও এর ২০০ ওয়াট চার্জিং ক্ষমতার জন্য নজর কেড়েছে অনেকেরই। তবে বাংলাদেশের আনঅফিসিয়াল বাজারে খুঁজলে এই ফোনটি পেতে পারেন।
ভিভোর ফ্ল্যাশ চার্জিং টেকনোলজির মাধ্যমে ৪৭০০ মিলিএম্প ব্যাটারির এই ফোনটি ২০০ ওয়াটে চার্জ করতে সক্ষম। চার্জারও পাওয়া যায় ফোনের বক্সের সঙ্গেই। ফোনটি মাত্র ১০ মিনিটে পুরোপুরি চার্জ হয়ে যায়। এই অসাধারন চার্জিং গতি অভাবনীয়। ফোনটি পিডি ৩ চার্জ প্রযুক্তিও সাপোর্ট করে। ফোনে আরও আছে ৫০ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং। এছাড়া ১০ ওয়াটে রিভার্স ওয়্যারলেস চার্জিংও করা যাবে এর মাধ্যমে। অর্থাৎ চার্জিংয়ের দিক থেকে এই ফোনটি অন্য যে কোন ফোন থেকে এগিয়ে।
এছাড়া এখানে আছে ফ্ল্যাগশিপ স্ন্যাপড্রাগন ৮+ জেন ১ চিপ, ১২০ হার্টজের এলটিপিও অ্যামোলেড প্যানেল, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ ইত্যাদি অনেক কিছুই। অর্থাৎ ফোনটি একটি পুরোদস্তুর ফ্ল্যাগশিপ ফোন। এটির মূল্য বাংলাদেশী টাকায় ৭৫ হাজার টাকার আশেপাশে।
ভিভো আইকুও নিও ৭ – vivo iQOO Neo 7
ভিভোর এই বাজেট ফোনটিতে আপনি অনেক ফ্ল্যাগশিপ ফিচার পেয়ে যাবেন। সেই সাথে আছে অন্যতম সেরা চার্জিং স্পিড ও ব্যাটারির সুবিধা।
ফোনটি ১২০ ওয়াট গতিতে ভিভোর ফ্ল্যাশ চার্জ টেকনোলজির মাধ্যমে চার্জ হতে পারে। সেই সাথে আছে ৫০০০ মিলিএম্পের বিশাল ব্যাটারি। ফলে সব মিলিয়ে ফোনটি ভালো ব্যাকাপের সাথে দ্রুত রিচার্জ হতে সক্ষম। অফিসিয়াল মতে এই ফোনটি ৫০% চার্জ হতে পারে ১০ মিনিটে এবং পুরো চার্জ হতে সময় লাগে ২৫ মিনিট। বক্সেই থাকে ১২০ ওয়াটের ওয়্যার্ড চার্জার। ফলে চার্জ নিয়ে কোন চিন্তা নেই। তবে এটি বাজেট ফোন হওয়ায় ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের কোন ব্যবস্থা নেই।
ফোনের অন্যান্য স্পেকের মধ্যে আছে ৬.৭৮ ইঞ্চির একটি অ্যামোলেড ১২০ হার্টজ ডিসপ্লে, মিডিয়াটেক ডাইমেন্সিটি ৮২০০ চিপ এবং ৬৪ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সিস্টেম। এই ফোনটি অনেক্তাই ফ্ল্যাগশিপ কিলার ঘরানার ফোন। তাই পারফর্মেন্স ও চার্জের দিক থেকে এটি অন্যতম সেরা ফোন হলেও বেশ কিছু স্থানে এর কমতি রয়েছে। ফোনটি দেশের আনঅফিসিয়াল বাজারে পাওয়া যায় ৩৯ হাজার ৫০০ টাকা থেকে।
মটোরোলা এজ ৪০ প্রো – Motorola Edge 40 Pro
মটোরোলার নতুন এই ফোনটি সেরা সব চার্জিং প্রযুক্তি দিয়ে পরিপূর্ণ। এটি একটি পুরোপুরি ফ্ল্যাগশিপ ঘরানার ফোন এবং এতে মটোরোলা তাই তাদের সেরা সব প্রযুক্তিই ব্যবহার করেছে।
এই ফোনটিতে আছে ৪৬০০ মিলিএম্পের ব্যাটারি যা অন্যান্য ফোন থেকে কিছুটা কম হলেও এর সঙ্গে থাকা ১২৫ ওয়াটের চার্জিং প্রযুক্তি ফোনটিকে খুব দ্রুত রিচার্জ করে ফেলতে সক্ষম। মাত্র ৬ মিনিটে অর্ধেক চার্জ এবং ২৩ মিনিটে পুরো চার্জ হয়ে যায় ফোনটি। সেই সাথে আছে পিডি ৩ এবং কিউসি ৫ চার্জ প্রযুক্তির সুবিধা। ফোনে আছে ১৫ ওয়াটের ওয়্যারলেস চার্জিং সুবিধাও। ৫ ওয়াট করে রিভার্স ওয়্যারড এবং ওয়্যারলেস চার্জও করা যায় এই ফোনের মাধ্যমে।
