অ্যাপলের সিরি ডিজিটাল ভয়েজ অ্যাসিসট্যান্ট ব্যবহারকারীরা এবার ডিভাইস প্রতি ২০ ডলার ক্ষতিপূরণ পেতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে। গ্রাহকদের প্রাইভেট কনভারসেশন রেকর্ড করায় এবং থার্ড-পার্টি অ্যাডভার্টাইজারদের সেগুলো শোনার অ্যাক্সেস থাকায় আদালতে অ্যাপলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়। এই প্রেক্ষাপটে অ্যাপল এবার আদালতের বাইরে ৯৫ মিলিয়ন ডলারের বিনিময়ে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে রাজি হয়েছে।
আর এই ক্লাস-অ্যাকশন সেটেলমেন্টের কল্যাণে যেসব সিরি গ্রাহকের প্রাইভেট কনভারসেশন রেকর্ড করা হয়েছে তাদের সবাইকে ডিভাইস প্রতি ২০ ডলার করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। আমেরিকার ডিসট্রিক্ট বিচারক জেফরি হোয়াইট উক্ত সেটেলমেন্টটি অনুমোদন করলেই বিষয়টির আনুষ্ঠানিক নিষ্পত্তি সম্পন্ন হবে।
অ্যাপলের সিরি ডিজিটাল অ্যাসিসট্যান্ট ব্যবহারকারীদের অনেকেই আদালতে অভিযোগ করেছেন যে, তাদের সিরি ডিভাইস নিজে থেকেই অ্যাকটিভেট হয়েছে এবং তাদের প্রাইভেট কনভারসেশন রেকর্ড করেছে। শুধু তাই নয়, রেকর্ড করা অডিওগুলোর অ্যাক্সেস ছিল থার্ড-পার্টি বিজ্ঞাপনদাতাদেরও। এর প্রমাণস্বরুপ তারা জানিয়েছে, নিজেদের ঘরোয়া কনভারসেশনে উল্লেখ করা হয়েছে এমন সব প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন আসতে শুরু করে তাদের ডিভাইসে। এমনকি ডাক্তারের সাথে অস্ত্রোপাচার বিষয়ে কথা বলার পর এ সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন পেয়েছেন বলেও আদালতকে জানিয়েছেন গ্রাহকরা।
তদন্তে বেরিয়ে আসে যে সিরি নিজে থেকেই গ্রাহকদের বেশ কিছু অতি-সংবেদনশীল কনভারসেশন রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে ব্যক্তিগত মেডিক্যাল তথ্য ছাড়াও আছে দম্পত্তিদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের রেকর্ডিং। ২০১৯ সালে ব্রিটিশ দৈনিক দ্য গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক হুইসেলব্লোয়ার-এর দাবি অনুযায়ী, গ্রাহকদের সংবেদনশীল এই সকল গোপন অডিও রেকর্ডিং অ্যাপলের বিজ্ঞাপনদাতারা কোয়ালিটি কন্ট্রোলের সময় শুনতে পেয়েছেন।
অ্যাপল অবশ্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছে গ্রাহকদের কাছে এবং ভবিষ্যতে এমনটা না হওয়ার আশ্বাসও দিয়েছে। উল্লেখ্য, অ্যাপলের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় অভিযোগের সময়সীমা গত বছরের ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর।
বিষয়টি নিষ্পত্তির প্রস্তাবনা অনুযায়ী, সিরি গ্রাহকরা অ্যাপলের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৫টি ডিভাইসের জন্য ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারবেন। অবশ্য ক্ষতিপূরণ পেতে হলে তাদেরকে শপথ করে বলতে হবে যে, কোনো এক প্রাইভেট কনভারসেশন চলাকালে অসাবধানতাবশত সিরি চালু হয়ে গেছে।
ব্যক্তিগত গোপনীয়তা প্রসঙ্গে ডিজিটাল ভয়েজ অ্যাসিসট্যান্ট নিয়ে বিপদে থাকা প্রতিষ্ঠানের তালিকায় অ্যাপল অবশ্য একা নয়। গুগলকেও তাদের ভয়েজ অ্যাসিসট্যান্ট নিয়ে আদালতের সম্মুখীন হতে হয়েছে।