ফোনের সামনে পাওয়া যাবে ৬.৬৭ ইঞ্চির ওলেড ডিসপ্লে যা ১৬৫ হার্টজ রিফ্রেশ রেট সাপোর্ট করে, স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ২ চিপ যা বর্তমানের ফ্ল্যাগশিপ চিপ এবং ট্রিপল ৫০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা সেটআপ। সব মিলিয়ে ফোনটি অসাধারন ও সেরা সব স্পেক নিয়ে নজর কাড়ার মত একটি ফ্ল্যাগশিপ ফোন। ফনেতি এখনও দেশের বাজারে খুব একটা পাওয়া যাচ্ছে না। তবে এর দাম হতে পারে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা কিংবা এর আশেপাশে।
রিয়েলমি জিটি নিও ৫ – Realme GT Neo 5
রিয়েলমির লেটেস্ট এই ফোনটি বর্তমানে শুধু চীনের বাজারে পাওয়া গেলেও দেশের বাজারে চলে আসতে পারে দ্রুতই। অসাধারন এই ফোনে আছে রিয়েলমির সেরা চার্জিং সুবিধা। আর তাই এই ফোনে ১৫০ ওয়াট পর্যন্ত গতিতে চার্জ করা সম্ভব।
ফোনে ব্যাটারি হিসেবে দেয়া হয়েছে ৫০০০ মিলিএম্পের ব্যাটারি। বড় এই ব্যাটারিকে সহজেই চার্জ করতে আছে ১৫০ ওয়াটের ফাস্ট চার্জিং প্রযুক্তি। ফোনের সাথেই পেয়ে যাবেন এই অসাধারন চার্জার। রিয়েলমির মতে এই ফোনটিতে মাত্র ৩০ সেকেন্ড চার্জ দিয়ে ২ ঘণ্টার টকটাইম পাওয়া সম্ভব। তবে এই ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের সুবিধা থাকছে না।
ফোনের অন্যান্য বিভিন্ন স্পেক পুরোপুরি ফ্ল্যাগশিপ ফোনের মত না হলেও এটি অন্যতম সেরা পারফর্মেন্স দিতে পারবে। আছে আগের বছরের ফ্ল্যাগশিপ চিপ স্ন্যাপড্রাগন ৮ জেন ১, ১৪৪ হার্টজ অ্যামোলেড ৬.৭৮ ইঞ্চির বড় ডিসপ্লে, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ ইত্যাদি। সব মিলিয়ে এই ফোনটি কম দামেই ফ্ল্যাগশিপ ফিচার অফার করছে। বাংলাদেশের বাজারে এই ফোনটির দাম হতে পারে ৪৫ হাজার টাকা। অর্থাৎ এটি বাজেট ফ্ল্যাগশিপ ফোন হিসেবে বাজারে এসেছে।
রিয়েলমি জিটি৩ – Realme GT3
রিয়েলমির জিটি৩ মডেলের ফোনটি দ্রুতই বাজারে পাওয়া যাবে। এটি হতে যাচ্ছে সবথেকে ফাস্ট চার্জিং ফোন। রিয়েলমি এই ফোনের মাধ্যমে গড়তে যাচ্ছে বিশ্ব রেকর্ড। কেননা ফোনটিকে চার্জ করা যাবে ২৪০ ওয়াটে যা যে কোন ফোন থেকে দ্রুত গতির।
এই ফোনে রিয়েলমি তাদের সেরা সুপারভুক চার্জ টেকনোলজি ব্যবহার করেছে। ফলে ফোনের ৪৬০০ মিলিএম্প সাইজের ব্যাটারিকে খুবই দ্রুত চোখের পলকে ২৪০ ওয়াটে চার্জ করা যাবে। রিয়েলমির মতে মাত্র ৯ মিনিটে এই ফোন পুরো চার্জ করা সম্ভব হবে। এছাড়াও এতে ব্যাটারি হেলথ না কমিয়েই দীর্ঘ সময় ব্যাকাপ পাওয়া সম্ভব হবে। ফোনটিতে পিডি চার্জের সাপোর্টও থাকছে। তবে ওয়্যারলেস চার্জের সুবিধা নেই এই ফোনে।
ফোনের অন্যান্য ফিচারের মধ্যে থাকছে ৬.৭৪ ইঞ্চির ১৪৪ হার্টজ অ্যামোলেড ফ্ল্যাগশিপ ডিসপ্লে, স্ন্যাপড্রাগন ৮+ জেন ১ চিপ, ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা ইত্যাদি। ফোনের অনেক স্পেকই ফ্ল্যাগশিপের মতো হলেও এতে কিছু ফ্ল্যাগশিপ ফিচার পাওয়া যাবে না। আর তাই ফোনটির দামও হবে অনেকটাই কম। বাংলাদেশের বাজারে এলে ফোনটি আনঅফিসিয়ালভাবে ৭০ হাজার টাকার আশেপাশে পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
ওয়ানপ্লাস ১০টি – OnePlus 10T
গত বছর ওয়ানপ্লাসের এই ফোনটি বাজারে এলেও এটি এখনও পর্যন্ত ওয়ানপ্লাসের সেরা চার্জিং ফোন। কেননা এই ফোনে পাওয়া যাবে ১৫০ ওয়াটের সুপার ফাস্ট চার্জিংয়ের সুবিধা।
ফোনে আছে ৪৮০০ মিলিএম্পের বড় একটি ব্যাটারি। ফোনটিতে আছে স্মার্টচার্জের সুবিধা। ফলে ব্যাটারি হেলথ ভালো রেখে সহজেই ১৫০ ওয়াট গতিতে সুপারভুক ফাস্ট চার্জ করা যায়। এতে ব্যাটারি খুব বেশি গরম হয় না এবং দীর্ঘদিন ভালো থাকে। ওয়ানপ্লাসের মতে ১০ মিনিট চার্জে সারাদিনের ব্যাটারি ব্যাকাপ পাওয়া সম্ভব এই ফোন থেকে। তবে ফোনে ওয়্যারলেস চার্জিংয়ের কোন সুবিধা থাকছে না। বক্সে থাকা চার্জার দিয়েই সহজে চার্জ করা যাবে ফোনটি।
এছাড়া ফোনের ফিচারেও আছে আকর্ষণীয় সব জিনিস। ৬.৭ ইঞ্চির ফ্ল্যাগশিপ অ্যামোলেড ডিসপ্লে ছাড়াও পাওয়া যাবে স্ন্যাপড্রাগন ৮+ জেন ১ চিপের সুবিধা। এছাড়া ৫০ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সেটআপ রয়েছে। অন্যান্য বিভিন্ন ফিচার মিলিয়ে এই ফোনটি যে কোন ফ্ল্যাগশিপ ফোনের সাথে সহজেই পাল্লা দিতে পারবে। ফোনটি বর্তমানে আনঅফিসিয়াল বাজারে পাওয়া যাচ্ছে ৫৫ হাজার ৫০০ টাকা দামে। এই দামে ৮ জিবি র্যাম ও ১২৮ জিবি স্টোরেজের ফোনটি পাবেন।
শাওমি ১১আই হাইপারচার্জ – Xiaomi 11i Hypercharge
শাওমি ১১আই হাইপারচার্জ ফোনটিকে নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছুই নেই। সুলভ মূল্যে ৫জি ও দুর্দান্ত ১২০ওয়াট ফাস্ট চার্জিং ফিচার অফার করছে ফোনটি। ফোনটির নামে থাকা “হাইপারচার্জ” টাইটেল দেখেই বুঝা যায় ফোনটির মূল আকর্ষণ এর ফাস্ট চার্জিং।
ফোনের বক্সে দেওয়া ১২০ওয়াট ফাস্ট চার্জার ব্যবহার করে ফোনটির ৪৫০০মিলিএম্প ব্যাটারি মাত্র ১৫মিনিটে শূন্য থেকে ফুল চার্জ করা যাবে বলে দাবি করছে শাওমি। মিডিয়াটেক এর ডাইমেনসিটি ৯২০ ৫জি প্রসেসর দ্বারা চালিত ফোনটিতে রয়েছে ৬.৬৮ইঞ্চির অ্যামোলেড স্ক্রিন, যা আবার ১২০হার্জ রিফ্রেশ রেট সাপোর্টেড।
পিছিয়ে নেই শাওমি ১১আই হাইপারচার্জ ফোনটির ক্যামেরা সেকশন ও। ১০৮মেগাপিক্সেল মেইন সেন্সরের পাশাপাশি ৮মেগাপিক্সেল এর আলট্রাওয়াইড সেন্সর ও ২মেগাপিক্সেলের ম্যাক্রো ক্যামেরা রয়েছে ফোনটিতে। সেল্ফি ক্যামেরা হিসেবে রয়েছে ১৬মেগাপিক্সেল সেল্ফি ক্যামেরা।